খাগড়াছড়িতে টিয়ার দখলে ধানক্ষেত
বহু বছর পর এবার গ্রামের মাঠে দলে দলে টিয়া পাখির দেখা মিলছে। গত কয়েক বছর ধরে চার-পাঁচটি টিয়া পাখির দল দেখা গেলেও, এ বছর টিয়া পাখির বড় দল দেখলাম। প্রতিটি দলে না হলেও একশর বেশি পাখি আছে।’
পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে পাহাড়ের ফাঁকে সমতল ভূমিতে আমন ধান পাকা শুরু হয়েছে। সবুজ মাঠ এখন সোনা রঙের আভা ছড়ায়। ফসল তোলার সময় এখন। কৃষকের ব্যস্ততা বেড়েছে, কোথাও কোথাও পাকা ধান মাঠ থেকে তোলা শুরু হয়েছে।
এমন সময়ে কৃষকদের বিড়ম্বনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ঝাঁকে ঝাঁকে টিয়া পাখি। বার বার হানা দিচ্ছে পাকা ধানের ক্ষেতে। এক বার পাকা ধানের ক্ষেতে টিয়া পাখির দল পড়লে আর রক্ষা নেই।
টিয়ার স্বভাব বড় বিচিত্র। মাঠের ধান খেতে ব্যর্থ হলে উড়ে যাওয়ার সময় পাকা ধানে শীষ নিয়ে উড়ে যায়। পরে উচুঁ গাছের ডালে বা নিরাপদ জায়গায় বসে নীরবে সেই ধান খায় তারা।
খাগড়াছড়ি সদর জেলার খবংপুজ্যা গ্রামের কৃষক সমাবর্তন দেওয়ান বলেন, ‘বহু বছর পর এবার গ্রামের মাঠে দলে দলে টিয়া পাখির দেখা মিলছে। গত কয়েক বছর ধরে চার-পাঁচটি টিয়া পাখির দল দেখা গেলেও, এ বছর টিয়া পাখির বড় দল দেখলাম। প্রতিটি দলে না হলেও একশর বেশি পাখি আছে।’
খাগড়াছড়ি সদরের কমলছড়ি গ্রামের বৃদ্ধ নিবারন চন্দ্র চাকমা জানান, এক-দেড় দশক আগেও খাগড়াছড়িতে প্রায়ই ঝাঁকে ঝাঁকে টিয়া পাখি দেখা যেতো। এখন সেই টিয়া পাখির দল আর দেখা যায় না। তবে কোন কোন সময় রাতের বেলায় দূর থেকে ঝাঁকবাধা টিয়ার ডাক শোনা যায়।
পাখির সৌখিন চিত্র গ্রাহক প্রকৌশলী সবুজ চাকমা জানান, টিয়া পাখির প্রিয় থাকার জায়গা হলো উঁচু গাছপালা ও নিরব পরিবেশ। পাহাড়ি বন-জঙ্গল থেকে ফুল, ফল ও জুম খেয়েই এরা বেঁচে থাকে।
বর্তমানে পাহাড়ের বন জঙ্গলে টিয়া পাখিদের খাদ্যের উৎস কমে গেছে বলে দাবি গবেষকদের। তাই তারা দলে দলে বসতি এলাকাতেও এসে ফসলের ওপর হানা দিচ্ছে। পাহাড়ে সচরাচর যেসব টিয়া দেখা যায়, সেগুলো হচ্ছে সবুজ টিয়া, মদনা টিয়া, লটকন টিয়া।
সূত্র: ইনকিলাব