চেনা পথেই ওত পেতে ছিল বিপদ
বাঘাইছড়ি প্রতিনিধি:
বাঘাইছড়ি উপজেলাধীন বঙ্গলতলী ইউনিয়নের ১৪কিলো গ্রামে আমতলা প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়ের (পাড়াকেন্দ্র) শিশু শ্রেণির ছাত্র অটল চাকমা। গত ১৭ জানুয়ারি পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ও ইউনিসেফ পরিচালিত বিদ্যালয় থেকে ফেরার সময় চেনা পথেই ওত পেতে ছিল বিপদ। অসতর্কতা বশত নতুন বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনে খুঁটির টানা তারে অটল চাকমা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ছিটকে পড়ে।
জানা যায়, অটল চাকমার পিতা বাদিচার চাকমার দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে সপ্তম শ্রেণিতে আর ছোট ছেলে অটল চাকমা পড়ত পাড়াকেন্দ্রে। বাদিচান চাকমার বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের দুরত্ব প্রায় দেড় কিলো মিটার। বিদ্যালয় থেকে বাড়িতে যাওয়ার পথে ১৪কিলো এলাকায় ৩৩ হাজার কেভি বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের নির্মাণ কাজ চলার সময় রাস্তায় পড়ে থাকা তার যেটা সংযুক্ত ছিল খুঁটির পাশের ১১ হাজার কেভির সঞ্চালন লাইনের সাথে।দুরন্ত বয়সের সেই ফুটফুটে মেধাবী ছেলেটি জানত না যে বিপদ তাকে হাত ছানি দিয়ে ডাকছে। আমতলা ১৪ কিলো নামক স্থানে রাস্তায় পড়ে থাকা তারটির সাথে অটল চাকমা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পড়ে থাকে। অটল চাকমার মা ইতি চাকমা খবর পেয়ে দ্রুত উদ্বার করে খাগড়াছড়ি সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার কারনে হাতে পচন ধরলে চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তার অন্ত্রোপচার করে তার দুই হাতের কিছু অংশ কেটে ফেলে। গত ১৬ জানুয়ারি ২মাস ২১দিন চিকিৎসা শেষে ৪লক্ষ ২১হাজার টাকা ব্যায়ে বাড়িতে ফিরে আসে বাদিচান চাকমা।
এমতবস্থায় তার চিকিৎসা ও ভবিষ্যৎ জীবনের নিরাপত্তার জন্য মোটা অংকের অর্থ সাহায্য দরকার বলে মনে করছেন তার পরিবার। এদিকে বাদিচান চাকমা বলেন, অর্জিত যে সকল সম্পদ ও অর্থ ছিল সব ব্যয় হয়ে গেছে। কিন্তু ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মাত্র ৫৫হাজার টাকা দিয়েছে যা ব্যয়ের আংশিক। অটলের বাবা বলেন, ঠিকাদারের অসাবধানতার কারনে আমার ছেলের আজ এই অবস্থা। এখন তার ভবিৎত কি হবে। এর দায়ভার কে নিবে।
অটল চাকমার মা ইতি চাকমা বলেন, আমার ছেলের এক হাত ও আরেক হাতের কবজ্বিসহ ওপরের অংশ কাটা। আমি জীবীত থেকে ছেলের এবস্থা দেখতে হল বলে কাদতে থাকে ওপাশে দাঁড়িয়ে থাকে অটল।
বাঘাইছড়ি আবাসিক প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দীঘিনালা থেকে বাঘাইছড়ি পর্যন্ত পার্বত্য বিদ্যুতায়ন প্রকল্পের আওতাধীন বিদ্যুতের ৩৩হাজার কেভির নতুন সঞ্চালন লাইনের কাজ চলছিল। ১৪ কিলো এলাকায় একটি খুঁটি ধরে রাখার জন্য তার টানানো হয়। সেই তারটি খুলে গিয়ে পাশের ১১ কেভি হাজার কেভির বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের সঙ্গে লেগে যাওয়ায় হেটে যাওয়ার পথে অটল চাকমা আটকা পড়ে।
এদিকে বাঘাইছড়ি উপজেলার সচেতন মহল মনে করেন, বিদ্যুৎ বিভাগের অবহেলার করনে অটল চাকমা বিদ্যুৎতায়িত হয়েছে। ৩৩হাজার কেভি লাইন সঞ্চালন করার আগে উপজেলায় কোন মাইকিং করা হয়নি।