কক্সবাজার পৌরসভায় সেবাপ্রার্থীদের আড়ালে পকেটমার ও ছিনতাইকারী চক্র সক্রিয়
কক্সবাজার পৌরসভায় সেবাপ্রার্থীদের আড়ালে দালাল, পকেটমার ও ছিনতাইকারীরা বেশ সক্রিয় দেখা যাচ্ছে। ফাঁদে ফেলছে সাধারণ লোকজনকে। সেবা গ্রহীতাদের অতিরিক্ত চাপে অপরাধীচক্র শনাক্ত করাও কঠিন। সিসি ক্যামেরাতেও ধরা পড়ছে না। ভিড়ের এই সুযোগটি কাজে লাগাচ্ছে অপরাধীচক্র। তারা বেপরোয়া। মোবাইল, নগদ টাকাসহ মূল্যবান জিনিস খোয়াচ্ছে অনেকে। দালালের খপ্পরে পড়ছে পৌরসভার নাগরিকরা। ভুলভাল বুঝিয়েছে হাতিয়ে নিচ্ছে টাকা। যার বদনাম যাচ্ছে পৌর কর্তৃপক্ষের ঘাড়ে।
কক্সবাজার দোকান মালিক সমিতি ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুফিজুর রহমান বলেন, ‘রবিবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে ব্যবসায়িক কিছু কাগজপত্রের প্রয়োজনে পৌরসভায় যাই। ফেরার সময় দেখি, পকেটে থাকা ১৫ হাজার টাকা টাকা আর নাই। এ সময় আমাকে অনুসরণকারী সন্দেহভাজন একজন কিশোরকে ধরে ফেলি। কিন্তু লোকজনের ভিড়ে দস্তাদস্তি করে সে দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। তার গায়ে একটি লাল রঙের গেঞ্জি পরা ছিল। তবে চিনতে পারি নি।’
তিনি বলেন, ‘ঘটনার পরে পৌরসভা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখি। লোকজনের অতিরিক্ত চাপের কারণে ছিনতাইকারীকে শনাক্ত করতে পারিনি। বিষয়টি তাৎক্ষণিক মেয়রকে অবহিত করি।’
কলিম উল্লাহ নামের আরেক সেবাপ্রার্থী বলেন, ‘পৌরসভায় সেবার নামে অনেক দালাল সৃষ্টি হয়েছে। টাকা দিয়েও সঠিক সময়ে অনলাইন জন্মনিবন্ধন পাইনি। কয়েকবার গিয়ে ফেরত এসেছি। নাগরিক সেবা নিতে আমাকে মারাত্মক হয়রানি ও ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।’
তিনি বলেন, “ঝামেলার ফাঁকে মোবাইলটি ছিনতাই হয়েছে। এই দুঃখ কাকে বুঝাবো?”
এ প্রসঙ্গে পৌরসভার প্যানেল মেয়র-২ হেলাল উদ্দিন কবির বলেন, ‘সেবা প্রার্থীদের আড়ালে কিছু অপরাধী চক্র ঢুকে পড়ছে। তারা মোবাইল, নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। পৌরসভার ভেতরে-বাইরে যেখানে লোকসমাগম সেখানে মাইকিং করে সাবধান থাকতে বলা হচ্ছে।’
লোকজনের আরো বেশি সতর্ক হওয়া দরকার মনে করেন হেলাল উদ্দিন কবির।
এদিকে, ভোটার হালনাগাদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। পৌরসভার বাউন্ডারি সীমানার বাইরেও গড়াচ্ছে সেবাপ্রার্থীদের লাইন। লোকের চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন পৌর কর্তৃপক্ষ। সকাল-সন্ধ্যা অফিসে থেকেও কাজ শেষ করতে পারছেন না কাউন্সিলররা।
মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে গেলে দেখা যায়, নাগরিক সেবা নিতে আসা লোকদের দীর্ঘ লাইন। পৌরসভার সীমানায় জায়গা সংকুলান না হওয়ায় পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে ভিড় করছে। সেখানে গিয়েও সেবা দিচ্ছেন জনপ্রতিনিধিরা।
এ বিষয়ে প্যানেল মেয়র-৩ শাহেনা আকতার পাখি বলেন, ‘ভোটার হালনাগাদ মৌসুম হওয়ায় একসঙ্গে ১২টি ওয়ার্ডের লোকজনের চাপ পড়েছে। সকাল-সন্ধ্যা সেবা দিয়েও কাজ শেষ করা যাচ্ছে না। তবু আমরা সাধ্যমত নাগরিক সেবা দিয়ে যাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘দ্রুত সেবা নিশ্চিতকরণ ও চাপ কমাতে পাবলিক লাইব্রেরির মাঠে গিয়ে সমস্যা সমাধান করে দিচ্ছি। অফিসের বাইরেও অফিসের মত করে দিনরাত কাজ করছি।’