ইন্টারনেটের দাম কমালো টেলিটক, পিছুটান জিপি-রবি-বাংলালিংকের

fec-image

ইন্টারনেট প্যাকেজের দাম কমিয়েছে টেলিটক। ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রণায়ের নির্দেশনা মেনে ৩ ও ১৫ দিনের প্যাকেজের ডেটার পরিমাণ (ভলিউম) ঠিক রেখে মেয়াদ ৭ ও ৩০ দিন করেছে অপারেটরটি। এতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন টেলিটক গ্রাহকরা।

জানা গেছে, গত ৫ নভেম্বর অপারেটর কোম্পানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক বৈঠকে মোবাইল ইন্টারনেটের দাম বাড়ানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেন মন্ত্রী। তিনি ৩ ও ১৫ দিনের প্যাকেজ বন্ধের পর কীভাবে ইন্টারনেটের দাম বাড়ানা হয়েছে, তা বিস্তারিত তুলে ধরেন। দাম কমাতে টেলিটককে ৮ নভেম্বর এবং অন্য তিন অপারেটরকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত সময় দেন।

বুধবার (৯ নভেম্বর) রাত ১২টায় ডেটা প্যাকেজ আপডেট করেছে টেলিটক। টেলিটকের ডেটা প্যাকেজগুলো পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, তারা আগে ৩ দিন মেয়াদে যে দামে যত ডেটা ভলিউম গ্রাহকদের অফার করতো এখন একই দামে তা ৭ দিন মেয়াদে দিচ্ছে। আবার ১৫ দিন মেয়াদি ডেটা ভলিউম একই দামে ৩০ দিন মেয়াদে দিচ্ছে।

৭ মেয়াদি ১ জিবি ডেটার দাম নির্ধারণ করেছে ২১ টাকা এবং ২ জিবির দাম ৩৬ টাকা। ৩০ দিন মেয়াদি ২ জিবি ডাটা ৯৩ টাকা এবং ৩ জিবি ১৩৯ টাকা। ৭ দিন মেয়াদি ১০ জিবির দাম ৯৭ টাকা এবং ৩০ দিন মেয়াদি ১০ জিবির দাম ২৩৯ টাকা। ৩০ দিন মেয়াদি ৩০ জিবি ডেটা প্যাকেজের দাম ৩৪৪ টাকা এবং ৪৫ জিবির দাম ৪৪৫ টাকা। এছাড়া ৩০৯ টাকা আনলিমিটেড মেয়াদে ২৫ জিবি ইন্টারনেট অফার করছে টেলিটক।

টেলিটক দাম কমানোয় খুশি গ্রাহকরা। মো. নাহিদ হাসান নামে একজন গ্রাহক দাম কমানোর পর টেলিটকের প্যাকেজগুলোর স্ক্রিনশট শেয়ার করে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘টেলিটক কথা রেখেছে। এখন বয়কট টিম কোথায়?’

নীরব খান নামে একজন লিখেছেন, ‘টেলিটক তাদের আগের প্যাকেজগুলো ফেরত দিয়েছে আগের দামেই। এবার দেখি তিন অপারেটর কী খেলা দেখায়! মোস্তাফ জব্বার ইচ্ছা করলে গ্রাহকের হয়ে কাজ করতে পারেন। কিন্তু তিনি সেটা সবসময় করেন না। দেখা যাবে, নির্বাচনের পর দাম বাড়িয়ে সুদে-আসলে উঠিয়ে নেবে।’

এদিকে, বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে টেলিটক তাদের ডেটা প্যাকেজ সংশোধন করে আগের দামে ফিরলেও গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংক দাম কমানো নিয়ে এখানো সংশয়ে রয়েছে। তারা বলছেন, ৩ দিন মেয়াদে যে দামে তারা ডাটা প্যাকেজ দিতো, সেটা এখন একই দামে ৭ দিন মেয়াদ দিলে তাদের ব্যবসায়ে লোকসান হবে।

তিন অপারেটর সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রীর নির্দেশনার পর তার বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) বিষয়টি পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানানোর জন্য দফায় দফায় চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। হাতে মাত্র একদিন সময় থাকলেও তারা এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি।

গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংকের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা গণমাধ্যমে এ নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি। তারা মোবাইল অপারেটরগুলোর সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব) দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে পরামর্শ দেন। তবে মুখে কুলুপ এঁটেছে অ্যামটব নেতারাও। তারা বিষয়টি ‘পর্যালোচনা’ ও ‘পর্যবেক্ষণ’ করছেন বলে জানিয়েছেন।

বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) বলেন, ‘টেলিটক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ডেটা প্যাকেজ সংশোধন তো করে ফেলেছে। আমরা আশা করছি—অন্য তিন অপারেটরও করবে।’

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ইন্টারনেট, জিপি, টেলিটক
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন