উৎসবকে ঘিরে শহরে নানা রং-এ রঙ্গিন হয়ে উঠেছে

খাগড়াছড়িতে মারমা ঐক্য পরিষদের সাংগ্রাইং-এর মঙ্গল শোভাযাত্রা

fec-image

মরমা সম্প্রদায়ের সাংগ্রাইং উৎসবে বর্ষ বিদায় ও বরণ ঘিরে বর্ণিল অনুষ্ঠানমালা রঙ্গীন হয়ে উঠে খাগড়াছড়ি।

মঙ্গল শোভাযাত্রা, মারমাদের ঐতিহ্যবাহী ধ খেলা, মৈত্রী স্নান, মৈত্রী জল বর্ষণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও সন্ধ্যায় মঙ্গল প্রদীপ। ঐতিহ্যবাহী পোষাকে হাজারো মাররা সম্প্রদায়ের নর-নারী জনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠান সর্বজনিন অনুষ্ঠানে পরিণত হয়।

রবিবার(১৩ এপ্রিল) সকালে খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ মাঠে মারমা ঐক্য পরিষদের আয়োজিত মঙ্গল শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন,পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ও খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য ওয়াদুদ ভূইয়া।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন,খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার ও পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল ও বাংলাদেশ মারমা ঐক্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি চাথোয়াই চৌধুরী।

শোভাযাত্রা শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মহিলা কলেজ এলাকায় সাংগ্রাইং উৎসব মাঠ প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়।
পরে সেখানে মারমাদের ঐতিহ্যবাহী ধ খেলা, মৈত্রী স্নান, মৈত্রী জল বর্ষণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও সন্ধ্যায় মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জলন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।

বর্ষ বিদায় ও বর্ষ বরণের দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে পুরো জেলার হাজারো মারমা সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ অংশ নিয়ে উল্লাসে মেতে উঠে।এমন উৎসবে অংশ নিতে পেরে খুশি মারমা সম্প্রদায়ের মানুষ।

অপর দিকে, আজ চাকমাদের বর্ষ বিদায় বা ‘মূলবিজ’ উৎসব উপলক্ষে ঘরে ঘরে চলছে অন্তত ৩২ ধরে সবজি দিয়ে পাচন রান্না ও রকমারি খাবার দিয়ে অতিথি আপ্যায়ন। ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের হারি বৈস। ঘর সাজাতে ব্যস্থ সময় পার করছে ত্রিপুরা সম্প্রদায়।

সোমবার ১৪ এপ্রিল মারমা সংসদের উদ্যোগে হবে সাংগ্রাইং উৎসবে ঐতিহ্যবাহী জলকেলি বা জলোৎসবে তরুন-তরুনীরা একে অপরের দিকে পানি নিক্ষেপ করে উল্লাস প্রকাশ করবে। মার্মা জনগোষ্ঠীর বিশ্বাস এই পানি উৎসবের মধ্য দিয়ে অতীতের সকল দু:খ-গ্লানি ও পাপ ধুয়ে-মুছে যাবে। সে সাথে তরুন-তরুনীরা একে অপরকে পানি ছিটিয়ে বেছে নেবে তাদের জীবন সঙ্গীকে।

বাংলাদেশ মারমা ঐক্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ¤্রাচাথোয়াই চৌধুরী বলেন, মারমা জনগোষ্ঠীর ভাষা,সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ধরে রাখার জন্য প্রতি বছরের মতো এবারও সাংগ্রাই উপলক্ষে এই মঙ্গল শোভাযাত্র।

খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ওয়াদুদ ভূইয়া বলেন, ফ্যাসিবাদমুক্ত পরিবেশে পাহাড়ের মানুষ ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনায় বৈসাবি উৎসব পালন করছে। তিনি বৈসাবি উৎসবের মাধ্যমে পাহাড়ে সহাবস্থান নিশ্চিত হবে বলে প্রত্যাশা করেন এই রাজনৈতিক নেতা।

জেলা প্রশাসক ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকারের মতে, পাহাড়ের এবারের উৎসব গোটা বাংলাদেশের জন্য এটি অনুকরণীয়। এখানে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে মেলবন্ধন গড়ে উঠবে এবং সহবস্থান তৈরি হবে। এটি বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্যের প্রতিচ্ছবি। আমরা যে অন্তভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চায় এই ধরনের উৎসব সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।’
খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মো: আরেফিন জুয়েলের মতে পরিবর্তিত পরিবেশে এবার বৈসাবি উৎসব হচ্ছে আরো উৎসব-উদ্দিপনায়। পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীসহ সকল নিরাপত্তা উৎসব আরো আনন্দঘন করার জন্য সব ধরনের প্রস্ততি নিয়ে বলে জানিয়েছেন জেলার এই শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা

বৈসাবী এক সময় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর জন্য হলেও এখন সার্বজমিন ও জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়েছে। এই উৎসবের মধ্য পাহাড়ের সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতি আরো সু-দৃঢ় হোক এ প্রত্যাশা জনপ্রতিনিধিসহ সকলের।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme/ar_framework/functions_custom.php on line 255
আরও পড়ুন