মাটিরাঙ্গা পৌরসভায় কাউন্সিলর পদে আ.লীগে‘র-২৮ ও বিএনপির- ১৭ প্রার্থী

mati

মুজিবুর রহমান ভুইয়া :

অগ্রহায়নের শীতকে হারিয়ে পার্বত্য খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার পাহাড়ী জনপদেও ঝেঁকে বসেছে নির্বাচনী উষ্ণতা। এখনো তেমন করে নির্বাচনী উত্তাপ না ছড়ালেও নির্বাচনী আমেজ সর্বত্র বিরাজমান। পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড ছাপিয়ে নির্বাচনী উৎসব ছড়িয়ে পড়েছে পুরো উপজেলায়। ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী মাটিরাঙ্গা পৌরসভা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিল ও যাচাই-বাছাই সম্পন্ন হয়েছে।

মাটিরাঙ্গা পৌরসভা নির্বাচনে বড় দুটি রাজনৈতিক দল আ.লীগ-বিএনপি মেয়র পদে তাদের দুই প্রার্থীকে মনোনয়ন দিলেও কাউন্সিলর বা সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে আনুষ্ঠানিকভাবে কোন প্রার্থী ঘোষনা করেনি।

তবে ইতিমধ্যে স্থানীয় আওয়ামী লীগের পক্ষ পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৯ প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হলেও অনেক প্রার্থীর আপত্তির মুখে তাও এখনো অমিমাংসিত। তবে তিনটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে আওয়ামীলীগের সমর্থন প্রত্যাশী তিন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করায় তারা প্রার্থী হিসেবে চুড়ান্ত। এমনটাই বলেছেন আওয়ামীলীগের একাধিক নেতা। অন্যদিকে বিএনপি কোন ওয়ার্ডেই তাদের মনোনীত কাউন্সিলর বা সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি।

মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে পাওয়া তথ্য দমে দেখা যায় মাটিরাঙ্গা পৌরসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতার জন্য কাউন্সিলর পদে ৪৪ জন আর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে ৮জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এদের মধ্যে মনোনয়ন পত্রের সাথে দাখিল করা হলফনামায় নিজের শিক্ষাগত যোগতার তথ্য গোপন করায় প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী মো: শহীদুল ইসলাম‘র অভিযোগ ও যথাযথ প্রমান সাপেক্ষে কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মো: নুরুল আমিন নুরু‘র মনোনয়ন পত্র বাতিল করা হয়েছে।

মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ব্যক্তিদের রাজনৈতিক পরিচয় বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে ২৫জন আওয়ামীলীগ সমর্থক, ১৩জন বিএনপি সমর্থক। স্বতন্ত্র প্রার্থী আছেন ৫জন। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে ৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মো: সাইফুল ইসলাম সরাসরি আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত না হলেও তার বাবা ও ভাই সরাসরি আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত। সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৮ জন প্রার্থীর মধ্যে তিনজন আওয়ামীলীগ সমর্থক, ৪জন বিএনপি সমর্থক ও একজন দল নিরপেক্ষ প্রার্থী।

সাধারণ কাউন্সিলর পদে নয়টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১নং ওয়ার্ডে বিএনপি সমর্থিত ১জন প্রার্থী থাকলেও সেখানে আওয়ামীলগি সমর্থিত প্রার্থী আছেন ২জন। ২নং ওয়ার্ডে আওয়ামীলীগ-বিএনপির একক প্রার্থী আছে। ৩নং ওয়ার্ডে ৩জন প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামীলীগের ১জন, বিএনপির ১জন ও আওয়ামী ঘরানার ১জন স্বতন্ত্র প্রার্থী আছে বোটের মাঠে। ৪নং ওয়ার্ডে বিএনপির একক প্রার্থী থাকলেও আওয়ামীলীগের চার সমর্থক ভোটের মাঠে সরব আছেন। ৫নং ওয়ার্ডে ৪জন প্রার্থীর মধ্যে ৪জনই আওয়ামীলীগ সমর্থক। ৬নং ওয়ার্ডে আওয়ামীলীগ সমর্থক ৩জন প্রার্থী বিপরীতে বিএনপি সমর্থক প্রার্থী ২জন। ৭নং ওয়ার্ডে ৮জন প্রার্থীর মধ্যে ৩জন বিএনপি সমর্থক ও ৩ জন আওয়ামীলীগ সমর্থক ভোটের মাঠে আছেন। ৮নং ওয়ার্ডে ৬জন প্রার্থীর মধ্যে ৪জন আওয়ামীলীগের ও ২জন বিএনপি সমর্থক এবং ৯নং ওয়ার্ডে ৩জন আওয়ামীলীগ সমর্থক ও ২জন বিএনপি সমর্থক।

অন্যদিকে সংরক্ষিত ৩টি ওয়ার্ডের আওয়ামীলীগের একক প্রার্থী থাকলেও সংরক্ষিত ৩ ও ৪নং ওয়ার্ডে বিএনপির একক প্রার্থী আছে। একাধিক প্রার্থী নিয়ে বেকায়দায় আছে সংরক্ষিত ১নং ওয়ার্ডে।

কাউন্সিলর পদে একক প্রার্থী দেওয়ার কোনো সিদ্ধান্ত নেই জানিয়ে বিএনপির একাধিক নেতা বলেন, যারা প্রার্থী হয়েছে তাদের মধ্যে যিনি নির্বাচিত হয়ে আসবেন তাকেই বিএনপি স্বাগত জানাবে।

অন্যদিকে আওয়ামীলীগ একক প্রার্থী করার বিষয়টি ভাবছে জানিয়ে একাধিক নেতা বলেন, প্রত্যাহারের আগেই বিষয়টি মিমাংসা হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন