রামুতে প্রেমিকার বাবাকে ছুরিকাঘাত ॥ প্রেমিককে জনতার মারধর

রামু প্রতিনিধি:
প্রেমিকার বাবাকে উপূর্যপুরি ছুরিকাঘাত করার পর জনতার হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন প্রেমিক। ছুরিকাঘাতে গুরুত্বর আহত আবদুর রহিম রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের মধ্যম কাউয়ারখোপ এলাকার বাসিন্দা এবং পার্শ্ববর্তী নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য।

এছাড়া মারধরে আহত প্রেমিক ইমরানুল করিম (২৮) কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাও জালালবাদ ইউনিয়নের পালাকাটা গ্রামের মাষ্টার মোক্তার আহমদের ছেলে। মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে দশটায় রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের মধ্যম কাউয়ারখোপ এলাকায় আবদুর রহিমের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে বিরোধের জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় আহত ইমরানুল করিমকে ঘটনার পর আটক করেছে রামু থানা পুলিশ।

আটক ইমরানুল করিমের বড় ভাই রাশেদুল করিম জানিয়েছেন, আবদুর রহিমের মেয়ে হালিমা আকতারের সাথে তার ছোট ভাইয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নস্থানে দেখা সাক্ষাতও করতো। বুধবার রাতে হালিমা আকতার ইমরানুল করিমকে তাদের বাড়িতে দাওয়াত দেন। কথামত ইমরান বাড়িতে গিয়ে হালিমা কোথায় জানতে চাইলে বাবা আবদুর রহিমসহ স্থানীয় কয়েকজন তাকে বেদম প্রহার শুরু করে।

এসময় আত্মরক্ষার্থে ইমরান তাদের কাছ ছুরি কেড়ে নেয়। নিরুপায় হয়ে হালিমার বাবাকে ছুরিকাহত করে ইমরান নিজের প্রাণ বাঁচানোর উদ্দেশ্যে ঘটনাস্থল থেকে চলে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে হালিমার স্বজনরা তাকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। তিনি এ ঘটনার শান্তিপূর্ণ সমাধানে সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন।

কাউয়ারখোপ ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা নুরুল হক জানিয়েছেন, ইমরান মাদকাসক্ত হয়ে ওই বাড়িতে গিয়ে পরিকল্পিতভাবে আবদুর রহিমের শরীরের ৬/৭ টি স্থানে গুরুতর জখম করে। ঘটনার পর থেকে আবদুর রহিমকে কক্সবাজারস্থ একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর অবস্থা এখনো আশংকাজনক বলে জানান তিনি।

জানা গেছে, ইমরান ও হালিমা এক সাথে রামু কলেজ থেকে বিএ পাশ করেছে। তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন মন দেয়ানেয়া চলছিলো। সম্প্রতি ইমরানের পরিবারের পক্ষ থেকে মেয়ের পরিবারের কাছে বিয়ের প্রস্তাবও পাঠানো হয়েছে। কিন্তু হালিমার অভিভাবকরা এ বিয়েতে অসম্মতি দিয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য বিরাজ করছে।
গতকাল (বুধবার) রাতে এ রিপোর্ট লেখাকালীন ইমরান রামু থানা হেফাজতে ছিলো।

রামু থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মো. সাইকুল আহম্মেদ ভূঁইয়া জানিয়েছেন, প্রেমিকের সাথে দেখা করতে গিয়ে এ ঘটনার সূত্রপাত। এ ঘটনায় ইমরানুল করিমকে আটক করা হয়েছে। এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, প্রেমিক ইমরানের বাবা মাষ্টার মোক্তার আহমদ জালালাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি এবং প্রেমিকার বাবা ইউপি সদস্য আবদুর রহিম নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন