সু চি’র ভাষণ: যে বিষয়গুলো এড়িয়ে গেলেন তিনি

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

অং সান সু চি’র ভাষণ নিয়ে অনেকের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ থাকলেও, তার ভাষণে কিছু কথা নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। অনেকে অভিযোগ করছেন, সু চি বাস্তবতা এড়িয়ে গেছেন।

অং সান সু চি তার ভাষণে বলেছেন, চার লক্ষ রোহিঙ্গা মুসলমান কেন বাংলাদেশে পালিয়ে গেছে, সে সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না।

জাতিসংঘ এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান যখন বলছে যে রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ‘জাতিগত-ভাবে নির্মূল’ করা হচ্ছে, তখন রোহিঙ্গাদের পালিয়ে যাওয়া নিয়ে সু চি অবগত না থাকার কথা বেশ হতবাক করেছে।

মিয়ানমারের নেত্রী বলেন, অধিকাংশ মুসলিম পালিয়ে যায়নি এবং সহিংসতা বন্ধ হয়ে গেছে। এ সংঘাতের কারণে দুর্দশাগ্রস্ত ‘সকল মানুষের’ প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন সু চি।

মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা শব্দটি ব্যবহার করে না। তারা রোহিঙ্গাদের ‘বাঙালি মুসলিম’ হিসেবে বর্ণনা করে।  সু চি তার বক্তব্যে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি ব্যবহার করেননি।

বক্তৃতার সময় সু চি খানিকটা দৃঢ় কণ্ঠে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং আইন বহির্ভূত কাজের নিন্দা করেন। কিন্তু সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে তিনি কিছু বলেননি।

সু চি বলেছেন, অধিকাংশ মুসলিম রাখাইন অঞ্চলে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং এতে বোঝা যায় সেখানে পরিস্থিতি খুব মারাত্মক নয়। তিনি বলেন, মুসলিমদের সাথে কথা বলে রাখাইনের সংকট সম্পর্কে জানতে চান।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাখাইনে বসবাসরত মুসলিমদের জীবন মান উন্নয়নের জন্য স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং অবকাঠামো উন্নয়নের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে সু চি উল্লেখ করেন।

বাংলাদেশে অবস্থানরত শরণার্থীরা তাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর মিয়ানমারে ফিরে যেতে পারবে বলে তিনি জানান। রাখাইন অঞ্চলে সেনাবাহিনীর নিপীড়ন নিয়ে কিছু না বলায় সু চি’র সমালোচনা হচ্ছে।

বিবিসি’র মিয়ানমার সংবাদদাতা জোনা ফিশার বলেন, ” অং সান সু চি’র হয়তো বাস্তবতার সাথে সম্পর্ক নেই, নতুবা তিনি ইচ্ছাকৃত-ভাবে বাস্তবতা থেকে চোখ ফিরিয়ে রেখেছেন।”

বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবার বিষয়ে তিনি যে কথা বলেছেন, সেটি এতো সহজ নয়। কারণ বার্মার নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে তাদের কাগজপত্র দিতে হবে। অথচ সে দেশের সরকার রোহিঙ্গাদের বার্মার নাগরিক হিসেবে কোন কাগজপত্র দেয়নি।

সু চি তার ভাষণে বলেছেন, সেপ্টেম্বর মাসের পাঁচ তারিখের পর থেকে রাখাইনে কোন অভিযান চালানো হয়নি। কিন্তু এ বিষয়টি সত্য নয়।

বিবিসি’র সাংবাদিক জোনাথন হেড বলছেন, সেপ্টেম্বর মাসের পাঁচ তারিখের পর তিনি যখন মিয়ানমার সরকারের তত্ত্বাবধানে রাখাইনে গিয়েছিলেন, তখন তিনি সেখানে রোহিঙ্গাদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করতে দেখেছেন।

 

সূত্র: বিবিসি

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন