লামায় তামাক কোম্পানীরা জিম্মি করেছে চাষীদের

tamak pic

লামা,(বান্দরবান) প্রতিনিধিঃ

চলতি মৌসুমে তামাক কোম্পানীর পুঁজিবাজী কৌশলের ফাঁদে আটকা পড়ে বড় ধরণের লোকসান আতঙ্কে ভুগছে লামার ১০ হাজারের অধিক তামাক চাষী। তামাক ক্রয় শুরু হওয়ার আগে তামাক কোম্পানীসমূহ যথাক্রমে বৃটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, ঢাকা টোব্যাকো ইন্ডাট্রিজ, আবুল খায়ের টোব্যাকোর প্রতিনিধিরা একজোটে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে চাষীদের হয়রানীর উৎসবে মেতে উঠেছে বলে চাষী মহল হতে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এদিকে কোম্পানীসমূহ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তামাক ক্রয় শেষ না করায় চাষীদের উৎপাদিত তামাক গুণগত মান হারাচ্ছে ,অন্যদিকে গজালীয়া, রূপসিপাড়া, বইল্যারচর সহ অনান্য দুর্গম এলাকার চাষীরা নির্দিষ্ট সময়ে তামাক বিক্রি শেষ করতে না পারায় নিজ এলাকা হতে ২৫-৩০ কিলোমিটার দূরবর্তী কোম্পানীর ক্রয় কেন্দ্রে বার বার তামাক পরিবহন করতে গিয়ে হয়রানীর শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন।

আবুল খায়ের টোব্যাকোর চাষী আব্দুস শুক্কুর বলেন, শনিবার বায়িং চলাকালীন আমাকে ক্রয়কেন্দ্রে ১৮ বেল তামাক আনার অনুমতি দেওয়ার পর কোম্পানী ১০ বেল তামাক ক্রয় করার পর বাকি ৮ বেল তামাক ফিরত নিয়ে যেতে বলে, এভাবে আরো অনেক চাষীর তামাক ক্রয় না করে ফিরত নিয়ে যেতে বলা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আবুল খায়ের টোব্যাকোর একজন চাষী বলেন, উৎপাদন খরচ সহ সকল প্রকার আনুষাঙ্গিক খরচ বৃদ্ধি পাওয়ার পরও কোম্পানী একই তামাকে গত বছরের তুলনায় কম দাম দিচ্ছে এতে করে এ বছর চাষীরা বড় ধরনের লোকসানে পড়বে, ঋণের টাকা পরিমাণ তামাক ক্রয় করার পর বাকি তামাক ক্রয়ে কোম্পানীর বায়াররা নিজেদের ইচ্ছেমতো রেট দিচ্ছে।

সরেজমিনে পর্যবেক্ষণকালে আবুল খায়ের টোব্যাকো ও ঢাকা টোব্যাকোর ক্রয়কেন্দ্রে আগত চাষীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা কোম্পানীর নির্দেশনা অনুযায়ী তামাক গ্রেডিং করে আনলেও কোম্পানীর লোকজন ব্যবসায়ীদের সাথে আঁতাত করে, ব্যবসায়ীদের তামাক আগে ক্রয়করে নেয় অন্যদিকে সাধারণ চাষীদের হয়রানী করে।

অপরদিকে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে ঢাকা টোব্যাকোর এফ.আর দের বিরুদ্ধে। ঢাকা টোব্যাকোর চাষী মহরম আলী ও তহিদুল ইসলাম বলেন, এফ.আর হারুনুর রশিদ দীর্ঘ ১০ দিন যাবত আমাদেরকে ক্রয়কেন্দ্রে তামাক পরিবহনের অনুমতি পত্র (টি.পি) না দিয়ে স্বজনপ্রীতি করে নিজের লোকজনদের টি.পি দিচ্ছে।যার ফলে আমরা উৎপাদিত সকল তামাক বিক্রি করতে পারবো কিনা সেই বিষয়ে সন্দিহান।

শনিববার সকাল ১০টায় বৃটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর ক্রয় কেন্দ্রে আগত চাষীরা জানায়, আমাদের সব তামাক ক্রয় না করে কোম্পানী হয়তো বায়িং বন্ধ করে দিতে পারে সেই কারণে আমাদেরকে টি.পি দিচ্ছে না ।তারা আরো বলেন, চাষ শুরুর আগে কোম্পানী আমাদের কালো তামাক ক্রয় করবে বলে নিশ্চয়তা দিলেও ভালো তামাকের বিপরীতে উৎপাদিত অল্প পরিমাণ কালো তামাক ক্রয় করছে।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে আবুল খায়ের টোব্যাকোর জোন ইনচার্জ আব্দুর রব বলেন, চাষীদের হতাশ হওয়ার কোন কারণ নেই।আমরা পর্যায়ক্রমে সকল চাষীদের তামাক ক্রয় করে নেব।

এ বিষয়ে ঢাকা টোব্যাকোর জোন ইনচার্জ আব্দুল হামিদ এর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। এর আগে এ প্রতিবেদক পেশাগত দায়িত্ব পালনে আবুল খায়ের টোব্যাকোর লামা এরিয়া অফিসে আসলে অডিট আফিসার আলমগীর হোসেন প্রতিবেদককে আপনি কিসের সাংবাদিক? বলে বাজে মন্তব্য করে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *