নাইক্ষ‍্যংছড়িতে ঝুঁকিপূর্ণ বেইলী সেতুতে ধারণ ক্ষমতার অধিক পরিবহন

fec-image

রামু-নাইক্ষ‍্যংছড়ি সড়কের ৫ টন ধারণ ক্ষমতা বিশিষ্ট বেইলী সেতু চরম ঝুঁকিতে। সড়ক ও পরিবহণ কর্তৃপক্ষ ৫ টনের অধিক মালামাল বহন নিষেধ নিদের্শনা দিলেও তা মানছে না কেউ। নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ঠিকাদার, ইট ভাটার মালিক ও ব্যবসায়ীরা ২৫ থেকে ৩৫ টনের অধিক মালামাল বহন করছে ঝুঁকিপূর্ণ এই সেতু দিয়ে।

সড়কের নিয়মিত যাত্রী মো আবদুল্লাহ, মাস্টার সৈয়দ নূর, সাধারণ যাত্রী বিমল কান্তি দাশ ও মংক্যউ চিং মার্মা বলেন, ‘রামু- নাইক্ষ্যংছড়ি-ভায়া-গর্জনিয়া বাজার সড়কটির দূরত্ব ১১ কিলোমিটার। সড়কের ৫টি বেইলী সেতু রয়েছে। সেতু গুলো হলো নাইক্ষ্যংছড়ি খালের সেতু, জামছড়ি খালের সেতু, জারুলিয়া ছড়ি সেতু, মহিষকূম সেতু ও বাঁকখালী রেঞ্জ অফিস সংলগ্ন গাছোয়াপাড়া ছড়ার সেতু। এ সেতুগুলো বর্তমানে চরম ঝুঁকিতে জোড়াতালি দিয়ে চলছে ১ যুগের অধিক।

তারা বলেন, যার যার মতো করে এই ঝুঁকিপূর্ণসেতু দিয়ে প্রতিনিয়ত ভারী যানবাহন চলাচল করছে। সড়কের পূর্বদিক দিয়ে যাচ্ছে গাছ, কাঁচা মালামাল ও খাদ্য সামগ্রী। আর পশ্চিম দিক দিয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা ও রামু উপজেলার পূর্বাংশের অধিকাংশ গ্রামীণ হাট বাজারের মালামাল আমদানিতে আর সীমান্ত সড়কসহ শতাধিক সংযোগ সড়কের উন্নয়ন কাজের জন্যে ব্যবহৃত মালামাল সামগ্রী পরিবহন করা হচ্ছে যা ৫ টনের অধিক।

তারা আরো বলেন, ‘একদিকে নিষেধাজ্ঞা অপর দিকে প্রয়োজনিয়তা। মাঝখানে সাবধনতাই এখন মূখ্য বিষয়। কতৃর্পক্ষ নির্দেশ দিয়েছেন ‌‘৫ টনের অধিক মালামাল বোঝাই ভারী যানবাহন বহন করা যাবে না’ নির্দেশনা দেয়া থাকলেও ঠিকাদার ও ব্যবসায়ীরা তা পড়তে রাজি নয়। কারণ তাদের কাছে প্রয়োজনটাই বেশি।

সূত্র জানা যায়, সড়কের পূর্বাংশে রয়েছে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা ১১-বিজিবি ক্যাম্প, নাইক্ষ্যংছড়ি, গর্জনিয়া বাজার ও চাকঢালাসহ ছোটবড় ৬টি গ্রামীণ হাটবাজার। আর ৫ শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শত শত গাছ, বাঁশ বাগান ও ৫০ হাজারের অধিক ফলজ বৃক্ষের বাগান।

এ ছাড়াও রয়েছে ১ হাজারের অধিক গ্রামীণ সাব-স্টেশনগুলোর দোকান-পাট। সব মিলে ২ লক্ষাধিক লোকজনের এ সড়কটির ৫টি সেতু বা সড়কে অন্য কোন সমস্যা দেখা দিলে সবাইকে চরম মূল্য দিতে হয়। এমতাবস্তায় ঠিকাদার, ইটভাটার মালিক, ও বড় ব্যবসায়ীরা এগিয়ে না এলে যে কোন মুহূর্তে এ ব্রিজ গুলো ভেঙ্গে যাবে। যেভাবে মালামালসহ নাইক্ষ্যংছড়ি খালের বেইলী সেতুটি ২ বার ভেঙ্গে পড়েছিলো। তাতে যে দুর্ভোগের তিক্ততা তা সকলের কাছে জানা।

সীমান্তরক্ষী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও অন্যান্য প্রশাসনিক কাজে থাকা কর্তাদের অনেকেই নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘সড়ক বিভাগ বলেই দিয়েছেন ৫ টনের অধিক মালামাল পরিবহন না করতে। তার পরেও অনেকে তা মানছেন না।’ যা সমীচিন নয় মন্তব্য করে তারা বলেন, ‘আইন সবার জন্যে। এ আইন ভঙ্গ করলে দেশ ও দশের ক্ষতি।’

এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান অধ‍্যাপক মো. শফিউল্লাহ বলেন, ‘পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি এ সড়কটির বিষয়ে বিশেষ একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। যা খুব সহসা শুরু হবে। সড়কের রামু রাবার বাগানের হাইওয়ে অংশ থেকে নাইক্ষ‍্যংছড়ি থানা মোড় পর্যন্ত সড়ক প্রশস্ত হবে উভয় পাশে। যা হবে উন্নত মডেলের। আর এতে ঝুঁকিপূর্ণ বেইলী সেতুর পরিবর্তনে আধুনিক সেতু নির্মাণ করা হবে। এ সময় তিনি মন্তব্য করেন, এ আধুনিক মানের সড়কটি নির্মাণ না হওয়া পযর্ন্ত সবাইকে সড়ক বিভাগের নির্দেশ মেনে চলতে হবে। নয়তো জনগণের কষ্ট বাড়বে।’

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme/ar_framework/functions_custom.php on line 255
আরও পড়ুন