রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর ‘উপকরণ’ সরবরাহ করেছে ইসরাইল 

fec-image

রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালাতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে ইসরাইলের ‘লজ্জাজনক সহায়তা’র কাহিনী প্রকাশ করেছে ইসরাইলী পত্রিকা হারেজ। পত্রিকাটি মিয়ানমার ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার আরো দুটি দেশে ইসরাইলী অস্ত্র বিক্রির পাশাপাশি ক্রমবর্ধমান সামরিক সম্পর্কের বিষয়টিও তুলে ধরে।

চার্লস ডানস্ট-এর সম্প্রতিক এক মতামত কলামে রাজ্যহীন রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে ইসরাইলের শীতল মনোভাবের সমালোচনা করা হয়। তাতে বলা হয় মিয়ানমারকে অস্ত্রশস্ত্র ও কূটনৈতিক সমর্থন দিয়ে নৃশংসতা চালাতে সহায়তা করেছে ইসরাইল।

গত বছর মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত রোনেন গিলরের সঙ্গে সাক্ষাতের প্রসঙ্গ টেনে ডানস্ট রোহিঙ্গা নির্মূল ও মিয়ানমার ইসরাইলী অস্ত্র বিক্রির কথা উল্লেখ করেন। তার কোন প্রশ্নে জবাব দিতে রাজি হননি গিলর।

সম্প্রতি মিয়ানমারের কার্যত নেত্রী অং সান সু চি’র দি হেগে গণহত্যা মামলার শুনানিতে অংশ নেয়াকে স্বাগত জানিয়ে টুইট করেন গিলর। পরে ওই টুইট মুছে ফেলা হয়। গত সপ্তাহে ওই শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গিলরের টুইটকে ইসরাইলী পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে নিন্দা করা হলে বলা হয় যে ‘ভুলক্রমে’ এটা লেখা হয়েছে।

২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনী সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ‘গণহত্যা’ শুরু করলে সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। জাতিসংঘের তদন্তকারীরা বলেন যে গণহত্যার উদ্দেশ্যে চালানো ওই অভিযানে ২৪ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে।

অন্টারিও ইন্টারন্যাশনাল ডেভলপমেন্ট এজেন্সি (ওআইডিএ)’র এক রিপোর্টে বলা হয়, মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও পুলিশ ১৮,০০০ রোহিঙ্গা নারী ও মেয়েকে ধর্ষণ করেছে এবং ১১৫,০০০ রোহিঙ্গার বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া আরো ১১৩,০০০ বাড়িঘর ভাঙ্গচুর করা হয়েছে।

বৌদ্ধ সংখ্যাগুরু মিয়ানমার অবশ্য গণহত্যা চালানোর এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

১৯৮২ সালের বার্মা নাগরিকত্ব আইনে মিয়ানমারে আটটি আদিবাসী জাতির অস্তিত্ব স্বীকার করা হয়েছে। এগুলো হলো বামার, চিন, কাচিন, কাইয়িন, কাইয়াহ, মন, রাখাইন ও শান। এরা আলাদা ১৩৫টি জাতিগত গ্রুপ সৃষ্টি করেছে। কিন্তু রোহিঙ্গাদের এই জাতিগত গ্রুপের মধ্যে রাখা হয়নি। তাই তারা দেশটির নাগরিক নন। তাদেরকে বাঙালি হিসেবে অভিহিত করে মিয়ানমার সরকার।

মিয়ানমার একসময় বার্মা নামে পরিচিত ছিলো। দেশটির প্রথম প্রধানমন্ত্রী উ নু’র ইসরাইলের প্রতি নমনীয় মনোভাব ছিলো বলে উল্লেখ করা হয়। তিনি ছিলেন ইসরাইলের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ডেভিড বেন-গুরিয়ানের ঘনিষ্ঠ। ১৯৫৫ সালে নবীন রাষ্ট্র ইসরাইলে প্রথম সফরকারী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন নু।

সূত্র: সাউথএশিয়ানমনিটরডটকম

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ইসরায়েল, মিয়ানমার, রাখাইন
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন