সীমান্তে এবার ড্রোন ব্যবহার করলো মিয়ানমার

fec-image

সীমান্তের এপারে ড্রোন ক্যামেরা ব্যবহার করছে মিয়ানমার। রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টার পর তুমব্রু বাজার কোনার পাড়া ও ইউনিয়ন পরিষদ এলাকা এলাকায় মিয়ানমারের ড্রোন দেখা যায়। বিষয়টি নিশ্চিত করে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির আজিজ বলেন, সেদিন নিচ আকাশে মিটমিট আলো জ্বলতে দেখে তিনি জানতে পারলেন মিয়ানমারের ড্রোন ক্যামেরা। তার ধারণা এ ক্যামেরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে ব্যবহার করা হচ্ছে।

তুমব্রু বাজার ব্যবসায়ী শফিক আহমদ, বদিউল আলম, আবদুল আলী, শূন্যরেখার আবদুল মাজেদ ও শিক্ষার্থী রাশেদসহ অনেকেই বক্তব্য দেন এ প্রতিবেদককে। তারা বলেন, দেড় মাস ধরে গোলাগুলি চলছিল ঘুমধুম, সোনাইছড়ি ও নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন এলাকার বিপরীতে মিয়ানমার সীমান্তের ওপারে। আর ১৬ সেম্টেম্বর দুপুরে মিয়ানমার বাহিনীর স্থল মাইনে পা উড়ে গেলো বাংলাদেশি তঞ্চঙ্গ্যা যুবকের। সেদিন রাতে পরপর ২টি মর্টারশেল নিক্ষেপে শূন্যরেখার ১ রোহিঙ্গা যুবক মারা যায়। আর আহত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে আরো ৭ জন। এর পর চতুর্থ দফা প্রতিবাদ জানান বাংলাদেশ।

তারা আরো বলেন, এখন কৌশল পাল্টে তারা হাঁটেন অন্যপথে। নতুন করে সীমান্তে ব্যবহার করেন ড্রোন ক্যামেরা। যাতে তারা বাংলাদেশের সীমান্ত পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে পারে।

এদিকে, মিয়ানমারের ভিতরে বেশকিছুদিন ধরে চলে আসা বিচ্ছন্নতাবাদী আরকান আর্মি এবং সে দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে। যারা তুমুল সংঘর্ষে লিপ্ত। তাদের এ সংঘর্ষে উভয় দেশের সীমান্ত এলাকায় ব‍্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় নানা ভাবে।

সূত্র জানায়, যা নিয়ে স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমে অসংখ্য খবর এসেছে। তাদের অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষের গোলাবারুদ বিস্ফোরণের অতিমাত্রার শব্দ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সীমান্ত জনপদে বসবাসকারীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়েছে দেড় মাস। বর্তমানে রাতের আতঙ্ক সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে।মিয়ানমারের ভিতর থেকে সীমানা লঙ্ঘন করে যুদ্ধ বিমান নাইক্ষ‍্যংছড়ির ঘুমধুম তুমব্রুতে ঢুকেছিল কয়েকবার। আবার মাঝেমধ্যে সে দেশের সেনাবাহিনীর ব‍্যবহৃত একে ৪৭ রাইফেলের গুলি ও মর্টার শেলে এসে পড়ে বাংলাদেশে।

সীমান্তের একাধিক বাসিন্দা এ প্রতিবেদককে জানান, সীমান্ত পিলার ৩৪ ও ৩৫ এর মাঝে বাংলাদেশের ভিতরে রয়েছে তুমব্রু বাজার। এখানে রবিবার থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে কোন কিছুর বিকট শব্দ আসে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে।

কথা হয় বাজারের চা দোকানদার মোহাম্মদ করিমের সঙ্গে। তিনি বলেন, মিয়ানমার সেনা ও বিদ্রোহী গ্রুপের মাঝে রাখাইন প্রদেশের যুদ্ধ চলমান। এরই আলোকে মংডু জেলার বুথিডং এবং সিটুয়ে জেলার রাথিডং টাউনশীপের বিভিন্ন রোহিঙ্গা পাড়ায় বসবাসরত কিছু রোহিঙ্গা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে গোপনে বাংলাদেশে আশ্রয় থাকা রোহিঙ্গা আত্বীয় স্বজনদের সহায়তায় নিচ্ছে। যারা দালালদের মাধ্যমে মেউ নদী হয়ে বোট যোগে সাগর পথে নাফ নদী পাড়ী দিয়ে যে কোন সময় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ এর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।

সূত্রে আরো জানা যায় রাখাইন ও রোহিঙ্গা দালালের মাধ্যমে আসা কিছু রোহিঙ্গা মিয়ানমারের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে আটক হয়েছে। যাদের অধিকাংশ রোহিঙ্গাকে জেলে পাঠানো হচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন