পানছড়ির মেধাবী ছাত্র আল-আমিন ডাক্তার হতে চায়
শাহজাহান কবির সাজু, খাগড়াছড়ি:
পানছড়ির লোগাং বাজার এলাকার মো: শহিদুল ইসলাম ও আমেনা বেগমের অভাবের সংসার। তাই পড়ালেখার সুবিধার্থে ছেলে আল-আমিনের ছোট বেলা থেকেই আশ্রয় হয় নানার বাড়িতে। পানছড়ির দমদম গ্রামে নানার বাড়িতেও অভাবের সংসারে মামা শাহআলমের হাত ধরে শুরু হয় সংগ্রামী যুদ্ধ।
মামা শাহআলম আল-আমিনকে নিয়ে দেখে উজ্জল স্বপ্ন। হতাশ করেনি আল-আমিন। নানা-নানী ও মামাকে খুশীর সাগরে ভাঁসিয়ে প্রথমেই অর্জন করে নেয় ৫ম শ্রেণীর টেলেন্টপুল বৃত্তি। নানার বাড়ীর মমতামাখা আদর আর মামার তত্বাবধানে দিন দিন বড় হয়ে ওঠে আল-আমিন। সদ্য ৮ম শ্রেণিতেও পানছড়ি বাজার উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সে অর্জন করে টেলেন্টপুল বৃত্তি।
মামা শাহআলম জানাল, আমার মেধাবী ভাগিনার কাজ শুধু পড়ালেখা আর নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া। পানছড়ি বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিতি ও লেখাপড়ায় মনোযোগীর দিক দিয়ে বিদ্যালয়ে আমিন সব সময় সেরা। তাই শিক্ষকদেরও শতভাগ বিশ্বাস ছিল সে বৃত্তি পাবেই। শিক্ষকদেরও স্বপ্ন পূরণ হয়েছে বলে জানান উপস্থিত শিক্ষকরা।
বিদ্যালয় প্রধান জ্ঞান প্রভাত তালুকদার জানান, লেখাপড়ায় মনোযোগী, চমৎকার হাতের লেখা ও মার্জিত ব্যবহার মেধাবী আল-আমিনের। সে এই বিদ্যালয়ের গর্ব। তার লেখাপড়ার ব্যাপারে বিদ্যালয় থেকে সব ধরনের সহযোগিতার পথ সব সময় খোলা।
এ ব্যাপারে আল-আমিনের সাথে আলাপকালে সে জানায়, শাহআলম মামার জন্যই আমি সব সময় চিন্তামুক্ত থেকে লেখাপড়া করে আসছি। তাছাড়া আমার বই, খাতা ও কাগজ কলমের অভাব কখনো চোখে পড়তে দেয় নি। তাছাড়া পার্বত্যনিউজ পানছড়ি প্রতিনিধির মাধ্যমে নবম শ্রেণীর যাবতীয় বই ক্রয়ে সহযোগিতা পাওয়ায় সে পার্বত্যনিউজ পরিবারকে ধন্যবাদ জানায়।
ভবিষ্যতে সে একজন বড় ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু আল-আমিনের এখন একটাই ভয় নবম-দশম শ্রেণিতে অনেক খরচ। নানা-নানীর অভাবের সংসারে কোন কিছু চাইতেও খুব লজ্জাবোধ হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের অষ্টম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষায় পানছড়ির বিভিন্ন বিদ্যালয়ের মোট আট জন ছাত্র-ছাত্রী বৃত্তি লাভ করেছে। এদের মধ্যে পানছড়ি বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ে টেলেন্টপুলে দুই জন ও সাধারণ গ্রেডে তিন জন, লোগাং বাজার আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সাধারণ গ্রেডে দুইজন ও পানছড়ি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সাধারণ গ্রেডে একজন করে বৃত্তি লাভ করেছে।