পুরুষশূন্য ঘরে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে উখিয়ায় নিহত বখতিয়ারের পরিবারের সদস্যরা

fec-image

টেকনাফ থানা পুলিশের কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত উখিয়ার বখতিয়ার মেম্বার পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। মিথ্যা মামলার আসামি হয়ে ৩ ছেলে ফেরারী অবস্থায় পালিয়ে বেড়াচ্ছে। বর্তমানে পুরুষশূন্য নিহত বখতিয়ারের অসুস্থ স্ত্রী শাহীনা আকতার স্বামী-সন্তান ও সর্বস্ব হারিয়ে বাকরুদ্ধ প্রায়।

১০ আগস্ট (সোমবার) উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের কুতুপালংস্থ নিজ বাড়িতে সাংবাদিকদের শাহীনা জানান, ঘটনার দিন (২৩ জুলাই) আসামি শনাক্ত করিয়ে দেয়ার কথা বলে উখিয়া থানার ওসি মর্জিনার ডাকে বাড়ি থেকে বের হয় তার স্বামী। দরজা খুলে দেওয়ার সাথে সাথে টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশের সঙ্গীয় ফোর্স তার স্বামীকে নিয়ে যায়।

পরের দিন পুনরায় টেকনাফের ওসি প্রদীপ ও উখিয়ার থানার ওসি মর্জিনা আবার বাড়িতে এসে বাজার ইজারা, ঘর ও দোকান ভাড়াসহ ব্যবসার বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা, জায়গা জমির কাগজপত্র লুট করে নিয়ে যায়।

ওই দিন ভোররাতে খবর আসে তার স্বামী টেকনাফস্থ উয়াব্রাং এলাকায় পুলিশের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় তার স্বামীর নামে মাদক সংশ্লিষ্ট কোন অভিযোগ বা মামলা ছিল না। তার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। একই সাথে স্বামীকে হত্যা করার পর বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াসহ ৩ ছেলের বিরুদ্ধে মাদক, অস্ত্র এবং পুলিশী কাজে বাঁধা দেয়ার নামে তিনটি মিথ্যা মামলা রুজু করে পুলিশ।

তার স্বামীকে হত্যার পরপরই কুতুপালংয়ের একটি প্রভাবশালী মহল তাদের দোকানপাট ও জমি দখলের পায়তারা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন শাহীনা।

নিহত বখতিয়ার মেম্বারের পুত্রবধু রুমানা শারমিন সাদিয়া বলেন, বর্তমানে আমরা আতঙ্ক ও হতাশাগ্রস্ত হয়ে দিন কাটাচ্ছি। গত ২৩ ও ২৪ জুলাইয়ের ঘটনা সম্পর্কে ইতোপূর্বে গণমাধ্যমে বলা হয়েছে। সে বিষয়ে পুনঃ আলোচনা করতে চাচ্ছি না। পুলিশ কর্তৃক নিয়ে যাওয়া আমার শ্বশুরের জায়গা-জমির দলিলপত্র ফেরত দেয়া হউক। একই সময় স্বামীসহ দুই দেবরের নামে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি করেন এবং লুটকৃত কাগজপত্র ও নগদ টাকা ন্যায় বিচারের আশায় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছি।

বখতিয়ার মেম্বারের শ্যালক মাহমুদুল করিম বলেন, বখতিয়ার মেম্বারের পরিবার বর্তমানে খুবই অসহায় এবং আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। তিনি জনপ্রতিনিধিত্বসহ দীর্ঘ ৩২ বছরের যাবত বৈধ ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে টাকা উপার্জণ করে আসছিলেন। এছাড়াও সকল সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য একজন অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে কাজ করেছেন। যার প্রমাণ তার জানাযার নামাজে দেখেছে মানুষ।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মর্জিনা আকতার মরজু বলেন, বখতিয়ারের পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে এ বিষয়ে আমার নিকট কেউ আইনী সহযোগিতা কামনা করেনি কিংবা জানায়নি। তবে শুধু বখতিয়ারের পরিবার নয়, উখিয়ার যে কোন ব্যক্তি বা পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। তিনি বখতিয়ারের বাড়ি থেকে লুট হওয়া জায়গা-জমির গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ফেরত পাওয়ার বিষয়ে টেকনাফ থানায় যোগাযোগ করার কথা বলেন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: উখিয়ায়, নিহত, পুরুষশূন্য
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন