কক্সবাজারে বাফুফের ফিফা সেন্টার পরিবর্তনের আদেশ

fec-image

কক্সবাজারে রামু উপজেলার খুনিয়াপালংয়ে বাফুফের ফিফা অর্থায়নে ট্রেনিং সেন্টার নিয়ে পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিল শুরু থেকেই। বনের সংরক্ষিত জায়গায় স্থাপনা পরিবেশের জন্য হুমকি। অবশেষে সরকার বাফুফে ট্রেনিং সেন্টারের স্থান পুননির্ধারণের আদেশ দিয়েছে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব আজ এই সংক্রান্ত আনুষ্টানিক চিঠি প্রদান করেছেন বাফুফে সাধারণ সম্পাদককে।

বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান কক্সবাজারে বাফুফের ট্রেনিং সেন্টারের স্থান সম্পর্কে বলেন, ‘এটি ছিল সংরক্ষিত বন যা কেবল রিজার্ভ ফরেস্ট, সরকার প্রধান ডিরিজার্ভ করতে পারেন। বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় সরকার প্রধানকে লিখেছে যেন তিনি ডিরিজার্ভ করার আগের আদেশটি প্রত্যাহার করেন। পাশাপাশি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়েছে বিকল্প একটি স্থান বেছে নেয়ার। সেই মোতাবেক যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে বিকল্প জায়গা বেছে নেয়ার চিঠি দেয়া হয়েছে।’

ফিফার অর্থায়নে কক্সবাজারে রামু উপজেলার খুনিয়াপালং মৌজায় বাফুফে বনের মধ্যে ২০ একর জমি পেয়েছিল। বন অধিদপ্তর সংরক্ষিত জমি ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে হস্তান্তর করেছিল। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ হয়ে সেই জমি বাফুফে পেয়েছিল। বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অনুরোধের প্রেক্ষিতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বাফুফেকে কক্সবাজারে একই উপজেলার রশিদনগর ইউনিয়নের ধলিরছড়া মৌজার অর্ন্তগত দীর্ঘদিন যাবৎ পরিত্যক্ত প্রায় ১৯.১ একর জায়গা বিকল্প হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে।

বাফুফে সাধারণ সম্পাদক ইমারন হোসেন তুষার জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চিঠি সম্পর্কে বলেন, ‘সরকার আমাদের জায়গা দিয়েছিল, বাতিল করার এখতিয়ারও তাদের। ফুটবল উন্নয়নের জন্য ট্রেনিং সেন্টার নির্মাণ প্রয়োজন। আমাদের অনুরোধ থাকবে ঢাকার নিকটবর্তী খাস জমি বিকল্প হিসেবে প্রদান করার।’

বাফুফে এই ট্রেনিং সেন্টারের জন্য ৩.৩ মিলিয়ন ডলার পাবে ফিফার কাছ থেকে। পরিবেশগত ইস্যু থাকায় ফিফা বাফুফের কাছ থেকে পরিবেশ সমীক্ষা রিপোর্ট চেয়েছিল। বাফুফে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ দলের মাধ্যমে প্রায় ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে এই রিপোর্ট করিয়েছিল। সরকারি আদেশ বাতিল করায় বাফুফে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন। এই প্রসঙ্গে সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ফিফার নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা পরিবেশের সুরক্ষায় এটি করেছিলাম। চলতি বছর ডিসেম্বরের মধ্যে আমরা পুনরায় জায়গা পেলে হয়তো ফিফার কাছ থেকে এই ব্যয় আদায় করতে পারব। ডিসেম্বরের মধ্যে যদি জায়গা না পাওয়া যায় তাহলে এই অর্থ গচ্চাই যাবে।’

২০২২ সালে বাফুফে সরকারি জমি পেয়েছিল। তৎকালীন শীর্ষ এক আমলার সহায়তায় বাফুফে খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে এই জমি পেয়েছিল। বাফুফে এই জমি পাওয়ার পর থেকেই পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠন প্রতিবাদ করে আসছিল। সেই প্রতিবাদের জন্য বাফুফে কাজও শুরু করতে পারেনি। ফিফাও পরিবেশের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ইএসআই রিপোর্ট চেয়েছিল। সেই রিপোর্ট সম্প্রতি ইতিবাচক আসলেও সরকার এখন জায়গা পরিবর্তনের আদেশ দিয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কক্সবাজার, বাফুফের ফিফা সেন্টার
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন