রোহিঙ্গা ক্যাম্প জুড়ে সক্রিয় স্থানীয় কিশোর গ্যাং

fec-image

কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প অবস্থিত আশেপাশের এলাকার স্থানীয় কিশোররা বিভিন্ন গ্রুপ গড়ে তুলেছে। তারা এক ধরনের জোরপূর্বক স্থানীয় শক্তি বা ক্ষমতা খাটিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে বেড়াচ্ছে। সৃষ্টি হচ্ছে ভীতিকর পরিবেশ।

দিনদিন বেড়েই চলছে কিশোর গ্যাংয়ের দুঃসাহসিক কার্যকলাপ। কোনো সাধারণ মানুষ তাদের দমিয়ে রাখতে পারছেনা। রোহিঙ্গা ক্যাম্প অভ্যন্তরে কিশোর গ্যাংয়ের প্রভাব প্রতিনিয়ত ভয়ানক রুপ নিচ্ছে। গতানুগতিক ভাবে ক্যাম্পে চলছে তাদের দৌরাত্ম্য।

জানা যায়, এসব গ্যাং রোহিঙ্গা ক্যাম্প নিকটবর্তী কুতুপালং, মধুরছড়া, বালুখালী, থাইংখালী, ঘোনারপাড়া, তাজনিমার খোলা, জামতলী ও চোরাখোলাসহ ক্যাম্পের কাছাকাছি বিভিন্ন গ্রামের ছেলেদের নিয়ে গঠিত হয়েছে।

এরা পেটের দায়ে অথবা মাদকের নেশায় গ্যাংয়ে যুক্ত হয়ে চুরি, ছিনতাই, মাদকদ্রব্য পাচার, ইয়াবা সেবন, জুয়া ও রোহিঙ্গা নারীর উপর শারীরিক-মানসিক নির্যাতন সহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে। মূলত এসব কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য হলো স্থানীয় দারিদ্র্য, গরীব, বেকার, অশিক্ষিত ও স্কুল-কলেজ থেকে ঝড়ে পড়া ছেলেরাই।

সূত্র আরো জানায়, তাদের প্রকৃত কাজ ও প্রধান উদ্দেশ্য হলো চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও মাদক পাচার। দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখে ধূলো দিয়ে আড়ালে তারা ক্যাম্প অভ্যন্তরে মাদক পাচার করে থাকে। ইদানীং মানবপাচারেও কিশোর গ্যাং সক্রিয় ভূমিকা রাখছে বলে গোপন সূত্র জানায়। এছাড়াও হুমকি-ধমকি দিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে টেন্ডারিং করছে বলে অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

এবিষয়ে স্থানীয় সচেতন মহল অভিমত ব্যক্ত করেন যে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এভাবে বিভিন্ন নামে গ্রুপিং করে সাধারণ রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের মাঝে আতংক সৃষ্টি করছে। ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে যা সবার জন্য অশোভনীয় ব্যাপার। কিশোর গ্যাং বিলুপ্তি চেয়ে প্রশাসনের নজরদারি বাড়াতে স্থানীয় সচেতন মহলের আহ্বান এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কৃপা দৃষ্টি কামনা করেন।

এবিষয়ে স্থানীয় পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরী অভিমত ব্যক্ত করে বলেন,”বর্তমানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কিশোর গ্যাংয়ের প্রভাব বিস্তার হচ্ছে যে এটা মিথ্যে নয়। রোহিঙ্গা আসার পর থেকেই ক্যাম্পে বিভিন্ন কুচক্রী মহল চেষ্টা করে যাচ্ছে নিজের স্বার্থ হাসিল করার জন্য। বিভিন্ন কায়দায় একদল লাভবান হওয়ার ষড়যন্ত্র অব্যহত রেখেছে। কিছু নামধারী ভাল মানুষের পরিচয় বহন করে ক্যাম্পে সন্ত্রাসী মূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। কিশোর গ্যাংয়ের মাধ্যমেই এটি পরিচালনা করে। এরা টেন্ডারিং সহ আরো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে বেড়ায়। আমি স্থানীয় প্রশাসনকে অনুরোধ করবো কে বা কারা এই কিশোর গ্যাংয়ের নেতৃত্ব দিচ্ছে এবং কে বা কারা এর মূল হোতা তাদেরকে ধরে যেন আইনের আওতায় আনা হয়।”

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন