দেশ স্বাধীনের পর ওয়াংরাইপাড়ায় প্রথম বাজলো স্কুলের ঘণ্টা

fec-image

পার্বত্য বান্দরবানে বাঙালিসহ ১১টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের বসবাস। যাদের আলাদা ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য এবং প্রত্যেকেরই ভাষাগত বিষয়ে নিজেদের স্বকীয়তা আছে। জেলা সদরসহ সাতটি উপজেলার দুর্গম অনেক এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের সন্তানরা এখনো পায়নি প্রাথমিক শিক্ষার অক্ষর পরিচিতি।

আর এই পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে উদ্যোগ নেয় সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

শুক্রবার (২ মে) জেলার থানচি উপজেলার রেমাক্রি ইউনিয়নের দুর্গম সীমান্তবর্তী ত্রীমতি কারবারী পাড়ায় স্বাধীনতার ৫৪ বছরে এই প্রথমবার বাজলো স্কুলের ঘণ্টা। বিজিবির আলীকদম ব্যাটালিয়নের (৫৭ বিজিবি) অধীন ওয়াংরাই পাড়া বিওপির সার্বিক পৃষ্ঠপোষকতায় এবং স্থানীয় বাসিন্দা ও পাড়া কারবারীদের আন্তরিকতায় স্থাপন করা হয়েছে ওয়াংরাইপাড়া বিজিবি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

ওই এলাকার পাঁচটি পাড়ার ৪২টি পরিবারের শিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতেই এই স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়।

পার্বত্য বান্দরবানের দুর্গম সীমান্তবর্তী এই এলাকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে বিজিবির ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগের কারণে স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে বইছে আনন্দের জোয়ার। সন্তানদের প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের এই সুযোগটা যেন তাদের অনাগত সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার ভীত।

শুক্রবার বিজিবির আলীকদম ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মেহেদী বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে জাতীয় সংগীত ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে বিদ্যালয়টির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

এ সময় প্রথম পর্যায়ে স্কুলের ২৫ জন শিক্ষার্থীর মাঝে প্রাথমিক শিক্ষার পাঠ্যবই, শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করেন তিনি। এ ছাড়া অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের মাঝে এককালীন আর্থিক অনুদান প্রদান করেন। এ ছাড়া স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে স্বাস্থ্য সম্মত মশারী বিতরণ করা হয়।

প্রসঙ্গত, অত্যন্ত দুর্গম ওয়াংরাইপাড়ায় পূর্বে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না থাকায় এলাকার পাঁচটি পাড়ার ৪২টি পরিবারের শিশুরা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিল। বিজিবির সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও আর্থিক সহায়তায় স্থানীয় কারবারী ও জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হলো এই স্কুল।

বিদ্যালয় স্থাপনের বিষয়ে আলীকদম ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মেহেদী বলেন, দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে বিজিবি কেবল সীমান্ত রক্ষার দায়িত্বই পালন করছে না বরং মানবিক ও সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে বিজিবি সবসময়ই বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন সুদৃঢ়করণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলেছে। এরই ধারাবাহিকতায় দুর্গম এই সীমান্তবর্তী এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করলো বিজিবি।
সুত্র: ঢাকা পোস্ট

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: পার্বত্য, বান্দরবান
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন