যে মসজিদে পানির নিচে নামাজ পড়ার সুযোগ থাকবে

fec-image

কোভিড মহামারির পর থেকে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য হিসেবে শীর্ষে উঠে এসেছে দুবাই। আমেরিকান অনলাইন ট্রাভেল কোম্পানি ‘ট্রিপঅ্যাডভাইজার’র প্রকাশিত তালিকায় ২০২২ সালের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য হিসেবে সবার ওপরে ওঠে আসে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) দুবাইয়ের নাম। ট্রিপঅ্যাডভাইজার বলছে, ‘দুবাই এমন একটি স্থান, যেখানে ইতিহাসের সঙ্গে আধুনিক সভ্যতা-সংস্কৃতির সংমিশ্রণ ঘটেছে। এছাড়া এখানে বিনোদন এবং বিশ্বমানের শপিংয়ের সুযোগ রয়েছে।’

সেই সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই কর্তৃপক্ষ এবার পানির নিচে বিশ্বের প্রথম মসজিদ নির্মাণ করতে যাচ্ছে । দেশটির ধর্মীয় পর্যটনকে আরো সমৃদ্ধ করতে ৫৫ মিলিয়ন দিরহাম ব্যয়ে উচ্চাভিলাষী এই মসজিদ নির্মাণের ঘোষণা দেয়।

বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুবাইয়ের ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড চ্যারিটেবল অ্যাক্টিভিটিস বিভাগ (আইএসিএডি) এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায়। তাতে উপস্থিত ছিলেন বিভাগটির মহাপরিচালক ড. হামাদ আল শেখ আহমেদ আল শায়বানিসহ শীর্ষ ব্যক্তিবর্গ।

গালফ নিউজ জানিয়েছে, ইতোমধ্যে মসজিদটির প্রাথমিক নকশা ও ছবি প্রকাশিত হয়েছে। শিগগিরই মসজিদের নির্মাণকাজ শুরু হবে এবং ২০২৪ সালের মধ্যে তা সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তিন তলাবিশিষ্ট মসজিদের প্রথম তলাটি পানির নিচে হবে। এখানে অজুর সুবিধা, ওয়াশরুম এবং নামাজের স্থান থাকবে।

এখানে এসে মুসল্লিরা পানির নিচে নামাজ পড়ার দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা লাভ করবেন। দ্বিতীয় তলায় একটি হল থাকবে। সেখানে বিভিন্ন ধর্মীয় সেমিনার ও ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি সেখানে কফি শপসহ পুরুষদের ইনডোর বসার স্থান থাকবে।

আর তৃতীয় তলায় ইসলামী প্রদর্শনীর ব্যবস্থা থাকবে এবং নারীদের ইনডোর ও আউটডোর বসার স্থান থাকবে।

৫০-৭৫ জনের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন মসজিদটি আধ্যাত্মিক প্রশান্তি ও সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধির আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করবে। তা ছাড়া এখানে শেখ মাকতুম বিন রশিদ আল মাকতুম কর্তৃক বিশ্বব্যাপী পবিত্র কোরআন বিতরণ কর্মসূচির অদ্যোপান্ত প্রদর্শনী থাকবে।

আইএসিএডির কালচারাল কমিউনিকেশন কনসালট্যান্ট আহমেদ খালফান আল-মনসুরি বলেন, ‘আমিরাতের বৈশ্বিক পর্যটনের সম্ভাবনা বিপুল। আমরা মানবতার ধারণাকে প্রচলিত অন্যান্য ধারণার চেয়ে উচ্চতর ও ব্যাপক ধারণা হিসেবে বিশ্বাস করি।

তাই নিরাপত্তা, আতিথেয়তা ও বৈচিত্র্যের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধ তৈরি এবং দর্শক ও বিনিয়োগকারীদের জন্য আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে আমিরাতের বিশেষ খ্যাতি রয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘দুবাইতে ধর্মীয় পর্যটন প্রকল্প’-এর লক্ষ্য হলো সব ধরনের পর্যটককে স্বাগত জানিয়ে দুবাইকে বিশ্বব্যাপী ধর্মীয় পর্যটনের প্রধানকেন্দ্র হিসেবে উন্নীত করা। যেন দুবাই শহর ২০২৫ সালের মধ্যে বিশ্বের সর্বাধিক পরিদর্শন করা শহরের তালিকায় স্থান করে নেয়।’

ধর্মীয় পর্যটন উদ্যোগের প্রধান ড. আবদুল্লাহ ইবরাহিম আবদুল জব্বার বলেন, এই প্রকল্পের আওতায় দুবাই ইফতার অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে ধর্মীয় প্রতিনিধিদের ঐতিহাসিক সমাবেশ ঘটবে। এখানে মসজিদ পরিদর্শন উদ্যোগ, হালা রমজান উদ্যোগ এবং শিক্ষা, খেলাধুলা, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রগ্রামগুলো অনুষ্ঠিত হবে।

তা ছাড়া এখানে কোরআনিক গার্ডেন থাকবে, যেখানে মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-এর ওষুধ, মসজিদকেন্দ্রিক উৎসবমুখর বাজার থাকবে। মুসলিম ও অমুসলিম সবার জন্য এটি উন্মুক্ত থাকবে। তবে মসজিদে আগত অমুসলিমদের ইসলামী শালীন পোশাক পরতে হবে। সূত্র : গালফ নিউজ

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: নামাজ, পানি, মসজিদ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন