বড় মহেশখালীর পাহাড়ি এলাকায় দিন দুপুরে মাদকের হাট
মাদক বর্তমান সমাজের একটি বড় সমস্যা। যারা মাদকদ্রব্য গ্রহণ করে তারা তাৎক্ষণিক মৃত্যুমুখে পতিত হয় না বটে কিন্তু মাদক গ্রহণের কারণে তারা নানা ধরনের শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যার সম্মুখীন হয়।
মাদকের কারণে শুধু যে মাদকাসক্ত ব্যক্তিই ক্ষতিগ্রস্ত হয় তা নয়। মাদকাসক্ত ব্যক্তির বাবা-মা, ভাই-বোন, ছেলেমেয়ে, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব সবার জীবনে প্রভাব পড়ে এবং সবাই ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
মাদকাসক্ত ব্যক্তিরা মাদকের অর্থ জোগাড় করার জন্য চুরি, ডাকাতি, খুন, রাহাজানিসহ বিভিন্ন অসামাজিক বেআইনি কাজকর্মে লিপ্ত হয় যা ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও জাতির জন্য খুব ক্ষতিকর। মাদকাসক্তির ভয়াবহ পরিণাম থেকে যুব সমাজসহ দেশের সবাইকে রক্ষা করতে হলে মাদকদ্রব্যের বিরুদ্ধে সবাইকে সচেতন হতে হবে।
এমন পটভূমিতে মহেশখালী উপজেলার বড় মহেশখালীর পাহাড়ি এলাকায় হিসাবে পরিচিতি দেবেঙ্গা পাড়ার পাহাড়ে দিন দুপুরে পবিত্র রমজান মাসেও মাদকের হাট বসে। যা স্থানীয় যুব সমাজের জন্য চরম ক্ষতি সাধন হচ্ছে।
মহেশখালী থানার পুলিশ একাধিকবার অভিযান চালিয়ে কাউকে আটক করতে পারেনি যার কারনে ওই মাদকের আস্তনা পুড়িয়েও দেয়া হয়েছিলো ফলে সপ্তাহ খানেক বন্ধ থাকলেও বর্তমানে রোজার দিনেও মাদকের হাট বসে একই স্থানে।
এদিকে গত ৩ মাস ধরে মহেশখালী থানা পুলিশের ব্যাপক ধরপাকড়ের মধ্যে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ইয়াবা থেকে শুরু করে বাংলা মদের আড়ৎ সহ সব ব্যবসা বন্ধ করতে বাধ্য হয়। বলতে গেলে উপজেলার একমাত্র দেবেঙ্গা পাড়ার পাহাড়ি এই স্থান থেকে খুচরা বিক্রেতা ওখান থেকে বিভিন্ন জনের মাধ্যমে ক্রয় করে এনে আবারও গ্রামের পরিবেশ নষ্ট করার গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
দেভেঙ্গা পাড়ার ইয়াবার ভেন্টার মাহামুদুল হক, বেলাল আহমদের নিয়ন্ত্রনে উপজেলার সকল স্থরে আবারও মাদক সয়লাভ হচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানান।
জানা গেছে, তাদের রয়েছে একটি শক্তিশালী নের্টওয়াক, পুলিশ অভিযানে যাওয়ার আগে তাদের লোকের কাছে খবর চলে যায় ফলে তারা দ্রুত পাহাড়ি এলাকায় সটকে পড়ে।
ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ অতিরিক্ত সেবন করলে এবং এর প্রতি আসক্তি জন্মালে সেটাও মাদকের আওতায় পড়ে। অতএব যেসব দ্রব্য সেবন করলে মানুষের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে এবং সেগুলোর প্রতি সেবনকারীর প্রবল আসক্তি জন্মে সেগুলোই হলো মাদকদ্রব্য। যেমনÑ বিড়ি, সিগারেট, ইয়াবা, মদ, গাঁজা, ভাং, আফিম, হেরোইন, পেথিডিন, ফেনসিডিল ইত্যাদি। যারা মাদকদ্রব্য সেবন করে মাদকদ্রব্যের প্রতি তাদের শারীরিক ও মানসিক নির্ভরশীলতা সৃষ্টি হয়। তারা মাদকদ্রব্য সেবন করা থেকে বিরত থাকতে পারে না। যদি কোনো কারণে তারা মাদক গ্রহণ করতে না পারে, তাদের মধ্যে মারাত্মক শারীরিক ও মানসিক ভাবে বিকাশ গ্রস্থ সৃষ্টি হয়।
স্থানীয় সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা জানান, মাদকদ্রব্য যাতে সহজে পাওয়া না যায় তার জন্য যে আইন আছে তা যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে। প্রয়োজনে নতুন আইন তৈরি করতে হবে। মাদকের বিরুদ্ধে সবাইকে সচেতন করে তুলতে জনমত গঠন করতে হবে।
মহেশখালী থানার ওসি প্রভাব চন্দ্র ধর বলেন, মাদক শুধু ধ্বংস ডেকে আনা ছাড়াও মাদকাসক্তি প্রচলিত মূল্যবোধ, জীবনশৈলী ও অর্থনীতির প্রভূত ক্ষতি করে। তাই সমগ্র মহেশখালীবাসীকে মাদকবিরোধী আন্দোলনে সোচ্চার করার মাধ্যদিয়ে এ ক্ষতিকর মাদকের হাত থেকে ছাত্র সমাজকে বাঁচাতে হবে। নতুবা মাদকাসক্তির ফলে ধ্বংস হবে ছাত্র সমাজ, বিনষ্ট হবে আধুনিক সভ্যতা। আমরা মহেশখালীর প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও গ্রামে গ্রামে মাদকের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বাড়াতে আলোচনা সভা ও অভিযোগ বক্স স্থাপন করবো দ্রুত সময়ে। যে কোন ধরনের মাদক কে দূর করতে এলাকাবাসীর সহযোগিতা চাই এবং দেভেঙ্গাপাড়ার বিষয়টি আমরা দ্রুত গুরুত্ব সহকারে দেখছি।