“২১ দিনের ব্যবধানে ভাই-বোনের মৃত্যু”
ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক

সিংহ রাসেলের মৃত্যুর পরে নিভে গেল টুম্পার জীবন প্রদীপ!

fec-image

কক্সবাজারের চকরিয়ায় ডুলাহাজারাস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে বার্ধক্য জনিত নানা অসুস্থতার কারণে সম্প্রতি সময়ে রাসেল নামে একটি সিংহ (পুরুষ) মৃত্যু হয়েছে। সিংহ রাসেলের মৃত্যুর পরে নিঁভে গেল টুম্পা’র জীবন প্রদীপও।

উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে রাসেল ও ২০০৮ সালে টুম্পা এই পার্কে জন্মগ্রহণ করেন। তারা দু’জনেই সম্পর্কে পরস্পর ভাই-বোন। দীর্ঘদিন ধরে পার্কে চিকিৎসাধীন ছিল সিংহ রাসেল ও টুম্পা। পাঁচ সদস্যের চিকিৎসক টিম অসুস্থ এই ভাই-বোনের চিকিৎসা করে আসছিল।

গত ৩১ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় পুরুষ সিংহ রাসেল মারা যায়। শত চেষ্টা করেও ১৬ বছর বয়সী পুরুষ সিংহ রাসেলকে বাঁচাতে পারেনি চিকিৎসকেরা। সর্বশেষ সাফারি পার্কে ২১ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) সকাল ৮টার দিকে সিংহ টুম্পা (১৫) জীবন প্রদীপ নিভে যায়।

ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে সিংহ প্রাণীরকূলের বড় ধরণের বিপর্য়য় ঘটে। ২১ দিনের ব্যবধানে ঘটেছে দুই সিংহের মৃত্যু। ফলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে চকরিয়ার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে।

ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম সিংহী টুম্পার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পার্ক সূত্রে জানাগেছে, জন্মের পর থেকে পার্কের ভেতরে ভালোভাবে কেটেছিল সিংহ রাসেল ও সিংহী টুম্পা’র দিনকাল। হঠাৎ করে তারা খাওয়া-নাওয়া ছেড়ে দেয়। কমতে থাকে তাদের শারীরিক ওজন। দ্বারস্থ হতে হয় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের। এ দুই সিংহের শরীরে শনাক্ত হয় এনাপ্লাজমা ও বিউবমিয়া স্পিসিসে রোগে আক্রান্ত। চিকিৎসকেরা আপ্রাণ চেষ্টা করেও তাদের বাঁচাতে পারেনি। পার্কের রেকর্ডমতে সিংহী টুম্পা’র বয়স হয়েছিল ১৫ বছর।

এ সময় সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাজাহারুল ইসলাম বলেন, গত দুই মাস আগে সিংহ রাসেল ও সিংহী টুম্পা রোগে আক্রান্ত হয়। প্রথমে পার্কের ভেটেরেনারি সার্জন চিকিৎসা করলেও দুই সিংহের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। ফলে গঠন করা হয় ৫ সদস্যের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে মেডিকেল বোর্ড। এই মেডিকেল বোর্ডের নেতৃত্ব দেন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এ্যানিমল সাইসেন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. বিবেক চন্দ্র সুত্রধর। তাদের তত্বাবধানে চিকিৎসা চলাকালে গত ৩১ জানুয়ারি মারা যায় সিংহ রাসেল। অপর আক্রান্ত সিংহী টুম্পা মারা যায় মঙ্গলবার সকাল ৮টায়।

এছাড়া সাফরি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরও বলেন, টুম্পার মৃত্যুর পর মঙ্গলবার চকরিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। এরপর চকরিয়া উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ও পার্কের ভেটেরেনারি সার্জনের নেতৃত্বে সিংহী টুম্পার ময়নাতদন্ত করা হয়। দুপুর ২টার দিকে সিংহী টুম্পার মরদেহ পার্কের ভেতরে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের চট্টগ্রামের বিভাগীয় কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বিভিন্ন রোগের পাশাপাশি বার্ধক্যজনিত কারণে সিংহী টুম্পা মারা গেছে। মৃত টুম্পার ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে তার মৃত্যুর সঠিক তথ্য জানা যাবে বলে তিনি জানান।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: জীবন:, টুম্পার, নিভে
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন