দেশে ফিরে গুলশানের ১৯৬ নম্বর বাড়িতে উঠবেন তারেক রহমান


আগামী আগস্ট মাসের শেষ নাগাদ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার একটি সম্ভাবনা আছে। তবে সেটিও চূড়ান্ত কিছু নয়। তবে তিনি দেশে ফেরার পর গুলশান-২ অ্যাভিনিউ রোডের ১৯৬ নম্বর বাড়িতে থাকবেন বলে বিএনপির দায়িত্বশীল একটি সূত্র দেশের একটি শীর্ষ জাতীয় দৈনিককে জানিয়েছে।
ওই দৈনিকের খবরে জানা যায়, ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর তৎকালীন সরকার তাঁর স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে এই বাড়ি বরাদ্দ দেয়। সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকার এই বাড়ির নামজারি সম্পন্ন করে এ–সংক্রান্ত কাগজপত্র খালেদা জিয়ার হাতে হস্তান্তর করে। এর পাশের বাড়ি ফিরোজায় থাকেন খালেদা জিয়া। গুলশানের ১৯৬ নম্বর বাড়িটি ব্রিটিশ-আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ-এর কাছে ভাড়া দেওয়া ছিল।
পত্রিকার খবরে আরো জানা গেছে, ব্রিটিশ-আমেরিকান টোব্যাকো এ বছরের শুরুর দিকে বাড়িটি ছেড়ে দিয়েছে। এখন নতুন করে বাড়ির ভেতরে-বাইরে রং করাসহ প্রয়োজনীয় সংস্কারকাজ চলছে।
উল্লেখ্য, এক-এগারোর জরুরি সরকারের সময় ২০০৭ সালের ৭ মার্চ তারেক রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্তি পেয়ে ১১ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার জন্য তিনি সপরিবার লন্ডনে যান। পরে সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন। প্রায় ১৭ বছর ধরে লন্ডনে আছেন। এর মধ্যে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেওয়া হলে তারেক রহমান দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার গণ–অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর তারেক রহমান প্রায় সব মামলা থেকে অব্যাহতি পান। তাঁর দেশে ফেরার ক্ষেত্রে সরকারের দিক থেকে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তারেক রহমান কবে দেশে ফিরবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকায় বিএনপির নেতারা বলে থাকেন ‘শিগগিরই’ দেশে ফিরবেন তিনি। গত ১০ জুন গুলশান কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘তারেক সাহেব নিশ্চয়ই দেশে ফিরবেন, অবশ্যই দেশে ফিরবেন।’ কবে ফিরবেন, সে প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘শিগগিরই ফিরবেন।’ তবে দিনক্ষণ কোনো কিছু বলেননি বিএনপির মহাসচিব।
সর্বশেষ ২৬ জুন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানিও বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন। তাঁর আগমনের প্রস্তুতি শুধু দলের মধ্যে নয়, জাতীয় পর্যায়েও নেওয়া হচ্ছে।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় একটি স্লোগান ছিল বিএনপির নেতা-কর্মীদের মুখেমুখে। এই স্লোগান দিয়েই নেতারা বক্তৃতা শেষ করতেন। সেটি হচ্ছে, ‘তারেক রহমান বীরের বেশে, আসবে ফিরে বাংলাদেশে’। এই স্লোগান উল্লেখ করে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত একজন চিন্তাশীল ব্যক্তি তারেক রহমানের দেশে ফেরার ক্ষেত্রে দুটি বিষয় দেখেন। তাঁর মতে, একটি ফেরা হতে পারে রাজসিকভাবে লালগালিচায়। সেটি হতে পারে নির্বাচনে জয়ী হয়ে অথবা সরকার গঠনের আগে-পরে। আরেকটি হতে পারে, নির্বাচনের জন্য সরকারের ওপর চাপ তৈরি করতে বিশেষ প্রয়োজনে।