কাশ্মিরে বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দিচ্ছে ভারতীয় সেনারা


বিদ্রোহীদের বাড়ি দাবি করে স্থানীয় কাশ্মিরীদের বাড়িঘর উড়িয়ে দিচ্ছে ভারতীয় বাহিনী। শনিবার স্থানীয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে এমন দৃশ্য দেখা যায়।
টিআরটি গ্লোবালের প্রতিবেদনে স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রে বলা হয়েছে, শ্রীনগর শহরে পুলিশি অভিযানের সময় ভারতীয় সেনারা স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়িঘর ধ্বংস করছে। নানা ভিডিও ফুটেজ থেকে অন্তত নয়টি বাড়ি ধ্বংসের তথ্য পাওয়া গেছে।
ভারতীয় পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, শ্রীনগর শহরজুড়ে ব্যাপক তল্লাশি ও অভিযান চলছে। ইতোমধ্যেই ভারতীয় কারাগারে বন্দী ৬৩ জনের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছে। কাশ্মিরের অন্যান্য অংশে অভিযান ধীরে ধীরে তীব্রতর হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ১,৫০০ জনেরও বেশি লোককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে বলা হয়েছে, এক কাশ্মিরী বিক্ষোভকারীর ভাই নিহত হওয়ার পর বান্দিপোরা জেলায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা এটিকে ‘ভুয়া এনকাউন্টার’ বলে অভিহিত করেছে। অন্যদিকে ভারতীয় সেনাবাহিনী দাবি করেছে যে সে উগ্রবাদীদের সদস্য ছিল।
ভারতীয় পুলিশ জানিয়েছে যে পেহেলগাম ট্রাজেডির পরে অনন্তনাগ জেলা থেকে ১৭৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই হামলার ফলে পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যেও উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে।
ভারত এই হামলার সাথে পাকিস্তানের সংযোগের অভিযোগ এনে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করা, পাকিস্তানি কূটনীতিকদের বহিষ্কার করা, পাকিস্তানি ভিসা বাতিল করা এবং গণমাধ্যমের উপর নিয়ন্ত্রণ কঠোর করা।
ইসলামাবাদ এই অভিযোগগুলোকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। প্রতিশোধ হিসেবে তারা ভারতীয় কূটনীতিকদের বহিষ্কার করে, ভারতীয়দের ভিসা স্থগিত করে, ভারতের জন্য তাদের আকাশসীমা বন্ধ করে দেয় এবং তৃতীয় দেশের মাধ্যমে বাণিজ্য লেনদেন বন্ধ করে দেয়।
পাকিস্তান সতর্ক করে দিয়েছে যে ভারতের পানিপ্রবাহ ভিন্ন দিকে সরানোর বা বন্ধ করার যেকোনো প্রচেষ্টা সিন্ধু পানি চুক্তির অধীনে ‘যুদ্ধ ঘোষণা’ হিসেবে বিবেচিত হবে। পাকিস্তান জোর দিয়ে বলেছে যে সিন্ধু নদের পানি চুক্তি একতরফাভাবে স্থগিত করা যাবে না।
ইতোমধ্যে ভারতের তথ্য মন্ত্রণালয় ‘জাতীয় নিরাপত্তা উদ্বেগের’ কথা বলে প্রতিরক্ষা অভিযান বা নিরাপত্তা বাহিনীর গতিবিধির সরাসরি সম্প্রচার থেকে মিডিয়া চ্যানেলগুলোকে বিরত থাকার জন্য নিষেধাজ্ঞামূলক একটি নির্দেশনা জারি করেছে।
কাশ্মির ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সঙ্ঘাতের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে। উভয় দেশই কাশ্মিরের পুরো ভূখণ্ড দাবি করে। এই অবস্থা কেবল স্থানীয় নয়। বরং আন্তর্জাতিক স্তরেও উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে।
সূত্র: টিআরটি গ্লোবাল