বৈ-সা-বি’র রঙে পানছড়ির অলি-গলি
শাহজাহান কবির সাজু, পানছড়ি ॥
পানিতে ফুল ভাসিয়ে বৈসুক-সাংগ্রাই, বিজু, বিহু, বৈষু বা বৈসাবির মূল আনুষ্ঠানিকতা কাল রবিবার থেকে শুরু হবে। পাহাড়ী সম্প্রদায়ের বৃহত্তর এই সামাজিক আয়োজনে ঘর সাজানোর কাজ শেষ করে এখন আতিথিয়তার জন্য প্রস্তুত পাহাড়ী পল্লীগুলো। তাছাড়া উৎসবকে ঘিরে চারিদিকে যেমনি বইছে আনন্দের জোয়ার তেমনি ড্রাম-গিটারের সুরেলা আওয়াজে মুখরিত ৫নং লতিবান থেকে ১নং লোগাং ইউপি পর্যন্ত।
এরিই মাঝে রবিবার চাকমা জনগোষ্ঠীর ফুল বিজু, ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের হাঁড়ি বৈসু আর মারমা সম্প্রদায়ের সুচিকাজ শুরু হবে। পাহাড়ীদের সংস্কৃতির ঐতিহ্য হিসাবে ফুল হচ্ছে একটি পবিত্র জিনিস। তাই পানিতে ফুল ভাসিয়ে পুরনো বছরের দু:খ-বেদনা ভুলিয়ে সম্ভাবনার আশার আলো জ্বালাতে গঙ্গা মাকে শ্রদ্ধা জানায়।
এ উপলক্ষে একদিন আগে অর্থাৎ শনিবার থেকেই পানছড়ির পাড়াগুলো সেজে উঠেছে রঙিন সাজে। এ নিয়ে মুখরিত হয়ে উঠেছে টিএন্ডটি ওয়াপদা মাঠ, পূজগাং কিনাচান পাড়া, চৌধুরীপাড়া ও ইসলামপুর প্রজন্ম পাঠাগারসহ উপজেলার সর্বত্র। পাড়ায় পাড়ায় চাকমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী নাদেং খেলা, ঘিলে খেলা, ফোর খেলা, গুদু খেলা মারমাদের ঐতিহ্যবাহী “দ” খেলা “পানি” খেলা, “খুয়াং” খেলা উপভোগ করার জন্য শত শত দর্শনার্থীর উপচে পড়া ভীড় যেন পাহাড়ী-বাঙালীর এক ভ্রাতৃত্ব বন্ধনের মিলনমেলা। তাছাড়া ছোট ছোট শিশুরা খেই হারিয়ে ঘাম ঝরিয়ে দৌড়ে বেড়াচ্ছে বৈ-সা-বি’র আমেজে।
শনিবার সকাল থেকেই শুরু হয়েছে এসব প্রাণবন্ত ঐতিহ্যবাহী খেলা ও ছুটে চলার রমরমা আসর। চৈত্রের কাঠ ফাটা রোদে ছাতা মাথায় দিয়ে এসব খেলা উপভোগ করছে আবাল-বৃদ্ধ-বনিতারা।
পানছড়ি টিএন্ডটি টিলার প্রিয়ংকর চাকমা, বিমলেশ্বর চাকমা, ত্রিরতন চাকমা, ভবদত্ত চাকমাসহ অনেকেই জানান পানছড়ির সর্বস্তরের জনগণ প্রস্তুত ১৪২২ সালকে বরণ করতে।