লক্ষ্মীছড়ির খাদ্য গুদাম নির্মাণ এবং পানি সমস্যা সমাধানের কাজ চলছে : ইউএনও শওকত ওসমান

 

উপজেলা প্রতিনিধি, লক্ষ্মীছড়ি :

খাগড়াছড়ি জেলার লক্ষ্মীছড়ি উপজেলায় বর্তমানে অনেকগুলো সমস্যার মধ্যে প্রধান সমস্যা হলো খাদ্য গুদাম না থাকা এবং বিশুদ্ধ পানি সমস্যা। উপজেলার সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকটাই ভাল বলা যায়। লক্ষ্মীছড়ি জোন, পুলিশ বাহিনীসহ আমারা সবাই মিলে এক যোগে এলাকার পরিস্থিতি ভাল রাখার জন্য যা যা করার দরকার সবগুলো পদক্ষেপই নিয়েছি। খাদ্য গুদাম নির্মাণ করা এবং পানি সমস্যা সমাধানে কাজ চলছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সাথে এক আলাপ কালে এসব কথা বলেন লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শওকত ওসমান। তিনি বলেন, এখানকার রাজনৈতিক সকল দলগুলোর সাথে যে কোন সংকট মুহুর্তে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সময়ে সময়ে বৈঠক করে সৃষ্ট সমস্যা সমাধান করা হয়। সকল দলগুলোই সহনশীলতার সাথে প্রয়োজনীয় কর্মকান্ড পরিচালনা করেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ উপজেলায় যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকে শুরু করে অনেক সমস্যা আছে। তবে এই মুহুর্তে প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে খাদ্য গুদাম এবং পানি সমস্যা। খাদ্য গুদামটি চালু করার ব্যাপারে ইতোমধ্যে প্রাথমিক জরীপ কাজ শেষ হয়েছে। প্রথম দফায় জায়গা পছন্দ না হওয়ায় দ্বিতীয় দফায় টেকনিশিয়ান এসে জায়গা পরিচিহ্নত হলেই খাদ্য গুদাম নির্মাণ কাজ শুরু হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। আর পানি সমস্যার ব্যাপারে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মহোদয়ের চাহিদা মতে ১০টি প্রকল্প নেয়া  হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে খুব শিগ্রই পরীক্ষামূলক একটি ডীপ টিউবওয়েলের কাজ শুরু করা হবে। লক্ষ্মীছড়ি উপজেলাকে এগিয়ে নিতে সকলের সহযোগীতায় সম্প্রীতি বজায় রেখে কাজ করে যাওয়ার অভিমত ব্যক্ত করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শওকত ওসমান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ উপজেলায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দীর্ঘ দিনের। উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন সরকারি বাস ভবন ও আশ-পাশ এলাকায় বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের কোন ব্যবস্থা নেই। প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ রিংওয়েল ও টিউব-ওয়েলের পানি না পেয়ে বাধ্য হয়ে ছড়া ও কুয়ার পানি পান করে। লক্ষ্মীছড়ি উপজেলায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী কার্যালয় থাকলেও এখানকার মানুষের কোন উপকারে আসছে না। প্রয়োজনীয় সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে লক্ষ্মীছড়ির হাজার হাজার মানুষ। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী সুভাশ তালুকদার নিয়মিত অফিস করেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। বেশির ভাগ সময় তার অফিস তালা বন্ধ থাকে। অভিযোগ রয়েছে মাসের শেষ দিকে এসে বেতন তুলে আবার চলে যান। পুরো উপজেলায় শত শত রিং-ওয়েল ও টিউব-ওয়েল অকেঁজো হয়ে পরে রয়েছে। কোনটির মাথা নেই, আবার মাথা আছে পানি ওঠেনা, এমনকি মাথা, পাইপ ছাড়া শুধু কুয়াটি পরে রয়েছে।

এদিকে লক্ষ্মীছড়ি উপজেলায় খাদ্য গুদামটি অকেঁজো অবস্থায় পরে রয়েছে বিগত ২০বছর ধরে। খাদ্য গুদাম না থাকায় সরকারের বরাদ্দকৃত খাদ্য শস্য মানিকছড়ি উপজেলা খাদ্য গুদাম হতে উত্তোলন করতে হয়। এতে করে খাদ্য শস্য কালো বাজারেই বিক্রি হয়ে যায়। ফলে এলাকায় বরাবরই খাদ্য ঘাটতিসহ চালের মূল্য স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকটা বেশি বলেই ক্রেতাদের অভিযোগ।

জানা যায়, খাদ্য শস্য রাখার অনুপযোগী বলে ৮৬-৮৭সালের দিকে খাদ্য গুদামটি তালা ঝুঁলিয়ে দেয়া হয়। সেই থেকে আজ পর্যন্ত খাদ্য গুদামটি চালু কিংবা নতুন খাদ্য গুদাম নির্মাণের কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। খাদ্য গুদাম না থাকায় সরকারের দেয়া ভিজিডি/ভিজিএফ/টিআর/কাবিখাসহ সকল খাদ্য শস্য উত্তোলন করতে হয় মানিকছড়ি খাদ্য গুদাম হতে। এতে করে অতিরিক্ত যানবাহন খরচের বোঝা চাপে জনসাধারণের উপর। আর দেরি না করে জনস্বার্থে সরকার দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবে এমনটাই আশা করছে ভুক্তভোগীরা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন