চকরিয়ায় ধানের চারা উপড়ে ফেলে জমি দখলের অভিযোগ

fec-image

কক্সবাজারের চকরিয়ায় অসহায় দুই বিধবা নারীর ফসলি জমির ধানের চারা উপড়ে ফেলা ও হুমকি দেযার অভিযোগ উঠেছে। দশ শতক ফসলি জমিতে ধানের চারা রোপণ করেছিলেন বিধবা নারী মিটু বেগম ও রেনু আক্তার। এক দিন পর ওই জমির কাছে গিয়ে দেখতে পান, ধানের চারাগুলো উপড়ে ফেলা হয়েছে। বিষয়টি এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানানো হলেও কোনো প্রতিকার না পেয়ে তারা স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ তুলে ধরেন। চকরিয়া উপজেলা কোনাখালী ইউনিয়নস্থ বটতলী স্টেশন এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।

ভুক্তভোগী অসহায় দুই বিধবা নারী ও স্থানীয় লোকজন জানান, কোনাখালী ইউনিয়নস্থ বটতলী স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় বেতুয়া মৌজার বিএস ১৫৬ নম্বর খতিয়ানের ও সৃজিত বিএস ৫৯০ নম্বর খতিয়ানের বিএস ৬২১ দাগের দশ শতক ফসলি জমিতে ধানের চারা রোপন করে চাষাবাদ করেছিল ওই এলাকার মৃত আলী হোসেনের দুই অসহায় বিধবা স্ত্রী মিটু বেগম ও রেনু আক্তার।

তাদের স্বামী জীবিত থাকাবস্থা থেকে দীর্ঘদিন ধরে এই জমি চাষাবাদ করে ভোগদখল করে আসছেন তারা। কিন্ত তাদের স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে স্থানীয় হেলাল উদ্দিন ও তার ছেলে মফিজ, মনির উদ্দিন ওই জায়গা দখলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন।

জায়গার মালিক মৃত আলী হোসেনের দুই স্ত্রীর মাঝে এক শিশু ছেলে ও কন্যাসন্তান রয়েছে। তাদের বড় কোন সন্তান না থাকায় একটি দখলবাজ চক্র মিলে ওই জায়গা দখল করতে চান বলে স্থানীয় এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী বিধবা দুই নারী অভিযোগ করেন।

জানাগেছে, গত মঙ্গলবার আলী হোসেনের স্ত্রীরা ওই জমিতে ধানের চারা রোপণ করে চাষাবাদ করেন। প্রায় পাঁচ শতক জমিতে ধানের চারা রোপণের পর হঠাৎ করেই পরের দিন ভোর সকালে স্থানীয় হেলাল উদ্দিন ও তার ছেলে মফিজ, মনিরের নেতৃত্বে একটি দল ফসলি জমিতে নেমে ধানের চারা উপড়ে ফেলে। ওই সময় নিরীহ কৃষাণী আলী হোসেনের দুই বিধবা স্ত্রী কোনো ধরনের সংঘাত ও সহিংসতায় না গিয়ে তাঁরা ঘটনার বিষয়টি অভিযুক্তদের ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান ও স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানান।

আলী হোসেনের দুই বিধবা স্ত্রী মিটু ও রেনু আক্তার বলেন, জমিটি আমাদের স্বামীর পৈতৃক ও খরিদ সূত্রে মালিক। দীর্ঘদিন ধরে এ জমি ভোগদখল করে আসছি। আমাদের কোনো বড় সন্তান নেই। গায়ের জোরে ও ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে জমিটি দখলের জন্য স্থানীয় একটি দখলবাজ চক্র উঠেপড়ে লেগেছে। জায়গার বিষয়ে কোনাখালী ইউনিয়ন পরিষদে বিচারাধীন রয়েছে। তারা বিভিন্ন সময় এ জমির বিষয়ে আমাদের হয়রানি করে ও হুমকি দিয়ে আসছে। সর্বশেষ বুধবার জমিতে লাগানো ধানের চারা উপড়ে ফেলেছে ওই দখলবাজ চক্ররা। ধানের চারার কী অপরাধ? আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত হেলাল উদ্দিনের ছেলে মনির উদ্দিনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে  তিনি বলেন, বিরোধপূর্ণ জমির বিএস ১৫৬ নম্বর খতিয়ানে বিএস দাগ ৬২১ জমি তাদের দখলীয় অংশ বলে উল্লেখ করেছেন, সেই বিরোধীয় জমির দাগটি তাদের দলিলেও নেই। বর্তামনে জায়গার বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে ইউনিয়ন পরিষদে বিচারাধীন রয়েছে বলে তিনি জানান।

কোনাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দিদারুল হক সিকদার বলেন, আলী হোসেনের স্ত্রীদের ও তাদের প্রতিপক্ষ লোকজনকে চৌকিদার মাধ্যমে এবং আমি নিজেই সরাসরি দু’পক্ষকে কাগজপত্র নিয়ে পরিষদে সালিসী বৈঠকে বসার জন্য অবগত করেছি। বিরোধপূর্ণ বিষয়টি নিয়ে দ্রুত মিমাংসা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ধানের চারা উপড়ে ফেলে জায়গা দখল চেষ্টার ব্যাপারে কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। এ বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগী কেউ অভিযোগ করলে তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন