বাড়ছে প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনা: কক্সবাজার টেকনাফ সড়কে ভয়াবহ যানজট

fec-image

২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে মিয়ানমান সেনাবাহিনীর নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে এসে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের বনভূমিতে রোহিঙ্গারা আশ্রয় নেয়ার পর দেশি-বিদেশী এনজিওর কারণে বিপুল পরিমাণ গাড়ি বেড়ে যাওয়ায় সড়কে ৫ শতাধিক গর্তে অল্প বৃষ্টিতে পানি জমে যাওয়ার কারণে প্রতিনিয়ত যানজট ও দূর্ঘটনা ঘটছে।পাশাপাশি কক্সবাজারের লিংক রোড থেকে ৭৯ কিলোমিটার দক্ষিন দিকের সড়কে আংশিক সম্প্রসারনের নামে এলোপাথারী খোড়াখুড়ি, গাছ কেঁটে রাস্তার পাশে ফেলে রাখাসহ সময় কালক্ষেপনের ফলে সড়কে তীব্র যানজট লেগেই আছে। যানযটের কারণে প্রতিনিয়ত সড়ক দূঘটনায় প্রাণহানীর সংখ্যা দীর্ঘায়িত হচ্ছে।

সর্বশেষ গত শুক্রবার কক্সবাজার সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী হুমাইরা নুর সাকী হ্নীলা নিজ বাড়ি যাওয়ার পথে থাইংখালী এলাকায় কার্ভাড ভ্যানের চাপায় ঘটনাস্থলে নিহত হয়। এ ঘটনা নিয়ে অভিভাবক মহোদয়ের মাঝে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ, উৎকন্ঠা। বৃহত্তর যাত্রী সাধারণ রাতের বেলায় সড়ক সম্প্রসারনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।

কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানায়, ২০১৭ সালে মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা এখানে আশ্রয় নেওয়ার পর ভারী যানবাহন চলাচল বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সড়কের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে পড়ে। এমতবস্থায় উখিয়া ফায়ার স্টেশন সার্ভিস থেকে টেকনাফের উংচিপ্রাং পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার পর্যন্ত সড়ক ১২ ফুট থেকে ২৪ ফুটে উন্নীত করার জন্য গত বছরের আগস্ট মাসের কার্যাদেশ দেওয়া হয় ৪টি স্বনামধন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে। তন্মমধ্যে লিংক রোড থেকে উখিয়া ফায়ার সার্ভিস পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার সড়ক সম্প্রসারনের কাজ পেয়েছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জামিল ইকবাল ও তমা কন্সট্রাকশন।

পরের প্যাকেজ উখিয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশন থেকে টেকনাফের উংচিপ্রাং ২৫ কিলোমিটার পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে সালেহ আহমদ ও তাহের বাদ্রাসকে। উখিয়া উন্নয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও প্রেসক্লাব সভাপতি সরোয়ার আলম শাহীন, সুশাসনের জন্য নাগরিক উখিয়া শাখার সভাপতি নুর মোহাম্মদ সিকদার যৌথ বিবৃতিতে জানান, ঠিকাদারী সংস্থাগুলো প্রভাব খাটিয়ে সড়ক সম্প্রসারন কাজে গাফিলতি করার কারণে সড়কে তীব্র যানজটের পাশাপাশি সড়ক দূঘটনায় মারা পড়ছে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। তারা বলেন, রাতের বেলায় সড়ক সম্প্রসারনের কাজ করা হলে সামগ্রিক পরিবেশের দৃশ্যমান উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

তবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাতের বেলায় পর্যাপ্ত আলোর অভাবে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। সড়কে স্থায়ী উন্নয়ন সমাধানের জন্য সময় কাল ক্ষেপনের বিপরীতে সড়ক ও জনপদ বিভাগকে দায়ী করেছেন বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও যানবাহন সংশ্লিষ্ট নেতাকর্মীরা।

এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমার সাথে আলাপ করা হলে তিনি একটু ব্যস্ততার ভাব দিখিয়ে বলেন, আগামী বছরের জুন মাসে সড়ক সম্প্রসারনের কাজ শেষ করা কথা রয়েছে। যেহেতু লিংকরোড থেকে উৎচিপ্রাং ১২ ফুট সড়ককে ২৪ ফুটে উন্নীত করতে হলে টেকসই কাজের জন্য অনেক কিছুর প্রয়োজন রয়েছে যা এ মুহুর্তে বলা সম্ভব নয়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন