পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে যা বললেন মির্জা ফখরুল
পাবর্ত্য চট্টগ্রামে ঘটে যাওয়া সংঘর্ষময় পরিস্থিতি কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, এর সঙ্গে অনেক কিছু জড়িত আছে। একদিকে শূন্যতার সুযোগ নেওয়া, অপরদিকে জিও পলিটিক্সে যে পরিবর্তন ঘটছে- মিয়ানমারকে কেন্দ্র করে আশপাশের অঞ্চলে, ওইদিকে ভারতবর্ষের মনিপুরের যে বিদ্রোহ… এসবকে যদি আপনি আনেন… জিও পলিটিক্সের এ ঘটনাগুলো ভেরি সিগনিফিকেন্ট বলে আমি মনে করি। তবে এখন কমেন্ট করাটা ঠিক হবে না।’
ফখরুল বলেন, ‘এটা নিঃসন্দেহে একটা সরকারকে ডিস্টার্ব করা, বাংলাদেশের পলিটিক্সকে ডি-স্টেবেলাইজড করা। একটা প্রতিবিপ্লব ঘটানো, যে সুফল আমরা অর্জন করেছি, সেই সুফলটাকে নষ্ট করা।’
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব।
পার্বত্য অঞ্চলের সমস্যা সমাধানে আলোচনায় বসা উচিত জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এখানে শুধু পাবর্ত্য চট্টগ্রামের সমস্যা তা নয়, সামাজিক সমস্যা আছে। এই সমস্যাগুলো দীর্ঘকাল ধরে আমরা সমাধান করিনি। আওয়ামী লীগ সরকার এত কথা বলেছে, চুক্তি করেছে, কিন্তু সমস্যার সমাধান করেনি। এটা তো একদিনে হবে না। ওদের সঙ্গে বসতে হবে, কথা বলতে হবে, বিষয়গুলোকে আলাপ-আলোচনা করে একটা জায়গায় নিয়ে আসতে হবে।’
‘সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দফতরে এখনও আওয়ামী লীগের দোসররা বসে আছে’, মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ছাত্র-জনতার হত্যাকারীদের সরকারের বিভিন্ন স্তরে বসিয়ে রেখে ভালো কিছু সম্ভব না। সরকার যাতে স্বস্তিতে কাজ করতে না পারে, তার জন্য একের পর এক ঘটনা ঘটিয়ে চলছে স্বৈরাচারের দোসররা।’
সংকট সমাধানে অন্তর্বর্তী সরকারকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নিয়মিত আলোচনার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সংস্কারের বিষয়গুলো দেশের মানুষের প্রত্যাশা থেকে পূরণ করতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা প্রয়োজন। সংস্কার চাপিয়ে দেওয়া নয়, এটার সবার কাছ থেকে মতামত আসা উচিত।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গত ৮ আগস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর সচিবালয়ে আনসার বাহিনীর ঘেরাও, বিভিন্ন সংগঠনের নানা দাবি-দাওয়া, ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘মব লিঞ্চিং’, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। সরকারকে অস্থিতিশীল করতেই এসব করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন দিতে দেরি হলে তা গণতন্ত্রের জন্য হুমকি। তাতে করে আওয়ামী লীগের লোকজন অপকর্ম করে বিএনপির ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করবে।’
বিরাজনীতিকরণ প্রক্রিয়ার চেষ্টা দেশের জন্য মঙ্গলজনক নয়। সংবিধান পরিবর্তন-পরিমার্জন করতে হলে জনগণের মতামতকে প্রাধান্য দিতে হবে, না হয় এ নিয়ে প্রশ্ন উঠবে বলে জানান মির্জা ফখরুল।