মানিকছড়িতে কিশোরী হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি

খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি উপজেলার গরমছড়ি গদিচন্দ্র পাড়ায় জীবন মালা ওরফে রুমি ত্রিপুরা (১৮) নামের কিশোরীকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় নিহতের বোন চাম্পাবালা ত্রিপুরা বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশ ঘাতক বদুক্তি ত্রিপুরা (৩০)কে আটক করে খাগড়াছড়ি আদালতে প্রেরণ করে। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন ঘাতক বদুক্তি ত্রিপুরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৩ নম্বর যোগ্যাছোলা ইউনিয়নের ৮নম্বর গরমছড়ি ওয়ার্ডের গদিচন্দ্র পাড়ার মৃত রশীরাম ত্রিপুরার ছেটো মেয়ে জীবনমালা ওরফে রুমি ত্রিপুরা (১৮) কে গত ১৭ জুলাই সকালে প্রকাশ্যে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করেন নিহতের ফুফাতো বোন বুদক্তি ত্রিপুরা(৩০)! হত্যার পর নিহতের মাথা ন্যাড়া ও মরদেহ বিবস্ত্র করে উঠোনের পাশে মাটিতে লাশ পুঁতে রাখে ঘাতক বদুক্তি ত্রিপুরা! এই নির্মম ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নিহতের বড় বোন চাম্পসবালা ত্রিপুরা (২৪) প্রাণভয়ে বোনকে বাঁচাতে আত্মচিৎকার করলেও আশে-পাশে লোকজন থাকলেও কেউই এগিয়ে আসেনি! ফলে দীর্ঘ সময় ধরে ঘাতক নারী বদুক্তি ত্রিপুরা মরদেহের মাথা ন্যাড়া করা, বিবস্ত্র করা ও গর্ত করে মাটিতে পুঁতে ফেলাসহ তান্ডবলীলা চালাতে ভূল করেননি।
ঘটনা জানাজানির পর মানিকছড়ি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহনূর আলমের নেতৃত্বে পুলিশ দল নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার কিশোরী জীবন মালা ওরফে রুমি ত্রিপুরাকে মাটিতে পুঁতে রাখা লাশ উদ্ধার । পরে ঘাতক বদুক্তি ত্রিপুরা (৩০), স্বামী পূর্ণ কুমার ত্রিপুরাকে আটক করেন।
পরবর্তীতে নিহতের বোন ও প্রত্যক্ষদর্শী চাম্পা বালা ত্রিপুরা বাদী হয়ে ঘাতক নারী বদুক্তি ত্রিপুরাকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-৭, তারিখ-১৭.৭.২২খ্রি. ধারা ৩০২,২০১।
সোমবার (১৮ জুলাই) সকালে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ জেলা হাসপাতালে এবং আসামিকে আদালতে প্রেরণ করা হয়।
থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহনূর আলম বলেন, একজন নারীর হাতে একজন কিশোরী নির্মম হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত বদুক্তি ত্রিপুরাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়। সোমবার বিকেলে খাগড়াছড়ি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারিক মো. নাজমুল হোসেন চৌধুরীর আদালতে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বদুক্তি ত্রিপরা। ফলে বিজ্ঞ আদালত আসামিকে জেল-হাজতে প্রেরণ করেন।
এদিকে ময়নাতদন্ত শেষ হলেও গতকাল বিকেলে লাশ বাড়ি এসে পৌঁছলে নিহতের আত্মীয়স্বজনেরা লাশের সৎকার কার্যক্রম শেষ করেন।