দুই কারণে মাঠে নামতে দেরি কক্সবাজারের লবণ চাষিদের

fec-image

সাধারণতঃ নভেম্বর মাস থেকে লবণ মৌসুম। প্রায় দেড় মাস হলো। এখনো কাঙ্খিত পরিমাণ লবণ চাষি মাঠে নামে নি। দাম নিয়ে রয়েছে হতাশা। মূলতঃ দুই কারণে এ বছর চাষিরা মাঠে নামতে দেরি হচ্ছে। প্রথমতঃ বাজারে লবণের ন্যায্য মূল্য নেই। মৌসুম শেষে লোকসান ও ধারদেনায় ঘরে ফিরতে হয় চাষিদের। দ্বিতীয়তঃ মৌসুমের শুরুতে ‘বড় জো’ তথা চাষযোগ্য মাঠে অধিক পানি ঢুকে পড়ায় সঠিক সময়ে মাঠ প্রস্তুত করতে পারে নি।

বিসিক সুত্র মতে, ২০২০-২১ সালে দেশে লবণের চাহিদা সাড়ে ১৯ লক্ষ মে. টন। লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করতে সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) সভা করেছে মন্ত্রণালয়। ২০১৯-২০ মৌসুমে ১৮ লক্ষ ৫০ হাজার মে.টন লক্ষ্যমাত্রা ও ১৮ লক্ষ ৪৯ হাজার মে. টন চাহিদার বিপরীতে লবণ উৎপাদন হয়েছিল ১৫ লক্ষ ৭০ হাজার মে. টন। তার আগের মৌসুমের উদ্বৃত্ত ছিল ৪ লক্ষ ২২ হাজার মে. টন।

প্রায় সাড়ে ১৮ লাখ চাহিদার বিপরীতে দেশে লবণ মজুদ গড়ে উঠে ২০ লাখ ১২ হাজার মে. টন। সব মিলিয়ে মোট লবণ উদ্বৃত্তের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ লাখ ৬২ হাজার মে. টন। ধারাবাহিক কয়েকটি বছর রেকর্ড পরিমাণ লবণ উৎপাদন হচ্ছে। অপাততঃ দেশে কোন লবণ ঘাটতির সম্ভাবনা নেই।

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) কক্সবাজার অফিসের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মুহাম্মদ হাফিজুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, লবণ আমদানি বন্ধে সরকার বদ্ধপরিকর। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের নিকট লিখেছে বিসিক। চাষিদের প্রণোদনা ও উৎসাহ যোগাতে ব্যাপক সভা করা হয়েছে। চাষিদের প্রতি একরে ৫০ হাজার টাকা করে ‘লবণ ঋণ’ দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে। শীগগির কার্যক্রম শুরু হবে। ডিজিএম জানান, চাষযোগ্য লবণজমির পরিমাণ ৫৭ হাজার ৭২২ একর। চাষির সংখ্যা ২৮ হাজার ৭৯১ জন।

তবে, অভিযোগ হলো- ঢাকাকেন্দ্রিক আমদানিকারক সিন্ডিকেটের সাথে গোপন আঁতাত রয়েছে কক্সবাজারের কিছু ভুঁইফোঁড় লবণমিল মালিকের। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তা, যারা অপ্রয়োজন সত্ত্বেও লবণ আমদানির পক্ষে ভূমিকা রাখে। অসাধু ব্যবসায়ীরা ‘শিল্প লবণ’-এর আড়ালে দেদারছে সোডিয়াম সালফেট মিশ্রিত লবণ এনে ‘ভোজ্য’ হিসেবে বাজারজাত করে। তাদের কারণেই মাথার ঘাম পায়ে ফেলে উৎপাদিত লবণের ন্যায্য মূল্য পায় না চাষিরা।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন, বিসিক, লবন চাষি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন