সেনাসদস্য অপহরণ: রামগড় যুবলীগের সেই ৯ নেতা বহিস্কৃত ॥ পৌর যুবলীগের কমিটি বিলুপ্ত

1392835811.

নিজস্ব সংবাদদাতা, রামগড়:
রামগড়ে সেনাবাহিনীর সদস্যকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টায় আলোড়ন সৃস্টিকারী ঘটনার সাথে জড়িত যুবলীগের সেই ৯ নেতাকে  অবশেষে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিস্কৃতরা হচ্ছে, উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক  ফারুক হোসেন(তাহের ফারুক), পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শামিম মাহমুদ, ৪নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি সুমন, ৯ নং ওয়ার্ড যুবলীগের  সভাপতি শিপন, সাধারণ সম্পাদক চিকন ফারুক, প্রচার সম্পাদক মুরগী মিলন (এসি মিলন), উপজেলা যুবলীগের সদস্য ফরিদ(বড় ফরিদ), রুবেল ও ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম। একই কারণে রামগড় পৌর যুবলীগের কমিটিও ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, মোবাইল ফোনে বন্ধুত্বের মিথ্যা ফাঁদ পেতে সেনাবাহিনীর সদস্য মিন্টু আলীকে নাটোর থেকে গত রবিবার রামগড়ে দাওয়াত দিয়ে এনে অপহরণ করে তিন লক্ষ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের চেস্টা করে রামগড় যুবলীগের ঐ ৯ নেতাকর্মী। র‌্যাব অভিযান চালিয়ে সোমবার রামগড়ের বনবিথী বন বাগান থেকে অপহৃত সেনা সদস্যকে উদ্ধার করে।

ঐদিনই র‌্যাব এদের মধ্যে  উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক  ফারুক হোসেন(তাহের ফারুক), পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শামিম মাহমুদ ও ৯ নং ওয়ার্ড যুবলীগের  সভাপতি শিপনকে গ্রেফতার করে। বর্তমানে এরা খাগড়াছড়ি জেলা কারাগারে আটক আছে। অপর ৬জন আত্মগোপন করেছে। এ ৯ জনই রামগড় থানায় অপহৃত সেনাসদস্যের দায়ের করা অপহরণ ও চাঁদাবাজি মামলার এজাহারভুক্ত আসামী।

খাগড়াছড়ি জেলা যুবলীগের সভাপতি যতন কুমার ত্রিপুরা জানান, যুবলীগের কেন্দ্রিয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক হারুণ অর রশিদের মৌখিক নিদের্শে  গত বৃহষ্পতিবার জেলা যুবলীগের এক সভায় রামগড়ের ঐ ৯ যুবলীগ নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার এবং পৌর যুবলীগের কমিটি ভেঙ্গে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর একজন সদস্যকে অপহরণ করার মত তারা এত বড় যে অপকর্ম করেছে তাতে তারা দলে থাকার কোন অধিকার নেই। এরা পুরো জেলার দলীয় ভাবমর্যাদা নষ্ট করেছে। তিনি এদের কঠোর আইনগত শাস্তির দাবীও করেন। সাংগঠনিক ভাবমূর্তি রক্ষায় জেলা যুবলীগ আরও কঠোর হবে উল্লেখ করে যুবলীগ সভাপতি যতন ত্রিপুরা আরও বলেন, খাগড়াছড়ির সাংসদ ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এবং সাধারণ সম্পাদক জাহেদুল আলম ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি ফেরার পর রামগড় উপজেলা যুবলীগের ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এদিকে অপহরণ ও চাঁবাজির অপরাধে যুবলীগের ৯ নেতাকে বহিষ্কার ও পৌর কমিটি ভেঙ্গে দেওয়ার সিদ্ধান্তের ব্যাপারে বক্তব্য জানতে চাইলে রামগড় উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের বলেন, ‘কাউকে বহিষ্কারের কোন খবর আমার জানা নেই। এছাড়া পৌর যুবলীগের কমিটি ভেঙ্গে দেওয়ার কোন এখতিয়ার জেলা যুবলীগের নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘সেনা বাহিনীর সদস্যকে অপহরণের সাথে ঐ ৯জন নেতার সবাই জড়িত নয়। সত্যিকারভাবে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে আমার আপত্তি নেই।’

অপরদিকে পুরো খাগড়াছড়ি জেলায় আলোড়ন সৃষ্টিকারী সেনা সদস্যকে অপহরণের ঘটনায় জড়িত ৯ যুবলীগ নেতাকে বহিষ্কার ও পৌর যুবলীগের কমিটি বিলুপ্ত করার সিদ্ধান্তের জন্য জেলা যুবলীগের নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন রামগড় উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহসভাপতি ও  সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ থেতে পদত্যাগকারী  শাহা আলম মজুমদার ও কাজী আবুল বাশার এবং পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম কামাল। তাঁরা বলেন, যুবলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে ঐ চাঁদাবাজ যুবকরা যেসব অপকর্ম করেছে এতে সরকার ও দলের ভাবমূর্তি  মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন