ব্রয়লার মুরগি ও নিত্যপণ্যের সিন্ডিকেটকারীদের কঠোর শাস্তির দাবি ক্যাবের

fec-image

যেসব অসাধু ব্যবসায়ী ব্রয়লার মুরগির বাজারে সিন্ডিকেট তৈরি করে হাজার কোটি টাকা লুন্ঠন করেছে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। অন্যথায় সারাদেশে মানববন্ধন এবং প্রতিবাদ সভা করা হবে বলেও হুশিয়ারি দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার(৩০ মার্চ) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ব্রয়লার মরগিরসহ নিত্য পণ্যের কারসাজিতে দায়িদের শাস্তির দাবিতে এক মানববন্ধনে সরকারের প্রতি এ দাবি জানান ভোক্তার অধিকার নিয়ে কাজ করা এই সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেনক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির সহ সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া, সিপিবির কেন্দ্রিয় সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজের আহবায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ, জাতীয় তরুন সংঘের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো: ফজলুল হক ও ন্যাপের সংগঠনিক সম্পাদক মিতা রহমান প্রমুখ। এসময় ক্যাবের অন্যান্য সদস্য এবং সাধারণ ভোক্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ক্যাবের সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ব্রয়লার মুরগির বাজারে সিন্ডিকেট তৈরি করে অসাধু ব্যবসায়ীরা ভোক্তাদের পকেট কেটে হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। শুনেছি প্রতিযোগিতা কমিশনে সিন্ডিকেট তৈরিকারী করপোরেট কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তবে মামলার মেরিট কোন দিকে যাচ্ছে, ভবিষ্যৎ কি হবে তা নিয়ে আমরা সন্দিহান আছি। আমার চাই বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের এ বিষয়ে পরিষ্কার করা দরকার।

তিনি আরও বলেন, ব্রয়লার মুরগির সিন্ডিকেট যারা করেছে তাদের নাম সরকারের কাছে পৌছেছে। এখন সরকারের সদিচ্ছা যদি থাকে তবে এদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারবে।

নাজের হোসাইন বলেন, আমাদের দাবি একটাই, যারা ব্রয়লার মরগিরসহ নিত্য পণ্যের কারসাজিতে দায়ি তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনা হোক। প্রতিকী মামলা দিয়ে যেন পার পাইয়ে দেওয়া না হয়।

হুশিয়ার দিয়ে তিনি বলেন, এই মানববন্ধনের পর যদি সরকার ব্যবস্থা না নেয় তবে ক্যাবের পক্ষ থেকে সারাদেশে প্রতিবাদ সমাবেশ, মানববন্ধন করা হবে।

ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া বলেন, এই রমজান মাসে সংযম করার কথা, কিন্তু তারা তা না করে ভোক্তাদের পকেট কেটে হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। আমরা ক্যাবের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে দাবি জানাতে চাই, যারা পণ্যের দাম বাড়িয়ে ভোক্তার কষ্টের টাকা লুন্ঠন করেছে তাদেরকে চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

সিপিবি এর সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ব্রয়লার মুরগি বাংলাদেশের বাজারে অনেক চেহারা উন্মোচন করে দিয়েছে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এর আগে প্রমাণ করে দিয়েছে একটি ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন করতে কতো টাকা খরচ হয় এবং বাজারে কতো টাকা বিক্রি হয়। এই একটা ঘটনার মধ্যে দিয়ে কি পরিমাণ টাকা লুটপাট করেছে তা আমরা বুঝলাম। সরকারের সংস্থায়ই এটা প্রমাণ করেছে।

তিনি আরও বলেন, ব্রয়লার মুরগির আড়ালে চিনি সিন্ডিকেট আড়াল হয়ে গেলো, ব্রয়লার মুরগি আড়ালে বড় বড় ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট আড়াল হয়ে গেলো। তাদের অনেকই ব্রয়লার মুরগী নিয়ে আজ কথা বলছেন কিন্তু নিজের লুটপাটের কথা বলছেন না। আমি পরিষ্কার বলতে চাই- রমজান মাসে মানুষকে কষ্ট দিয়েন না। নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখতে ব্যবস্থা গ্রহন করুন।

বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, রমজানের এক মাস পূর্বেই জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তর, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন ট্যারিফ কমিশন খাদ্য মন্ত্রণালয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা মিলে বহু বৈঠক অনুষ্ঠিত করে। কিন্তু এ সকল বৈঠকে ব্যবসায়ীদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি তারা রক্ষা করেনি উল্টো কর অসুবিধা নিয়ে তাদের নিজেদের আখের গুছিয়েছেন।

একশ্রেণীর অতি মুনাফা খোর মজুদার ও কর্পোরেট সিন্ডিকেট কারীরা হাজার হাজার কোটি টাকা জনগণের পকেট থেকে লোপাট করল। প্রতিযোগিতা কমিশন তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেও এখন পর্যন্ত সেই মামলা আলোর মুখ দেখছে না। আজ পর্যন্ত বাজারে নৈরাজ্য সৃষ্টি করার দায়ে একজন ব্যবসায়ী বা কার সাথে কারীদের কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন