মিয়ানমারের সিমে ইন্টারনেট চালাচ্ছে রোহিঙ্গারা

fec-image

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ রাখা হলেও মিয়ানমারের সিম ব্যবহার করে ইন্টারনেট চালাচ্ছে রোহিঙ্গারা। এদিকে থ্রিজি-ফোরজি সেবা বন্ধ থাকায় তথ্য আদান প্রদানে উখিয়া-টেকনাফবাসী পড়েছে বিপাকে। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিসেও দেখা দিয়েছে ভোগান্তি।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত এনজিওকর্মী ২০টি ক্যাম্পে অন্তত ১০টি মোবাইল টাওয়ারের সুবিধা নিয়ে নিরবিচ্ছিন্ন ভয়েস কলে কথা বলতো রোহিঙ্গারা। এখন থ্রিজি-ফোরজি সুবিধা সংকীর্ণ করায় মিয়ানমারের এমপিটি কোম্পানির সিম দিয়ে ইন্টারনেট সুবিধা ভোগ করছে তারা। ক্যাম্পগুলোতে মিয়ানমারের এমপিটি সিম চোরাইপথে এনে বাজারজাত করছে রোহিঙ্গারাই। আশ্রিত রোহিঙ্গারা এতসব সুবিধা ভোগ করলেও স্থানীয় লোকজনকে পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি ও বিড়ম্বনা।

জানা গেছে, কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও টেকনাফ থেকে মিয়ানমারের সিম সংগ্রহ এবং মিয়ানমারে অবস্থানরত বিভিন্ন আত্মীয়দের মাধ্যমে মোবাইলে রিচার্জ করছে। সেখানে মুঠোফোনের ডিসপ্লেতে MPT লেখা দেখা গেছে এবং মিয়ানমারের সিমগুলোর নাম্বারের সংখ্যা এগারোটি। যাহা ০৯৮৯১৬৮৮……, ০৯২৬৩১৭৯৬…., ০৯৪০৯৩২০৪…. এভাবে শুরু হয়।

খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, জাতীয় পরিচয় পত্র দেখিয়ে ফিঙ্গার দিয়ে একজন গ্রাহক ১৫ টি সিম উত্তোলনের করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু রোহিঙ্গাদের এনআইডি না থাকলেও হাতে হাতে কয়েক লাখ সিম। নামে বেনামে এই সিম ব্যবহার করে বিদেশে তথ্য সরবরাহের পাশাপাশি বিভিন্ন অপরাধমুলক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে রোহিঙ্গারা।

পালংখালী ইউপির চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, মঙ্গলবার সকাল থেকে আমার এলাকায় কোনো ধরনের থ্রিজি-ফোরজি নেটওয়ার্ক নেই। এ কারণে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-উপাত্ত থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি নানা দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয়রা। ১ সেপ্টেম্বর থেকে উখিয়া-টেকনাফ উপজেলায় সব ধরনের মোবাইল সিমসহ নতুন সংযোগ প্রদানও বন্ধ রয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো থেকে সব কোম্পানির মোবাইল টাওয়ার দ্রুত অপসারণ করে রোহিঙ্গাদের মোবাইল ব্যবহারে কঠোর হতে মত দেন তিনি।

উখিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি সরোয়ার আলম শাহীন বলেন, রোহিঙ্গাদের অপরাধ দমনে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেয়। গত তিনদিন আগে নেটওয়ার্ক পুনরায় চালু করে থ্রিজি-ফোরজি সেবা পুরোপুরি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ফলে রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয়রা তথ্য আদান প্রদানে পড়েছে বেকায়দায়য়।

নেটওয়ার্ক কোম্পানি রবি আজিয়াটা লিমিটেডের মার্কেট কমিউনিকেশনের জিএম আশিকুর রহমান বলেন, বিটিআরসির নির্দেশনা অনুসরণ করে উখিয়া-টেকনাফে থ্রিজি-ফোরজি সেবা বন্ধ রয়েছে। গ্রাহকদের মাঝে দুর্ভোগ ও উত্তেজনা থাকলেও কিছু করার নেই।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, বিটিআরসি থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছিল রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থ্রিজি-ফোরজি সেবা বন্ধ রাখতে। কিন্তু নেটওয়ার্ক কোম্পানিগুলো বলছে, উখিয়া-টেকনাফ পুরো এলাকায় নেটওয়ার্ক বন্ধ রাখতে বলছে বিটিআরসি। তবে এ ধরনের কোনো নির্দেশনা এখনো পাইনি।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ইন্টারনেট, এনজিও, খ্রিজি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন