ভারী বর্ষণে পেকুয়ার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, ২ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি


টানা তিনদিনের ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের কারণে কক্সবাজারের পেকুয়ার নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় ২ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি রয়েছেন।
সোমবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার টইটং ইউনিয়নের বটতলী ১নং ওয়ার্ডের মালাগাড়া, আলিগ্যাকাটা, কোনা পাড়া, বকসো মুরা, ওয়াছ খাতু পাড়া, নতুন পাড়া, হাবিব পাড়া, রিজার্ভ পাড়া, ২ নং ওয়ার্ডের পণ্ডিত পাড়া, শের আলি মাস্টার পাড়া, হাজির পাড়া, মিত্যান্ত ঘোনা, ৩ নং ওয়ার্ডের বাজার পাড়া, ৫ নং ওয়ার্ডের বড়পাড়া, পুরাদিয়া, বাজার পাড়া, ৭ নং ওয়ার্ডের হাজিবাড়ি, মাঝর পাড়া, ৮ নং ওয়ার্ডের হিরাবুনিয়া পাড়াসহ প্রায় ২২টি গ্রামের অন্তত দুই শতাধিক পরিবার পানি বন্দীতে আছে। চলাচলের রাস্তার এ পাশ থেকে অপর পাশে স্রোতে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। মানুষের ধান, মাছ, সবজি ক্ষেতসহ ফসলি জমি তলিয়ে গেছে।
এছাড়াও টইটং উচ্চ বিদ্যালয়, টইটং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, টইটং ইক্বরা স্কুল, টইটং আলহেরা মডেল একাডেমি, হাজিবাজার আহালিয়া ইলামিয়া বালিকা মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্লাবিত হওয়ায় ব্যাহত হয় শিক্ষা কার্যক্রম।
একই সাথে শিলখালী, পেকুয়া সদরের নীচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। মাতামুহুরি নদীর পানি অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে, রাতে আরও ভারী বৃষ্টিপাত হলে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ ভেঙে যেতে পারে বলে আশঙ্কা-করছেন স্থানীয়রা।
মেহেরনামার স্থানীয়রা জানান, পেকুয়ার পূর্বমেহেরনামা এলাকায় বেড়িবাঁধটি ভেঙে যায় তাহলে পেকুয়ার অন্তত ৫০ হাজার লোক পানি বন্দি হয়ে যাবে, তলিয়ে যাবে মানুষের ঘরবাড়ি। গতবছরও বেড়িবাঁধটি ভাঙার কারণে পেকুয়ার মানুষ পানিবন্দি হয়ে ঘরবাড়ি তলিয়ে কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছিল। তবে এবার স্থানীয় মানুষ ও জনপ্রতিনিধিরা এ ধরনের যেন বিপর্যয় না ঘটে প্রত্যেকে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
এদিকে বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন পেকুয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নুরুজ্জামান মঞ্জু।
স্থানীয় ইউপি সদস্য সাহেদ বলেন, আমার এলাকায় বেড়িবাঁধটি ভেঙে প্রায় সময় পেকুয়া তলিয়ে যায়। এবার আমি সবসময় তদারকি করছি, যেন কোন সমস্যা না হয়।
ভারী বর্ষণে পাহাড়ের পাশে বসবাসরত সবাইকে নিরাপদ আশ্রয়স্থানে চলে যাওয়ার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গতকাল শিলখালীতে পাহাড় ধসের ঘটনায় একই পরিবার তিনজনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবু তাহের বলেন স্থানীয় ইউপি সদস্য ও ইউপি সচিবকে নিয়ে পানিবন্দিদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন টানা তিনদিনের ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের কারণে বেশ কয়েকটি গ্রামের লোকজন পানিবন্দি রয়েছে। বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হবে।