সাজেকে হাম রোগে ৬ শিশুর মৃত্যু,  আক্রান্ত  আরো ১০৭

fec-image

রাঙামাটি: রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের শিয়ালদহ মৌজায় এলাকায় এক মাসে হাম রোগে আক্রান্ত হয়ে ৬ শিশুর মত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ১জন প্রতিবন্ধী রয়েছে। এছাড়াও ওই মৌজার তিনগ্রামে আরও ১০৭ শিশু আক্রান্ত রয়েছে বলে স্থানীয় হেডম্যান জৈপুতাং ত্রিপুরা পার্বত্যনিউজকে নিশ্চিত করেন। অবশ্য বৃহস্পতিবার (১৯মার্চ) রাতে ৫ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা: বিপাস খীসা।

স্থানীয় হেডম্যান জৈপুতাং ত্রিপুরা পার্বত্যনিউজকে বলেন, তার অধীনস্ত লুং তিয়ান পাড়াতে ৮৫ পরিবার, কমলাপুরে আছে ৩০-৪০ পরিবার, অরুণ পাড়াতে আছে ৭০-৭৫ পরিবার। প্রত্যেক পরিবারে কমপক্ষে ৫জন করে সদস্য রয়েছে।

তিনি জানান, আনুমানিক ২০ দিন আগে তার মৌজার তিনটি পাড়ায় এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। লুংতিয়ান পাড়াতে ৮৮জন,  কমলাপুর চাকমা পাড়াতে আছে ১২জন এবং অরুণ পাড়াতে আছে ৭জন। মোট ১০৭জন রোগী এখনো আক্রান্ত রয়েছে। আক্রান্তরা সকলের শিশু।

নিহত শিশুরা হলেন, রোহিনা ত্রিপুরা(৮), সাগরিকা ত্রিপুরা(১১), কোহেন ত্রিপুরা(৩), বিশান ত্রিপুরা(২), ক্লাই ত্রিপুরা(২), মনে ত্রিপুরা(১.৫)।

সাজেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নেলসন চাকমা বলেন, সাজেক ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের সীমান্তবর্তী তিনটি গ্রাম অরুনপাড়া, নিউথাং পাড়া এবং হাইচপাড়ায় গত কয়েকদিনে হাম রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এতে  শিশুরাই বেশি  আক্রান্ত হচ্ছে এবং ইতোমধ্যেই ৫ জন শিশু মারা গেছেন বলে চেয়ারম্যান জানান। এ ব্যাপারে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। তবে দুর্গমতার কারণে আরও সঠিক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না বলে যোগ করেন চেয়ারম্যান।

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী  কর্মকর্তা (ইউএনও) আহসান হাবিব জিতু জানান, গত কয়েকদিন ধরে  সাজেক ইউনিয়নের দুর্গম এবং সীমান্তবর্তী শিয়ালদহ এলাকার তিনটি গ্রামের শিশুদের হাম রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর শুনেছিলাম। বিষয়টি  জেলা স্বাস্থ্য বিভাগকে জানানোর পর তারা ব্যবস্থা নিয়েছে । দূর্গমতার কারণে ওইসব এলাকায় গিয়ে চিকিৎসা সেবা দেওয়া অত্যন্ত কঠিন বলে জানান তিনি।

ইউএনও আরও বলেন, শুক্রবার সকালে উপজেলা সদর হতে  স্বাস্থ্য বিভাগের একটি দলকে ওই এলাকায় পাঠনো হবে।  আক্রান্ত শিশুদের হেলিকপ্টারে  উদ্ধার করে পাশ্ববর্তী জেলা খাগড়াছড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে বলে ইউএনও যোগ করেন।

রাঙামাটির সিভিল সার্জন ডা: বিপাশ খীসা বলেন, আমরা ওই এলাকার জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে জানাতে পারলাম ওইসব ইউনিয়নের তিনটি গ্রামে হাম রোগে অনেক শিশু আক্রান্ত হয়েছে এবং অনেকে মারা গেছে।

স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, আক্রান্ত এলাকায় একটি মেডিকেল টিম ইতোমধ্যে কাজ করছে। তবে সেখানে কোনো এমবিবিএস পাস ডাক্তার নেই। যারা কাজ করছে তারা সকলে প্যারামেডিক্স পাস ডাক্তার।

শুক্রবার সকালের মধ্যে জরুরী ভিত্তিতে বিজিবির সহায়তায় হেলিকপ্টারে করে একটি মেডিকেল টিম প্রেরণ করা হবে সিভিল সার্জন জানান।

উল্লেখ্য চলতি মাসে পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবানের লামা উপজেলায় হাম রোগে আক্রান্ত হয়ে ১ ম্রো শিশু মারা যায়। এছাড়াও আক্রান্ত ৩১ জনকে উদ্ধার করে লামা হামপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন