হালদার উজানে চলছে অবাধে তামাক চাষ

fec-image

দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র “হালদা নদীর উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও হালদা উৎসের পোনার বাজার সম্প্রসারণ” শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় খাগড়াছড়ির মানিকছড়ির হালদা পাড়ে তামাক চাষীর বিকল্প আয়ের উৎস হিসেবে সরকারি ও বেসরকারি প্রণোদনা চলমান থাকা স্বত্তেও একটি সংঘবদ্ধ চক্র তামাক চাষ অব্যাহত রাখায় নদীর পানি ও পরিবেশ দূর্ষিত হচ্ছে। বেস্তে যাচ্ছে সরকারি সহযোগিতা ও পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর সহযোগিতায় বাস্তবায়িত ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (আইডিএফ)’র প্রকল্প।

পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন ও উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এশিয়া মহাদেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র চট্টগ্রামের হালদা নদী“বঙ্গবন্ধু হেরিটেজ” হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। ২০১৮ সাল থেকে হালদার উজান উপজেলার বাটনাতলী, গোরখানা, যোগ্যাছোলা, আছাদতলী এলাকায় তামাক চাষীদের বিকল্প জীবিকায়ন সৃষ্টির লক্ষে কৃষকের মাঝে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রদান, সবজি বীজ, মাছের পোনা, মুরগীর বাচ্চা, উন্নত প্রজাতির পেঁপে, আম, কাঁঠাল, শরিফাসহ বিদেশি ফল রামবুটান ও ড্রাগনে চারা বিতরণ করে আসছে সংস্থাটি।

তারপরও একটি মহল ওই এলাকায় গত দু’ বছর ছোট ছোট পরিসরে তামাক চাষ করলেও এ বছর প্রায় ৮০ একর জমিতে ব্রিট্রিশ ট্যোবাকো’র অর্থায়নে তামাক চাষ করেছেন গোরখানার মো. কামাল হোসেন, মাসুম মিয়া, নাছির উদ্দিন, এরশাদ মিয়া আবদুল মালেক, গিয়াস উদ্দিনসহ অন্তত ১০জন কৃষক।

এ প্রসঙ্গে হালদা প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও আইডিএফ’র মৎস কর্মকর্তা মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, চট্টগ্রামের হালদা নদী এশিয়া মহাদেশের একমাত্র মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র ।এই ঐতিহ্য রক্ষা এবং গুরুত্ব নিয়ে মৎস্য গবেষকদের দীর্ঘ দিনে গবেষণার ফলে গত বছর হালদা নদী জাতীয় ঐতিহ্য ‘বঙ্গবন্ধু হেরিটেজ’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। আর নদীর উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও হালদা উৎসের পোনার বাজার সম্প্রসারণ” শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় নদীর উজানস্থলে তামাক চাষীর বিকল্প আয়ের উৎস হিসেবে সরকারি ও বেসরকারি প্রণোদনার অংশ হিসেবে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের পাশাপাশি সরকারের গৃহীত প্রকল্প বাস্তবায়নে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর সহযোগিতায় কাজ করছেন ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (আইডিএফ)।

কিন্তু দুঃখের বিষয় সরকারি ও বেসরকারি এত প্রণোদনা গ্রহণের সুযোগ থাকা স্বত্ত্বেও একটি মহল আমাদের প্রকল্পের আওতায় না এসে দাপটে নদীর চর ও ২-৫ কিলোমিটার দূরে অবাধে তামাক চাষ করছে। তামাকের চুলা ও গাছের নিগৃত রস নদীতে পড়ে মাছের অনেক ক্ষতি হচ্ছে।অচিরেই এ অঞ্চলে তামাক চাষ নিষিদ্ধ করে আইন প্রণোনয়ন সময়ের দাবী।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. হাসিনুর রহমান বলেন, হালদা নদীর উজানে তামাক চাষ নিরুৎসাহিত করতে কৃষি বিভাগ ওই অঞ্চলের কৃষকে সবচেয়ে বেশি সরকারি প্রণোদণা দেওয়া হয়। তারপরও অতি লোভী কিছু লোক দাপট দেখিয়ে তামাক চাষ চালিয়ে যাচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তামান্না মাহমুদ বলেন, তামাক চাষ নিরুৎসাহিত করতে জনপদে একাধিকবার চাষিদের নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। পূর্বের তামাক চাষিদের ৮০% কৃষক সরে এসে সরকারি ও সেবরকারি প্রণোদনায় বিকল্প হিসেবে সবজি চাষসহ কৃষি উৎপাদনে সম্পৃক্ত হয়েছে। এখনো যারা তামাক চাষ করছে, তাঁদেরকে ফিরিয়ে এনে বিকল্প চাষাবাদে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা চলছে। ব্রিটিশ ট্যোবাকোর কোন প্রতিনিধি এলাকায় অবস্থান না করায় তাঁদের মতামত নেওয়া সম্ভব হয়নি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন