বিকল্প পথে সেন্ট মার্টিনে গেছে দুটি ট্রলার
টেকনাফ থেকে বিকল্প নৌপথে দুটি ট্রলার গতকাল শনিবার সেন্ট মার্টিন পৌঁছেছে। এসবি নাঈম ও এসবি মায়ের দোয়া নামের এ দুই ট্রলারে তিন শতাধিক গ্যাস সিলিন্ডার, কিছু খাদ্যপণ্য ও ১০ থেকে ১২ যাত্রীকে সেন্ট মার্টিনে পৌঁছে দেওয়া হয়। তবে এখনো টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌরুট স্বাভাবিক হয়নি।
গতকাল সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শাহপরীর দ্বীপ থেকে জরুরি পণ্য, কিছু যাত্রীসহ দুটি ট্রলার সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে রওনা দেয়। একই সঙ্গে সেন্ট মার্টিন থেকে রোগীসহ ১৫ যাত্রী নিয়ে দুটি স্পিডবোট শাহপরীর দ্বীপে আসে। এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন সেন্ট মার্টিন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান ও টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আবদুর রশিদ।
চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, বিকল্প নৌপথটিতে সাগর উত্তাল থাকে। এ জন্য এই পথে ঝুঁকি বেশি। তবে উত্তাল সাগর পাড়ি দিয়ে নৌযান চলাচল করায় কিছুটা হলেও স্বস্তিতে রয়েছেন দ্বীপের বাসিন্দারা। গতকাল সকালে শাহপরীর দ্বীপের বদরমোকাম এলাকা হয়ে দুটি ট্রলার সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে যাত্রা করে। ট্রলার দুটি দুপুর ১২টার দিকে দ্বীপে গিয়ে পৌঁছায়। এই ট্রলার দুটিতে তিন শতাধিক গ্যাস সিলিন্ডার, কিছু খাদ্যপণ্য ও ১০ থেকে ১২ যাত্রী ছিলেন।
সেন্ট মার্টিন ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম বলেন, বিকল্প পথে সীমিত পরিসরে নৌযান চলাচল করায় কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরেছে দ্বীপবাসীর মনে। কোস্টগার্ড, বিজিবি ও নৌবাহিনীর সার্বিক নজরধারী থাকায় এখন অনেকটা নিরাপদ বোধ করছেন দ্বীপের বাসিন্দারা।
এদিকে সাগরে ৬৫ দিনের জন্য মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা চলমান থাকায় সেন্ট মার্টিন দ্বীপের বাসিন্দারা খাদ্যের জন্য পুরোপুরি টেকনাফের ওপর নির্ভরশীল হয় পড়েছেন। টানা দুই মাসের বেশি সময় বেকার থাকতে হচ্ছে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের জেলেদের। এ মুহূর্তে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথটিও বন্ধ। এই পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে দ্বীপ এলাকায় মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার আহ্বান জানান সেন্ট মার্টিন ইউপির চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান।
৮ জুনের পর থেকে গতকাল পর্যন্ত ১৪ দিন টেকনাফের কায়ুকখালীয়া ঘাট থেকে সেন্ট মার্টিন জেটি ঘাটের উদ্দেশে কোনো যাত্রীবাহী নৌযান ছেড়ে যায়নি। সাগরের নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা থেকে ৮ জুন বাংলাদেশের একটি পণ্যবাহী ট্রলার লক্ষ্য করে মিয়ানমার সীমান্ত থেকে ৩০–৪০টি গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে।
এতে হতাহত না হলেও নৌযান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর ওই নৌপথে নৌযান চলাচল বন্ধ রাখতে বলে উপজেলা প্রশাসন।
জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আদনান চৌধুরী বলেন, ‘মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের কারণে আমরা এখনো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। সংকটের অবসান না হওয়া পর্যন্ত টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌরুটের বিকল্প নৌরুটে সব ধরনের নৌযান চলাচল করতে বলা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুনরায় সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে।’