মাটিরাঙায় অনুমতি ছাড়াই স্কুলের গাছ কাটার অভিযোগ সভাপতির বিরুদ্ধে

fec-image

করোনা ভাইরাসের সংক্রমনে পুরো দেশ যখন আতঙ্কে উৎকন্ঠিত ঠিক সে সময় নতুন ভবন নির্মাণের অজুহাতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কোন ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার রামশিরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দশটি গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে। স্কুল ম্য্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. বশির আহাম্মদ সংশ্লিষ্ট বিভাগের পুর্বানুমতি না নিয়েই বিক্রির উদ্দেশ্যে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রজাতির দশটি গাছ কেটে ফেলেন এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন আনুযায়ী স্কুলের গাছ কাটতে হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও বন বিভাগের অনুমতি নেয়ার বিধান থাকলেও কোন নিয়মই মানেননি স্থানীয় প্রভাবশালী মো. বশির আহাম্মদ। এতে স্কুল শিক্ষক ও এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। রোববার (৭ জুন) বিকালের দিকে সরেজমিনে ঘুরে বিদ্যালয়ের পুরনো ভবনের পাশে গাছগুলো পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পুর্বানুমতি ছাড়া গাছ কেটে ফেলার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে বেশ তাড়াহুড়ো করে গাছ কাটতে গিয়ে বিদ্যালয় ভবনের অংশে ফাটল ধরেছে। দুমড়ে-মুছড়ে গেছে টিনের চালা।

এদিকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে কোন ধরের আইন না মেনে বিদ্যালয়ের মুল্যবান গাছ কেটে ফেলার অভিযোগে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. বশির আহাম্মদের বিরুদ্ধে মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে অভিযোগ করেছেন এ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র ও শিক্ষানুরাগী নুরুল করিম আযাদ।

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মো. নুরুল আফছার গাছ কাটার কথা স্বীকার করে বলেন, নতুন ভবন নির্মানের জন্য স্থান নির্বাচনের বিষয়ে গত ৬ জুন শনিবার ম্যানেজিং কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় নতুন ভবন নির্মানের জন্য কয়েকটি গাছ কাটার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে। আমি ৭জুন রোববার উপজেলা শিক্ষা অফিসারের নিকট সভার রেজুলেশনসহ গাছ কাটার অনুমতি পাওয়ার আবেদন জমা দিই। আমি শিক্ষা অফিসে থাকতেই ফোনে জানতে পারি ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির উপস্থিতিতে স্কুলের গাছ কাটা হচ্ছে।

বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও বড়নাল ইউপি মেম্বার মো. বশির আহাম্মদ স্কুলের গাছ কাটার কথা স্বীকার করে বলেন, নতুন ভবন নির্মানের জায়গা করে দিতে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের অনুমতি নিয়েই গাছ কাটা হয়েছে। তবে এসব গাছ বিক্রি করা হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি।

মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মনিরুজ্জামান বলেন, গাছ কাটার জন্য ওই স্কুলের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে কোনো আবেদন করা হয়নি। বিদ্যালয়টির প্রদান শিক্ষক আমার কাছে এসেছিলেন করনীয় জানতে, আমি তাকে যথাযথ বিধি মোতাবেক কাজ করার পরামর্শ দিয়েছি।

এ ব্যাপারে মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বিভীষণ কান্তি দাশ বলেন, ‘বিদ্যালয়ের গাছ কাটার জন্য সরকারি নিয়মনীতি রয়েছে। কিন্তু বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে গাছ কাটার কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি। এমনকি তারা কোন আবেদনও করেননি। এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: অভিযোগ, গাছ কাটার, মাটিরাঙায়
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন