জ্বলছে মণিপুর! নামল সেনা, বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা, ৮ জেলায় কার্ফু জারি
জ্বলছে বিজেপি শাসিত ভারতের মণিপুর রাজ্য। গত কয়েকদিনে রাজ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ পুলিশ এবং উপজাতিদের। রাজ্যজুড়ে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি। যা চূড়ান্ত আকার ধারণ করেছে বুধবার।
বুধবার (৪ মে) অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়নের তরফে আদিবাসী ঐক্য মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছিল মণিপুরের চূড়াচাঁদপুর জেলায়। সেই মিছিলকে কেন্দ্র করে নতুন করে ছড়িয়ে পড়ে সহিংসতা। বহু এলাকায় হাতাহাতি, মারধর, দোকানপাট ভাঙচুর, গাড়িতে আগুন লাগানোর মতো ঘটনা ঘটেছে। যার জেরে মণিপুরের আটটি জেলায় কারফিউ জারি করেছে এন বীরেন সিং সরকার। গোটা রাজ্যেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। আগামী ৫ দিন ইন্টারনেট বন্ধ থাকবে বলেই জানানো হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। মোতায়েন করা হয়েছে বাড়তি আধাসেনা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চলছে রুট মার্চও।
বস্তুত, বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরেই মণিপুরে অশান্তি চলছে। এর মূলে রয়েছে মেটেই জনজাতির সঙ্গে আদিবাসীদের সংঘাত। মণিপুরের মেটেই জনজাতিকে তফসিলি উপজাতির তকমা দেওয়ার দাবি দীর্ঘদিনের। মণিপুরের বিজেপি সরকার সেই দাবি মেনে নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে। তাতেই ক্ষুব্ধ কুকি-সহ অধিকাংশ আদিবাসী সংগঠন। তাদের বক্তব্য, মেটেইরাও যদি তফসিলি উপজাতির স্বীকৃতি পেয়ে যায়, তাহলে আদিবাসীদের অধিকার ক্ষুণ্ন হবে। তাছাড়া, মণিপুরের বিজেপি সরকার স্থানীয় বনাঞ্চলগুলিতে সমীক্ষা চালাচ্ছে। আদিবাসীদের আশঙ্কা, সরকার এবার বনভূমি ধ্বংস করতে চলেছে। তার চেয়েও তাৎপর্যপূর্ণভাবে গত কয়েক মাসে সেরাজ্যে অন্তত তিনটি গির্জা ভেঙেছে প্রশাসন। সরকারের দাবি, ওই গির্জাগুলি ছিল বেআইনি। সরকারের এই পদক্ষেপে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে আদিবাসী খ্রিস্টানরা। সেটাও বিক্ষোভের অন্যতম কারণ।
পরিস্থিতি এতটাই উদ্বেগজনক যে মেরি কমের মতো আন্তর্জাতিক মানের অ্যাথলিটদেরও অসহায় হয়ে কেন্দ্র সরকারের কাছে হস্তক্ষেপের আবেদন জানাতে হচ্ছে। মেরি কম এদিন প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে টুইটে লিখেছেন, “আমার রাজ্য মণিপুর জ্বলছে। দয়া করে সাহায্য করুন।” নিজের টুইটে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংকে। সূত্র: টাইমস নাউ।