ওপারের সীমান্ত দখলে ’আরাকান আর্মির’র, অপহৃত হচ্ছে এপারের মানুষ!
মিয়ানমারের জান্তা সরকার ও সশস্ত্র সংগঠন আরাকার আর্মির মধ্যে দীর্ঘদিন সংঘাতের পর আরাকানের সিত্তুওয়ে ছাড়া বাকী সব শহর দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি। তাছাড়াও বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের প্রায় ২৭১ কিলোমিটার মিয়ানমার অংশ তাদের নিয়ন্ত্রণে ।
ভৌগোলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ মিয়ানমারের সীমান্ত অঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিদ্রোহী সংগঠনটি হয়ে উঠেছে বেপরোয়া।
শূণ্য রেখা ও তার কাঁটার পাশে মরণঘাতী স্থল মাইনের বিস্ফোরণ বেড়েছে সম্প্রতি , যার কবলে পড়ে আহত হচ্ছে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার চোরাচালানে জড়িত ও কিছু নিরীহ স্থানীয়রা।
টেকনাফের নাফ নদীতে মাছ শিকার করতে যাওয়া জেলেদের জলসীমা অতিক্রমের অজুহাত দেখিয়ে করা হচ্ছে অপহরণ, বিনিময়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ মুক্তিপণ দাবী করছে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরকান আর্মি।
গেল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ও বেলা ৩টায় পৃথক দুই সময়ে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সকাল ১০টার দিকে প্রথমে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ ঘোলারচর থেকে দুটি নৌকাসহ ১০ জেলেকে অপহরণ করা হয়। বেলা তিনটার দিকে নাফ নদীর নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা থেকে আরও দুটি নৌকাসহ ৯ জেলে অপহরণের শিকার হন।
শাহপরীর দ্বীপ এলাকা থেকে অপহরণ হওয়া ১০ জেলের নাম জানা গেছে। তাঁরা হলেন মো. কালা মিয়া (৩৭), মো. নুরুল আলম (৩৯), আবদুল রহমান (১৯), মো. আবুল কালাম আহমেদ (২৯), মো. লালু (১১), মো. কবির আহমেদ (৪৩), মোহাম্মদ ইউনুছ (২৩), নুরুল ইসলাম (৩৪), মো. লুৎফর রহমান (২৩) ও রহিম উল্লাহ (২১)। তাঁরা সবাই শাহপরীর দ্বীপ মাঝেরপাড়ার বাসিন্দা। তবে নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা থেকে অপহরণ হওয়া জেলেদের নাম ও পরিচয় জানা যায়নি।
টেকনাফের মত নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সীমান্ত লাগোয়া বাসিন্দারা আরাকান আর্মির এমন অপতৎপরতার ভুক্তভোগী হতে পারে বলে ধারণা স্থানীয়দের।
রাখাইন রাজ্যের সবচেয়ে কাছাকাছির সীমান্ত নাইক্ষ্যংছড়ি হওয়াতে যেকোন সময় জিরো লাইনে চাষাবাদকারী স্থানীয়/চোরাকারবারে জড়িতদের ওপারে (মিয়ানমার রাখাইনে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় করতে পারে বলে এমন শঙ্কায় দিনাতিপাত করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ফুলতলি পয়েন্টের জিরো লাইনের নাফাইংগার শিয়াতে গত ১৪ ফেব্রুয়ারী মাইন বিস্ফোরণ হয়ে কিশোরের বাম পা’র গোড়ালি বিছিন্ন হয়েছে।
জিরো লাইনে স্থল মাইন পুতে রাখা আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী। সবেমাত্র নিয়ন্ত্রণে নেওয়া সশস্ত্র গোষ্ঠী আরকান আর্মিও আরকান থেকে বিতাড়িত জান্তা সরকারের মত মরণঘাতী মাইন বসিয়ে যাচ্ছে।
সীমান্ত পেরিয়ে যারা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে গরু, সিগেরেট ও মরণনেশা ইয়াবা আনতে গেইট দিয়ে প্রবেশ করে তাদের কাছ থেকে মাথাপিছু ৫শ টাকা করে নেয় আরাকান আর্মি। যদি তাদের কথা অমান্য করে বা কারো বিরুদ্ধে যদি আরাকান আর্মিদের লাগায় তাহলে শারীরিক নির্যাতন করে এরিয়া থেকে বের করে দেয় এমনটি সূত্রে জানা যায়।
অনুপ্রবেশ ঠেকানো সহ সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিতে তৎপর আছে বিজিবি, প্রতিটি বিওপির অধিনস্থ এলাকাতে আয়োজন করা হচ্ছে জনসচেতনতা মূলক সভা।


















