খাগড়াছড়িতে পাহাড় কাটছে খোদ কৃষি গবেষণা কেন্দ্র !

খাগড়াছড়িতে প্রকাশ্যে পাহাড় কাটছে খোদ পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্র। পাহাড় কাটা বন্ধে জেলা প্রশাসকের জিরো টলারেন্স ঘোষণার পরও এমন ঘটনা ক্ষোভ জানিয়েছে পরিবেশবাদীরা।
গত সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকালে ইনস্টিটিউটে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কফি বাগানের লাগায়ো পাহাড়ের একটি অংশ থেকে পেলোডার দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। পাহাড় কাটা মাটি ট্রলিতে করে নিয়ে গবেষণা ইনস্টিটিউটের নিচু জমি ভরাট করা হচ্ছে।
পাহাড়ি কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন জানান, ‘পাহাড় কাটা হচ্ছে না বরং বর্ষায় ভেঙ্গে পরা পাহাড়ের মাটি সরিয়ে তা দিয়ে ইনস্টিটিউটের একটি নিচু জমি ভরাট করা হচ্ছে।’
তবে সরেজমিন পরিদর্শনে ভিন্ন চিত্র দেখা যায়, পাহাড়ের পাদদেশে চলাচলের জন্য মাটির রাস্তা রয়েছে। রাস্তা থেকে মাটি সরানোর পাশাপাশি খাড়া করে পাহাড়ের বড় একটি খাড়া করে কাটা হয়েছে। পাহাড় কাটা মাটি দিয়ে নিচু জমি ভরাটের কাজ করা হয়েছে। একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, পাহাড় কাটা মাটি দিয়ে জমি ভরাট করা হচ্ছে। ’
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের বেপোরোয়া পাহাড় কাটার ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন পরিবেশ সংগঠক ও পিটাছড়া বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ উদ্যোগের প্রতিষ্ঠাতা মাহফুজ রাসেল।
তিনি জানান, ‘খাগড়াছড়ি পাহাড়ি কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট কীভাবে পাহাড় কাটে? সরকারি প্রতিষ্ঠান যদি এরকম উদাহরণ তৈরি করে তাহলে জনগণ কি করবে? বর্তমান সময়ে পরিবেশ উপদেষ্টা, আমরা সবাই মিলে পাহাড় কাটা বন্ধে তৎপর রয়েছি। যেভাবে পাহাড়টি কাটা হয়ে বর্ষায় তা ভেঙ্গে পরবে। কোন অজুহাতেই পাহাড় কাটার সুযোগ নেই।
এদিকে পাহাড় কাটার ঘটনায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন খাগড়াছড়ি পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক হাসান আহমেদ। তিনি জানান, ‘আমরা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পাহাড়ের মাটি কাটার প্রমাণ পেয়েছি। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিএম) হাসান মারুফ বলেন ,‘পাহাড় কাটার বিষয়টি জানার পরই আমরা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালককে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। পরিবেশ অধিদপ্তরের তদন্তের প্রেক্ষিতে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
প্রসঙ্গত, ৩রা ফেব্রুয়ারি জেলায় প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও জীববৈচিত্র রক্ষার সভায় পাহাড় কাটা বন্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের উপর জোর দেয়া হয়েছে। পাহাড় কাটায় জড়িতদের ছাড় দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। ’