পঞ্চম শ্রেণিতে জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার প্রাপ্ত ১৩ বছরের নুর নাহার এখন গৃহবধূ

fec-image

পার্বত্য বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের বাইশপারী ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছৈয়দ আলমের মেয়ে এবং বাইশপারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ২০১৭ সালে আন্ত: প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় ক্রিকেট বল নিক্ষেপ করে জাতীয় পর্যায়ে ৩য় স্থান অধিকারকারী মেধাবী ছাত্রী নুর নাহার বেগম(১৩) এখন গৃহবধূ।

এনিয়ে স্থানীয় অভিভাবক এবং সচেতন মহলের মাঝে বিরূপ মন্তব্য সৃষ্টি হয়েছে।

সরকার ঝড়ে পড়া রোধ করার লক্ষ্যে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্রীদের জন্য উপবৃত্তি এবং বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা চালু করেছে। বাল্য বিবাহ বন্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন করেছে। এছাড়াও গ্রামে-গঞ্জে এসব বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সেবা সংস্থা কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো: এরশাদুল হক।

তিনি বলেন, এর পরেও কোন অভিভাবক গোপনে এ ধরনের অন্যায় কাজ করে থাকলে অবশ্যই আইনের পরিপন্থী।

নুর নাহারের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি শুনেছি ওই ছাত্রীর নাকি পার্শ্ববর্তী এক ছেলের সাথে বিয়ে হয়ে গেছে। কিন্তু কিভাবে বিবাহ সম্পন্ন হয়েছে সে বিষয়ে আমি অবগত নয়।

নুর নাহার বেগম হত দরিদ্র পরিবারে মেয়ে হলেও পড়া-লেখা এবং খেলাধুলা অত্যান্ত ভাল ছিল। ২০১৮ সালে পিএসসি পাশ করার পর শত মন-মানসিকতা থাকলেও পরিবারের বাধারমূখে আর সামনে এগোতে পারেনি। সব স্বপ্ন মাটি হয়ে যায় নুর নাহারের। পাশ্ববর্তী রফিক আলম(১৪) নামের আরেক অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলের সাথে বিয়ে হয়ে যায়। এমনটি জানালেন তার কয়েকজন সহপাঠী।

প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা (পিএসসি) পাশ করার পর সে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে কি না জানতে চাইলে বাইশপারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল কবির বলেন, শুনেছি পঞ্চম শ্রেণি পাশ করার পর আর মাধ্যমিকে ভর্তি না করিয়ে নুর নাহার বেগমকে বিয়ে দিয়ে দেয় তার পরিবার। হয়তো অভাব-অনটনের কারনে বিয়ে দিয়ে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

জন্মসনদ অনুযায়ী বর্তমানে তার বয়স ১৩ বছর। স্বামী রফিক আলমের বয়স ১৪ বেশী নয়। বর্তমানে যদি এহেন পরিস্থিতি হয়, তাহলে এসব রোধ করবে কে? এই প্রশ্নের জবাবে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন কচি বলেন, এ ঘটনার বিষয়ে আমি অবগত নয়। তবে দ্রুত খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে তিনি জানিয়েছেন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: পার্বত্য, প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাংস্কৃুতিক
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন