প্রায় ১৪ মাসেও শেষ হয়নি ব্রিজের নির্মাণ কাজ

fec-image

উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের থাইংখালী এলাকার প্রত্যন্ত গ্রাম গৌজুঘোনা ও ধামনখালীর একমাত্র সংযোগ সড়কের ছোট্ট এই ব্রিজের নির্মাণ কাজ গত ১৪ মাসেও শেষ করতে পারেনি অসৎ ঠিকাদাররা।

অনার্যোচিত ঠিকাদারদের এই করুণ প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডে প্রতি বর্ষার মৌসুমে যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে আসছেন উল্লেখিত গ্রামের প্রায় হাজার খানেক অবহেলিত পরিবার। বর্ষা নামলেই আতঙ্কে পড়ে ও দুর্ভোগ পোহায় অত্র গ্রামের সাধারণ মানুষ। প্রতি বর্ষাকালে একটু বৃষ্টি বর্ষণ হলে প্রায়ই ডুবে থাকে এই একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম।

এ নিয়ে সচতেনরা অভিযোগ করে বলেন,”দীর্ঘদিন ধরে বর্ষাকালে বৃষ্টিতে আমাদের যাতায়াতের ব্যাঘাত ঘটছে, অশান্তিতে ভোগছি। এই ব্রিজের নির্মাণ কাজ যথা সময়ে সম্পন্ন না করায় দিনের পর দিন ভোগান্তিতে রয়েছি। অটো-টমটম চলতে পারেনা। পায়ে হেঁটে চলাচলের সুব্যবস্থাও নেই। এখন কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের একটাই দাবি এই জনদুর্ভোগ থেকে আমাদের উদ্ধার করা।”

এ বিষয়ে এ রোডের টমটম চালক জসিম উদ্দিন বলেন,”এই একমাত্র রোড দিয়েই আমরা অটো-টমটম চালায়। স্বাভাবিকভাবে ব্রিজের কাজ সম্পন্ন না করায় আমরা নিজেরাই মাটি-বালি দিয়ে রোড চলাচলের উপযোগী করে তুলি। কিন্তু বর্ষাকালেও যখন এই ব্রিজের পাশে রাস্তার পাড় ভেঙে খালে পরিণত হয় তখনো আমাদের ঠিক করতে হয়। শুধু আমরা এই রোড দিয়ে টমটম চালায় বলে।”

গৌজুঘোনার স্থায়ী বাসিন্দা বোরহান উদ্দিন বলেন,”এই নির্মাণ কাজের শুরু থেকেই বিলম্ব দেখা দিয়েছে। একে তো ঠিকাদার রোহিঙ্গা শ্রমিকদের দিয়ে নির্মাণ কাজ করিয়েছে আবার তাও কয়েক মাসের ব্যবধান রেখে। কিন্তু এতকিছুর পরেও ব্রিজটি ব্যবহারের যোগ্য করে তোলা হয়নি। যতটুকু কাজ এই পর্যন্ত করা হয়েছে তা খুবই দূর্বলভাবে করেছে। দেখে তো মন হয় একবছরও টিকবেনা এই ব্রিজ। শুরুর দিকে মাস খানেক কাজ করেছে, পরে দীর্ঘ ৬/৭ মাস পরে বাকি একাংশ করেছে। এভাবে একে একে তিন দফায় কাজ করার পরেও সম্পূর্ণভাবে এটি ব্রিজ হয়ে ওঠেনি। বর্ষা এলেই অত্র এলাকার লোকজন কষ্ট ভোগ করে। এখন এটির সমাধান চাই এলাকাবাসী।

ধামনখালী এলাকার শিক্ষক জয়নাল আবেদীন বলেন,”বর্ষাকাল ছাড়াও অন্যান্য সময়ে কোনমতে চলাচলের জন্য উপযোগী করে যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল রাখা হয়। বর্ষা এলেই চরম যন্ত্রণার স্বীকার হতে হয় ধামনখালী তথা গৌজুঘোনাবাসীকে। উল্লেখযোগ্য এলাকা দুটি ছাড়া এই রোড দিয়ে অন্তত ৫ শতাধিক স্কুল শিক্ষার্থী যাতায়াত করে প্রতিদিন। বৃষ্টির পানিতে ভেসে যাওয়া রাস্তার মাটির উপর দিয়ে এদের চলাচল করা দূরুহ হয়ে পড়ে।”

এ বিষয়ে পালংখালী ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন,”ব্রিজটি আমি পরিদর্শন করেছি। ওখানে তিনটি ভাঙন হয়েছে। মূলত এই ব্রিজটির নির্মাণ কাজ নিয়েছিলেন বিশ্ব ব্যাংক কর্তৃক এডিবি এশিয়ান ফাউন্ডেশন। তাঁদের বিলম্বের কারণে ব্রিজটি দীর্ঘদিন ধরে অসম্পূর্ণ রয়েগেছে। এলাকাবাসীর কথা ভেবে দ্রুত ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন রাজস্ব খাতের ফান্ড থেকে অর্থ ব্যয় করে সাম্প্রতিক ভাঙন রোধে কাজ করা হবে। বৃষ্টি কমে আসলেই দু’একদিনের মধ্যে ওই কার্যক্রম দ্রুত শুরু হবে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: পালংখালী, ব্রিজের
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন