লকডাউনে পানছড়ির ষাটোর্ধ্ব মায়েরাই এগিয়ে
প্রায় চার মাসের লকডাউনে থমকে পড়ে আছে অর্থনীতির চাকা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা আর সামাজিক নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে ঘরের পুরুষেরা এখন কর্মহীন।
প্রত্যন্ত এলাকার হাজারো কর্মহীন পরিবারে নেমে আসে নীরব দুর্ভিক্ষ। তাদের পাশে সহযোগিতার হাত বাড়ায় প্রশাসন। ঘরে ঘরে ত্রাণ পৌঁছে দিলেও কারো কারোর জন্য ছিল চাহিদার চেয়ে অপ্রতুল।
তাই সন্তানদের মুখে হাসি ফোটাতে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার পানছড়ি উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ষাটোর্ধ্ব মায়েরাই এগিয়ে এখন কর্মে।
সরকারি ত্রাণে তো আর চুলো জলবে না। তাই দূর পাহাড় থেকে মাইলের পর মাইল পায়ে হেঁটে পিঠে বহন করে নিয়ে আসছে লাকড়ি আর কেউবা মাথায় করে সরকারি ত্রাণ। পিঠে বহনকারী লাকড়ি আনার দৃশ্যটি পানছড়ি বড়কলক ব্রীজ এলাকায়। লজ্জায় নাম বলেননি। শুধু বললো লাকড়ি বিক্রিও করি চুলোতেও জালাই।
বাড়ির পুরুষদের কথা জানতে চাইলে করোনার ভয়ের কথা জানালো। তবে মুচকি হেসে জানালো মায়েরা কোন কিছুকে ভয় পায়না। মাথায় করে সরকারি ত্রাণ নিতে আসা ষাটোর্ধ্ব মায়ের দেখা মিলে লোগাং ইউপির বড় পানছড়ি উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে।
তিনি জানান, ঘরে লেগে আছে অভাব আর পুরুষেরা পায় লজ্জ্বা তাই নিজেই ছুটে এলাম সংসারের অভাব মেটাতে।
এই উপজেলার ষাটোর্ধ্ব মায়েরা শুধু লাকড়ি আর ত্রাণ নিতে নয় উপজেলার বিভিন্ন বাজারে বাজারে বিক্রি করছে সবজি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ফল-ফলাদি। কেউবা বিক্রি করছে দুর পাহাড় থেকে তোলা কচু শাক, ঢেঁকি শাকসহ নাম না জানা অনেক শাক।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মনিকা বড়ুয়া বলেন, আসলে করোনার মহামারীতে যে যার অবস্থান থেকে পারছে পরিবারের জন্য কিছু না কিছু করছে। এটা সম্পূর্ন আন্তরিক ও মনের ব্যাপার।
ষাটোর্ধ্ব মহিলাদের ধান কাটতেও দেখা যায়। বয়স যতই হোক না কেন ষাটোর্ধ্ব হয়েও যে মহিলারা পরিবারকে সহযোগিতা করতে পারে এসব তার একটা দৃষ্টান্ত। পরিবারের পক্ষ থেকে তাদের অনুপ্রাণিত করার কথা বলেন তিনি।