সন্ত্রাসীরা অস্তিত্ব প্রকাশ করতে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটাতে পারে: বান্দরবান পুলিশ সুপার

নিজস্ব প্রতিনিধি, বান্দরবান:

সন্ত্রাসীরা তাদের অস্তিত্ব প্রকাশ করতে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে। তাই আমাদের প্রত্যেককে এব্যাপারে সচেতন হতে হবে।

মঙ্গলবার বান্দরবান পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক বিশেষ আইন শৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভায় পুলিশ সুপার মো জাকির হোসেন মজুমদার একথা বলেন।

দেশ বিদেশের সাম্প্রতিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ভয়াবহতা সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি এবং নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

পুলিশ সুপার সাম্প্রতিক সময়ে শ্রীলংকা এবং নিউজিল্যান্ডের সন্ত্রাসী হামলার ভয়াবহতার প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন- সন্ত্রাসীদের কোন দল মত ও জাত নেই। এ ধরনের হামলা যে আমাদের প্রিয় বান্দরবানে হতে পারে না তা নিশ্চিত করে বলা যায় না।

তিনি বলেন, প্রতিটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে নিজস্ব নিরাপত্তা বলায় এবং স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করতে হবে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান সিসি টিভির আওতায় আনতে হবে। নিজস্ব জেনারেটরের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক আলোর ব্যবস্থা করতে হবে। কোন এলাকায় নবাগত কাউকে দেখলে তার গতিবিধি সম্পর্কে খোঁজ রাখতে হবে। প্রয়োজনে নতুন আগুন্তকের বিষয়ে পুলিশকে অবহিত করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, বান্দরবানে প্রচুর দেশি বিদেশি পর্যটক ভ্রমণ করেন। পুলিশের স্থাপনা, কেপিআই, পর্যটন কেন্দ্রসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা হতে পারে বলে গোয়েন্দা রিপোর্ট রয়েছে। তাই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।

পুলিশ সুপার আরোও বলেন, সকল প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা ঝুঁকি এক নয়। জঙ্গীরা ঘর ভাড়া নেয়ার পর তেমন ফার্নিচার বা আসবাবপত্র আনে না। খুবই সাদামাঠা ভাবে তারা ঘরে বসবাস করে। তাই ঘরভাড়া গ্রহিতার সম্পর্কে তথ্য নেয়ার পর ভাড়া দিতে হবে।

এসময় আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় অতিরিক্ত চেকপোষ্ট বসানো, মোবাইল ডিউটি বৃদ্ধি এবং  স্থাপনা ভিত্তিক ডিউটি বাড়ানো হচ্ছে বলেও জানান।

সভায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলী হোসেন, মো. কামরুজ্জামান, ইয়াছির আরাফাত, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের প্রাক্তণ চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাই ও মংক্যচিং চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আব্দুর রহিম চৌধুরী, জেলা পরিষদের সদস্য লক্ষীপদ দাস, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শহিদুল ইসলাম, জেলা বিশেষ শাখার ইন্সপেক্টর বাছা মিয়া, বান্দরবান প্রেসক্লাবের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বাচ্চু, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আলাউদ্দিন ইমামী, বাজার জামে মসজিদের খতিব মাওলানা এহসানুল হক আল মঈন,থানা জামে মসজিদের খতিব মাওলানা নুরুল আমিন, ফাতিমা রাণী ধর্মী পল্লীর পাল পুরোহিত ফাদার বিনয় গোমেজ,জেলা দুনীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অংচমং মারমা,বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জলিমং ও পারখুম লুসাইসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে একই স্থানে পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দের সাথে পৃথক একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় পুলিশ সুপার বলেন, আসন্ন রমজান মাসে খাদ্যে ভেজালকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া মাকের্ট গুলোতে নিজেস্ব গার্ড নিয়োগসহ জেনারেটর স্থাপনের জন্য তিনি ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান।

পুলিশ সুপার বলেন, জনগণকে জিম্মি করে অতিরিক্ত মুনাফা লাভ করা বেআইনী। ইফতার সামগ্রি তৈরীর সময় ক্ষতিকারক রং মিশ্রন থেকে বিরত থাকতে তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান। এছাড়াও অগ্নিসতর্কতা সম্পর্কে সকলকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান।

সভায় ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন