হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নতুন কমিটি গঠিত: মণিরা ত্রিপুরা সভাপতি, আশিকা চাকমা সাধারণ সম্পাদক
পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:
“জুম্ম নারীর সমমর্যাদা ও সমঅধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলন জোরদার করুন”- এই শ্লোগানকে সামনে রেখে বুধবার রাঙ্গামাটি সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের ৯ম কেন্দ্রীয় কাউন্সিল ও প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংগঠনের সভাপতি চঞ্চনা চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলন ও কাউন্সিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ২৯৯ পার্বত্য রাঙ্গামাটি আসনের সাংসদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহ সভাপতি উষাতন তালুকদার।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন জনসংহতি সমিতির তথ্য ও প্রচার সম্পাদক মঙ্গল কুমার চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুপ্রভা চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতির রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অরুণ ত্রিপুরা, পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সভাপতি রিন্টু চাকমা প্রমুখ। মণিরা ত্রিপুরার উপস্থাপনায় স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সদস্য শৈএনু মারমা।
সম্মেলনে সামগ্রিক প্রতিবেদন পেশ করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক রিমিতা চাকমা। সম্মেলনের শুরুতে জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন প্রধান অতিথি উষাতন তালুকদার এবং দলীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি চঞ্চনা চাকমা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উষাতন তালুকদার এমপি বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানে গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চা করার কথা বলা হয়েছে। সমাবেশ-মিটিং-মিছিল করার অধিকার দেয়া হয়েছে। আমরা গণতান্ত্রিক অধিকারের চর্চা করছি। আমরা এখানে কোনো উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখছি না। কিন্তু হিল উইমেন্স ফেডারেশনকে কেন বাধা দেয়া হচ্ছে। আমাদেরকে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করতে বাধাগ্রস্ত করবেন না।
তিনি বলেন, জনসংহতি সমিতি ও সমিতির সহযোগী সংগঠনগুলো প্রশাসনকে লিখিতভাবে অবহিত করে এযাবৎ বিভিন্ন কর্মসূটি পালন করে আসছে। সে হিসেবে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের আজকের এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। অথচ সম্মেলনের অনুমতি নেই বলে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত আজকের এই সম্মেলনকে বাধা দেয়া হচ্ছে।
সরকারের দৃষ্টি আর্কষণ করে তিনি বলেন, আমাদের কোন দূরভিসন্ধি নেই। দয়া করে আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করবেন না। আমাদের কার্যকলাপের ফলে কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটবে তার কোন সম্ভাবনা নেই। আমরা কোন রাষ্ট্র বিরোধী কাজ করছি না। আমরা হলের ভেতরে আমাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম নিয়ে নিয়মতান্ত্রিকভাবে আলোচনা করছি মাত্র। অহেতুকভাবে ভুল বুঝা হচ্ছে, অহেতুকভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে।
পরিশেষে তিনি হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সদস্যদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, হাজারো প্রতিকূলতার মুখে জুম্ম জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায়, জুম্ম নারীর সমঅধিকার ও সমমর্যাদা প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আপনারা নিজেদেরকে ছোট ভাববেন না। একজন পুরুষ হিসেবে যেমন অধিকার ভোগ করতে পারে, একজন নারী হিসেবেও মানুষের মতো মানুষ হয়ে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে। জনসংহতি একটি আদর্শিক সংগঠন। এই সংগঠনের নীতি-আদর্শকে আমাদের পথ চলতে হবে। চে গুয়েভারা বলেছেন, মৌমাছিরা যেমন সারাক্ষণ গুনগুন করে, আমাদেরকেও যেমনি সারাক্ষণ জনগণের কাছে গিয়ে অধিকারের কাছে বলতে হবে।
৯ম কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে মণিরা ত্রিপুরাকে সভাপতি, আশিকা চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক এবং শৈএনু মারমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ১৫ সদস্য-বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত হয়। নব নির্র্বাচিত কেন্দ্রীয় কমিটিকে শপথ বাক্য পাঠ করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের বিদায়ী সভাপতি চঞ্চনা চাকমা।
–বিজ্ঞপ্তি