পানছড়িতে নজরকাড়া বিজু ফুলের কদর

fec-image

প্রকৃতির চিরাচরিত নিয়মে চৈত্র মাসেই দেখা মিলে বিজু ফুলের। এই ফুল পাহাড়ে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের কাছে ভিন্ন নামে পরিচিত। চাকমারা “ভাত জোড়া ফুল” ত্রিপুরারা “কুমুইবোবা” মারমারা “চাইগ্রাইটেং” সাঁওতালরা “পাতাবাহা” কারো কারো কাছে “ভিউফুল” নামেও পরিচিত।

পাহাড়ের সবচেয়ে বড় ঐতিহ্যবাহী উৎসবের নাম “বৈসাবি”। বৈ-সা-বি শব্দটি ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের “বৈসু” মারমাদের “সাংগ্রাই” ও চাকমা সম্প্রদায়ের  কাছে বিজু নামেই পরিচিত।

বৈ-সা-বি’ উৎসবে বিজু ফুলের প্রচুর কদর। উৎসবের প্রথম দিনটিই ফুল বিঝু।

এই দিন সাত সকালেই জঙ্গল ফুল তুলে মালা গেঁথে ঝুলানো হয় ঘরের মুল দরজায়। তাছাড়া বিজু ফুলের সাথে নানা প্রকার ফুল মিশিয়ে কলা পাতায় নিয়ে
চেংগী নদীর বালুর স্তুপ বা বাড়ি আশ-পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ছড়া আর নদীতে রেখে প্রার্থনায় বসে পাহাড়ী সম্প্রদায়ের লোকজন।

বৈসাবি’র আগমনী বার্তা লগ্নেই পাহাড়ের বিভিন্ন জঙ্গলে উঁকি দেয় বিজু ফুল। সবুজ পাতার বুক চিরে থোকায় থোকায় ফোটে থাকা বিজু ফুল
দেখতেও নজরকাড়া।

পানছড়ি কিনাচান পাড়া ও স্বপ্নসিড়ি ক্লাবের যৌথ আয়োজিত বিজু উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব শুভ্র জ্যোতি চাকমা জানান, বিজু ফুল কলি থাকা অবস্থায় হালকা লাল রংয়ের মনে হয়। কিন্তু বিজুর আগে যখন পরিপূর্ণভাবে ফোটে তখন ঝকঝকে সাদা দেখায়।

তবে পাহাড়ে বৃক্ষ শুণ্যতার কারণে বিজু ফুল প্রায় বিলুপ্তির পথে। বন উজাড়ের পাশাপাশি বিজু ফুলের মুলসহ উপড়ে ফেলার কারণে দিন দিন তা হারিয়ে যাচ্ছে।

আগামি প্রজন্ম বিজু ফুল চিনবে কিনা সেটাও সন্দেহ বলে জানালেন, উপজেলার চন্দ্র কার্বারী পাড়া এলাকার গোপা দেবী চাকমা আর অমর জ্যোতি
চাকমা।

ঐতিহ্য আর সংস্কৃতি ধরে রাখার জন্য বিজু ফুলের গাছকে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন