গর্জনিয়ায় মাদরাসা অধ্যক্ষসহ ৪ শিক্ষক লাঞ্চিত: ইউএনও-পুলিশের হস্তক্ষেপ
কক্সাজারের রামুর গর্জনিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসায় দু’জন অধ্যক্ষ দাবীর জের ধরে এক অধ্যক্ষসহ ৪ শিক্ষক লাঞ্চিত হন প্রতিপক্ষ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর হাতে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিদের্শে কর্মস্থলে যোগদান করতে গিয়ে এ লাঞ্চলার শিকার হন তারা।
এ নিয়ে একদিকে প্রতিষ্ঠানের শতশত শিক্ষার্থীর পড়া-লেখা ব্যাহত হচ্ছে। আর অন্যদিকে সেচ্ছাচারী কিছু শিক্ষক -শিক্ষার্থীর কাছে জিম্মি হয়ে ধর্মীয় শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে সমগ্র এলাকায়।
শনিবার (৭ র্মাচ) সকালে মাদ্রাসার কয়েকজন শিক্ষক এ প্রতিষ্ঠানের কিছু শিক্ষার্থীদের লেলিয়ে দিয়ে অপর শিক্ষকদের নাজেহাল করায় এ ঘটনা ঘটে। পরে গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
গর্জনিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক মাওলানা মো: আইয়ুব ও শিক্ষক রেজাউল করিম জানান- তারা ২ জনসহ অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হামিদ ও শিক্ষক রাজিয়া আক্তার এ মাদরাসায় চাকুরী করে আসছেন দীর্ঘদিন।
সম্প্রতি এ মাদরাসায় অধ্যক্ষ পদ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব লাগে মাঠ থেকে উচ্চ আদালত পর্যন্ত। এরই মধ্যে উচ্চ আদালতের রায়ের আলোকে শনিবার তারা কর্মস্থল মাদরাসায় প্রবেশ করতে চাইলে তাদের প্রতিপক্ষ শিক্ষক বাধা দেয় তাদেরকে। যা পরবর্তীতে হাতাহাতির পর্যায়ে চলে যায়।
এক পর্যায়ে আলাউদ্দিন নামের এক শিক্ষক আরো ২/১ শিক্ষককে সাথে নিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের লেলিয়ে দেন অধ্যক্ষ ও অপরাপর শিক্ষকদের বাধা দিতে। নির্দেশ মতো শিক্ষার্থীরা তাই করে।
পাশাপাশি নানা অশালিন আচরণ করে–লাঞ্চিত করে তারা। বিষয়টি তারা সাথে সাথে রামু ইউএনও মহোদয় এবং পুলিশকে অবগত করলে রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে গর্জনিয়া ফাড়িঁ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে যান দ্রুত। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।
তারা আরো বলেন,এ কারণে সারা দিন মাদরাসায় কোন ক্লাস হয়নি। সকলে শিক্ষকদের ক্ষমতা দখলের লড়াই দেখছিলেন মাদরাসা গেইট এলাকায়। পুলিশ জানান, অবস্থা নাজুক পর্যায়ে চলে গেলে তারা উভয় পক্ষকে থামান অনেক কষ্ট করে। এরই মধ্যে লংকা কাণ্ড ঘটে যায় সমগ্র এলাকায়।
তবে অপর দলের শিক্ষক নেতা আলাউদ্দিন আল আজাদের দাবি আব্দুল হামিদ গং’রা মাদ্রাসার বহিস্কৃত শিক্ষক। তারা মাদ্রাসায় ঢুকতে পারবে না। মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হলেন সাইফুল ইসলাম। তিনি অপরাপর অভিযোগ অস্বীকার করেন এ প্রতিবেদকের কাছে।
অপর একদল নিরবতা পালনকারী শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, দু’দল শিক্ষকদের কারণে ঘটনার পরের দিন রোববার শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিলো কম। আতংকে ছিলো অভিভাবকরা।
এছাড়া রোববার(৮ মার্চ) উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঘটনাস্থলে যাওয়ার কথা থাকলেও নারী দিবসসহ ব্যস্ত থাকায় উপজেলার কেই ঘটনাস্থলে যান নি। এ নিয়ে দূ:চিন্তায় অভিভাবকরা।
গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনর্চাজ মো. আনিছুর রহমান বলেন- ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। ইউএনও স্যারের সঙ্গে কথা বলে শিক্ষকদের এক পক্ষকে পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত বাড়িতে চলে যেতে বলা হয়েছে।