বিষণ্নতা, স্মৃতিশক্তি হ্রাস ও পক্ষাঘাতের ঝুঁকি বাড়ায় করোনা

fec-image

করোনাভাইরাস কেবল শ্বাসতন্ত্রের ক্ষতিই করে না; পাশাপাশি বিষণ্নতা, স্মৃতিশক্তি হ্রাসের মতো মানসিক-স্নায়বিক রোগ এবং পক্ষাঘাতের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দেয়। যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষকের সাম্প্রতিক অনুসন্ধানে এই তথ্য উঠে এসেছে। ওই গবেষণা অনুযায়ী, চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠার পর ছয় মাস পর্যন্ত এ রোগের লক্ষণ দেখা যেতে পারে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, গবেষণা কাজে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রায়ে ৫ লাখ করোনা আক্রান্ত রোগীর শারীরিক অবস্থা ও চিকিৎসা বিষয়ক রেকর্ড পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। দেখা গেছে, করোনাভাইরাস পক্ষাঘাত, পার্কিন্সন্স, ডিম্যানশিয়া বা স্মৃতিশক্তি বিলোপ, উদ্বেগ, বিষণ্নতা ও আবেগের ওপর নিয়ন্ত্রণ কমিয়ে দেয়।

গবেষণায় দেখা গেছে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীরা ভোগেন বিষণ্নতা, উদ্বেগ, আবেগের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলার মতো বিভিন্ন মানসিক সমস্যায়। আর সুস্থ হওয়ার পর অন্তত ১৬ শতাংশ রোগী মানসিক ও স্নায়ুবিক সমস্যায় ভোগেন। ৪৪ শতাংশের ক্ষেত্রে এই সমস্যা দীর্ঘমেয়াদী হয়। গুরুতর অসুস্থদের বেলায় এটি বেশি দেখা যায়।

অক্সফোর্ডের গবেষকরা বলছেন, হাসপাতালের সাধারণ ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া রোগীদের ২৫ শতাংশ ক্ষেত্রে এই মানসিক সমস্যাগুলোর লক্ষণ দেখা যায়। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) থাকা করোনা রোগীদের বেলায় এই হার ২৮ শতাংশ। আর করোনায় যারা গুরুতর অসুস্থ হয়ে যেসব রোগী ঘন ঘন জ্ঞান হারিয়ে ফেলার অভিজ্ঞতার (ডিলিরিয়াম) মধ্যে দিয়ে যান, তাদের ৩৬ শতাংশ এই মানসিক রোগগুলোতে আক্রান্ত হন।

ব্রিটিশ গবেষক দলের অন্যতম প্রতিনিধি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নায়ুবিক রোগ বিশেষজ্ঞ মাসুদ হোসাইন বলেন, ‘করোনাভাইরাস দেহের শ্বাসতন্ত্রের অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলোর পাশাপাশি মস্তিষ্কেরও ক্ষতি করে। এ কারণেই এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীরা এই সমস্যাগুলোতে ভোগেন।’

গবেষণায় আরও দেখা গেছে, করোনা থেকে সেরে ওঠার পর দশমিক ৭ শতাংশ ক্ষেত্রে রোগীরা স্মৃতিশক্তি বিলোপ বা ডিমন্যাশিয়ায় ভোগেন। গুরুতর অসুস্থ বা ডিলিরিয়ামে ভোগা রোগীদের ক্ষেত্রে এই হার ৫ শতাংশ।

সূত্র: বিবিসি

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: করোনা, বিষণ্নতা, স্মৃতিশক্তি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন