প্রথম উত্তর কোরিয়া সফরে পুতিন, পেলেন রাজকীয় সংবর্ধনা

fec-image

গত ২৪ বছর ধরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের পদে থাকা ভ্লাদিমির পুতিন তার রাজনৈতিক জীবনে প্রথমবারের মতো উত্তর কোরিয়া সফরে গিয়েছেন। মঙ্গলবার রাতে রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ের প্রধান বিমানবন্দরে অবতরণ করে তাকে বহনকারী উড়োজাহাজটি।

উত্তর কোরিয়ায় দুই দিনের সফরে এসেছেন পুতিন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে অভ্যর্থনা জানাতে এ সময় বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। উড়োজাহাজ থেকে নেমে প্রথমেই কিম জং উনের সঙ্গে হাত মেলান পুতিন, জড়িয়ে ধরেন। এ সময় রুশ প্রেসিডেন্টকে লাল গালিচা সম্বর্ধনা দেওয়া হয়; উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনীর এলিট শাখা মাউন্টেড সোলজার্সের একটি দল দুই নেতা এসকর্ট করে বিমানবন্দরের টারমাকে অপেক্ষমান লিমোজিন গাড়ির দিকে নিয়ে যায়। তারপর পুতিন এবং কিম একই গাড়িতে চেপে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন কুমসুসান গেস্ট হাউসে আসেন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের বসবাসের জন্য এই গেস্টহাউসটি নির্দিষ্ট করা হয়েছে।

পুতিন এবং কিম যখন গাড়িতে চেপে গেস্ট হাউসে আসছিলেন, সে সময় সড়কের দু’ধারে সারি বেঁধে দাঁড়িয়ে ছিল উত্তর কোরিয়ার সাধারণ লোকজন ও শিশুরা। তাদের সবার হাতে ছিল বেলুন এবং রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়ার পতাকা। পিয়ংইয়ংয়ের সব গুরুত্বপূর্ণ সড়কের দুপাশে পুতিনের পোর্ট্রেট বসানো হয়েছে। উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ ভবন রিউগিয়ং হোটেলে ডিজিটাল আলোকসজ্জায় বিশাল অক্ষরে লেখা হয়েছে— স্বাগতম পুতিন। এই ভবনটির উচ্চতা ১০১ তলা।

পিয়ংইয়ংয়ের বিমানবন্দরে নেমে হাত মেলানোর সময় কিমের উদ্দেশে পুতিন বলেন, ‘রাশিয়ার নীতি এবং ইউক্রেন ইস্যুতে আপনার দৃঢ় ও অবিচলিত সমর্থনের জন্য আমরা আপনার কাছে কৃতজ্ঞ।’

প্রাথমিক আলাপে তিনি আরও বলেন, রাশিয়ার লড়াই যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের আধিপত্যবাদী, সাম্রাজ্যবাদী নীতির বিরুদ্ধে এবং এই লড়াইয়ে উত্তর কোরিয়াকে পাশে পেয়ে মস্কো গর্বিত।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা কেসিএনএ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গেস্ট হাউসে পৌঁছানোর পর কিছুক্ষণ আলাপ আলোচনা করেছেন দুই নেতা। পুতিনের এই সফরকে একটি নতুন বিশ্বব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রাথমিক পর্যায় বলেও উল্লেখ করেছে কেসিএনএ।

পিয়ংইয়ং সফরের আগে এক লিখিত বিবৃতিতে পুতিন বলেছিলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক চাপ, উস্কানি, ব্ল্যাকমেইল ও সামরিক হুমকির মধ্যেও উত্তর কোরিয়া যেভাবে তাদের জাতীয় স্বার্থের প্রতি অবিচল রয়েছে— তা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য।’

গত বছর মস্কো সফরে গিয়েছিলেন কিম জং উন। সেই সফরে পুতিন কিমকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে গোয়েন্দা নজরদারি স্যাটেলাইট তৈরি করতে পিয়ংইয়ংকে সহায়তা করবে মস্কো।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিন থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চলতি সফরে পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্ব’ চুক্তি স্বাক্ষর করার পরিকল্পনা রয়েছে মস্কোর। এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে সামরিক সহায়তার পাশাপাশি উত্তর কোরিয়ার পর্যটন, কৃষি, খনিসহ বিভিন্ন অর্থনৈতিক খাতে বিনিয়োগের দুয়ারও উন্মুক্ত হবে মস্কোর সামনে।

সূত্র : রয়টার্স

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: উত্তর কোরিয়া, ভ্লাদিমির পুতিন
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন