সোলার ইমপালস-টু উড়ে গেল পার্বত্য চট্টগ্রামের ওপর দিয়ে

image_106770_0
পার্বত্য নিউজ ডেস্ক:

 সুইজারল্যান্ডের আলোচিত সৌরশক্তিচালিত বিমান সোলার ইমপালস-টু উড়ে গেল বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের ওপর দিয়ে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরের পর পার্বত্য চট্টগ্রামের উপর দিয়ে উড়ে মিয়ানমারের আকাশসীমায় যায় বিমানটি। ঢাকায় সুইস দূতাবাসের সূত্রে জানা যায়, সোলার ইমপালস-টু দুপুর দেড়টার দিকে বাংলাদেশের আকাশসীমায় প্রবেশ করে এবং তিনটার দিকে আকাশসীমা ছাড়িয়ে মিয়ানমারের মানদালাইয়ের পথে চলে যায়। এর আগে বিমানটি সকালে ভারতের বারানসি থেকে যাত্রা শুরু করেছিলো।

সৌর বিমান সোলার ইমপালস-টু পৃথিবী পরিভ্রমণে আকাশে উড়ছে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে বিশ্বজুড়ে খনিজ জ্বালানির পরিবর্তে সৌর শক্তির ব্যবহার বাড়ানো এবং এ বিষয়ে সবাইকে উৎসাহিত করা। সোলার ইমপালস-টু নামের সৌরশক্তিচালিত বিমানের ধারণাটি নিয়ে আসেন সুইজারল্যান্ডের দুই উদ্যোক্তা। আর বিমানটি তৈরি ও নিয়ন্ত্রণের কাজ করছেন সুইস ফেডারেল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি লওসেনের একদল গবেষক। ২০০৩ সালে কাজ শুরু করেন সুইস বিজ্ঞানীরা। প্রায় ৩ বছরের মাথায় ২০০৬ সালে সৌর বিমানের প্রাথমিক একটি মডেল তৈরি করেন তারা। এর গবেষণা আর কারিগরি উন্নতির ধারাবাহিকতায় প্রায় তিন বছর আগে ঐ বিজ্ঞানীরা তৈরি করে এর দ্বিতীয় সংস্করণ যা প্রথমবারের মতো আকাশে উড়েছে ২০১৪ সালে।

গত ৯ মার্চ সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবি থেকে যাত্রা শুরু করে সোলার ইমপালস-টু। ইতিমধ্যে ওমান ও ভারত পাড়ি দিয়েছে বিমানটি। পাড়ি দেবে প্রশান্ত ও আটলান্টিক মহাসাগরও। সব কিছু ঠিক থাকলে জুলাইয়ের শেষ কিংবা আগস্টের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্র হয়ে বিমানটি সুইজারল্যান্ডে ফিরবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রস্তুতকারক সুইজারল্যান্ডের গবেষকরা জানিয়েছেন, এক বিন্দু জীবাশ্ম জ্বালানি ছাড়াই সৌরশক্তিচালিত বিমান দিনরাত উড়বে। সবচেয়ে জ্বালানি সাশ্রয়ী হিসেবে বিমানটি তৈরি করা হয়েছে। যেকোনো বাণিজ্যিক বিমানের চেয়ে এটি তিনগুণ জ্বালানি সাশ্রয়ী। তবে মাত্র একজন আরোহী নিয়ে বিমানটি উড়তে পারে। এক আসনের সৌরচালিত এই উড়োজাহাজের নিয়ন্ত্রণে আছেন সুইজারল্যান্ডের অ্যান্ড্রু বরশবার্গ নামে একজন বিশেষজ্ঞ পাইলট। আর তার সঙ্গে দায়িত্ব ভাগ করে নিতে রয়েছেন স্বদেশী বাট্রেন্ড পিকার্ড।

৭২ মিটার লম্বা ডানার উড়োজাহাজটির ওজন ২.৩ টন। সাধারণত একটি বোয়িং ৭৪৭-৮১ প্লেন ডানাসহ ৬৮.৫ মিটার প্রশস্ত হয়ে থাকে। শক্তির উত্স হিসেবে সৌরচালিত এই উড়োজাহাজের ডানার উপর বসানো রয়েছে ১৭ হাজার সৌরকোষ। সেই সঙ্গে রাত্রিকালে উড্ডয়নের জন্য শক্তির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ বজায় রাখতে এতে রয়েছে লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন